বীজ সংকটেও রংপুরে বেড়েছে সূর্যমুখীর চাষ
রংপুর অঞ্চলে সূর্যমুখী ফুল চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়লেও বীজ সংকটে ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন। এবছরও পর্যাপ্ত না থাকায় অর্জিত হয়নি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা। তবে গত বছরের তুলনায় এবার উৎপাদন বেড়েছে ৭২ হেক্টর জমিতে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র বলছে, রংপুর অঞ্চলে সূর্যমুখী ফুলের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। গত মৌসুমে বাণিজ্যিকভাবে তিন হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে। এবার তা বেড়ে ৭৫ হেক্টর ছাড়িয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় রংপুরের বিভিন্ন এলাকাতে সূর্যমুখী ফুল চাষ করছেন কৃষকরা। বিশেষ করে পতিত জমিতে এই ফুলের চাষাবাদ বেড়েছে। ভালো ফলন ও বেশি লাভের আশায় নিয়মিত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
রংপুরের গঙ্গচড়া উপজেলার গজঘণ্টা ইউনিয়নের রাজবল্লভ গ্রামের কৃষক আলমোতাসিম বিল্লাহ। এবারই প্রথম ৩০ শতক জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। তার চাষ করা জমিতে ফুটেছে হাজারো সূর্যমুখী ফুল।
বার্তা২৪.কম-কে এই কৃষক জানান, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সূর্যমুখীর বীজ বপন করেন। তার জমিতে প্রায় ১০ হাজার সূর্যমুখী গাছ রয়েছে। আকারভেদে একেকটি ফুল থেকে ২৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম পর্যন্ত বীজ পাওয়া যাবে।
পীরগাছার তাম্বুলপুর এলাকার কৃষক জাহাঙ্গীর আলম বার্তা২৪.কম-কে জানান, তার ৫০ শতক জমি থেকে উৎপাদিত বীজে তিনশ থেকে ৪৫০ লিটার তেল পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফসল ওঠা পর্যন্ত তার প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হবে। তবে ফলন ভালো হলে ওই ফসল ত্রিশ হাজার টাকার বেশি বিক্রয় করতে পারবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এদিকে, সূর্যমুখী ফুল চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করার জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের বিভিন্ন কার্যক্রমের পাশাপাশি প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। চাষিদের বীজ সরবরাহ করাসহ সার ও কীটনাশক দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর রংপুর অঞ্চলের উপ-পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘গত বছর কোনো লক্ষ্যমাত্রাই ছিল না। তারপরও রংপুরে তিন হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছিল। এবার ১৭৭ হেক্টর জমিতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু বীজ সংকটের কারণে ৭৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রংপুর কৃষি অঞ্চলের পাঁচ জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সূর্যমুখী ফুলের চাষ রংপুর জেলায় হয়েছে। এখানে ৩৩ হেক্টর জমিতে কৃষকরা সূর্যমুখী ফুল চাষ করেছে। এছাড়াও কুড়িগ্রামে ২২ হেক্টর এবং গাইবান্ধা ও নীলফামারীতে ১০ হেক্টর করে জমিতে সূর্যমুখী ফুলের আবাদ হয়েছে।’