প্রশাসন জানে না বিদেশ ফেরত প্রবাসীর সংখ্যা
উত্তরাঞ্চলে প্রতিদিনই বাড়ছে হোম সঙ্গরোধে থাকা মানুষের সংখ্যা। এদের বেশিরভাগ প্রবাসী। বিদেশ ফেরত এসব মানুষের অনেকেই মানচ্ছেন না সঙ্গরোধ। এতে দিন দিন করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভীতি বাড়ছে।
এদিকে, করোনাভাইরাস সংক্রামণ রোধে সব জেলায় জনসচেতনতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসনও। কিন্তু প্রতিদিন বিদেশ থেকে এই অঞ্চলে কতজন মানুষ আসছে, তার সঠিক হিসাব নেই তাদের কাছে।
রংপুর জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ষোল বছরে রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার ৭৩ হাজার ২৫১ জন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গিয়ে কাজ করছেন। আর চলতি বছরের ১৮ মার্চ পর্যন্ত বিদেশে গেছেন আরও ১ হাজার ২৩৭ জন।
বিদেশ যাওয়ার মানুষের সংখ্যা থাকলেও সংস্থাটির জানা নেই দেশে ফেরা প্রবাসীর সংখ্যা। এজন্য অবশ্য প্রবাসীদের সমন্বয়হীনতাকে দোষারোপ করছেন রংপুর জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক আমেনা পারভীন।
বার্তা২৪.কম-কে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রবাসীরা দেশে ফিরে বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে পাসপোর্ট ক্লিয়ারেন্স নেন। কিন্তু এয়ারপোর্টে প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক যে আছে, সেখানে যোগাযোগ করেন না। এমনকি নিজ এলাকায় পৌঁছে কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসকে অবগতও করেন না। এ কারণে বিদেশ ফেরত মানুষের সঠিক হিসাব দেওয়া কষ্টকর।’
এদিকে, দেশে প্রতিদিন করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে বাড়িতে সঙ্গরোধে থাকা মানুষের সংখ্যা বাড়াতে উদ্বিগ্ন সচেতন মহল। বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের অবাধ বিচরণ বন্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করার পরামর্শ তাদের।
এ ব্যাপারে রংপুরে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় গঠিত নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ ফখরুল আনাম বেঞ্জু বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘প্রবাস ফেরত মানুষের সংখ্যা জানা থাকলেও প্রশাসনের কাজ করতে সুবিধা হতো। সঙ্গরোধ অমান্যকারীদের সহজে চিহ্নিত করা যেত। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এখন কঠোর আইন প্রয়োগ করা জরুরি। নয়তো পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে।’
করোনা প্রতিরোধে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণের কথা জানিয়েছে রংপুর বিভাগীয় প্রশাসন। ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. জাকির হোসেন বার্তা২৪.কম-কে জানান, বিদেশ থেকে আসা মানুষের পুরোপুরি তথ্য না থাকলেও খণ্ড খণ্ড তালিকা তাদের কাছে রয়েছে। সেই তালিকা ধরে এরইমধ্যে রংপুর বিভাগের যারা বিদেশ থেকে এসেছে, তাদের শনাক্ত করে বাড়িতে সঙ্গরোধে থাকতে বাধ্য করা হয়েছে।
রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. আমিন আহমেদ খান বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ বিস্তারের পর রংপুর বিভাগের নীলফামারী ও গাইবান্ধায় বিদেশ থেকে বেশি প্রবাসী এসেছেন। সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী বিদেশ ফেরত কিংবা দেশের অন্য এলাকা থেকে আসা কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে বাধ্যতামূলক বাড়িতে সঙ্গরোধে রাখা হচ্ছে।’