স্বাধীনতা দিবসে নিষ্প্রাণ ঢাকা

  • নাজমুল হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

স্বাধীনতা দিবসে নিষ্প্রাণ ঢাকা

স্বাধীনতা দিবসে নিষ্প্রাণ ঢাকা

কার্যত অঘোষিত লকডাউন চলছে ঢাকায়। করোনাভাইরাসের আতঙ্ক নিয়ে স্বাধীনতার ৪৯তম বার্ষিকীর দিনে ঢাকার এমন চিত্র কষ্টের ও বেদনার হলেও জীবনের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় মনকে সান্ত্বনা দিচ্ছে দেশের লড়াকু জনগণ। সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর গতকাল সন্ধ্যা থেকে সকল ধরনের গণপরিবহন চলাচলে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যার ফলে বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) সকাল থেকেই জরুরি কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও জনগণ ছাড়া ঢাকা শহরের রাস্তাঘাটে অল্প কিছু রিকশা, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল ছাড়া তেমন কোনো যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি।

এদিন দুপুরে শহরের ধানমন্ডি, সাইন্সল্যাব, কাঁটাবন মোড় ও শাহবাগ এলাকা ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা যায়। এই এলাকার বিভিন্ন মোড়, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং ট্রাফিক সিগন্যালগুলোতে পুলিশের কড়া নজরদারি ও তৎপরতা রয়েছে। জরুরি কাজ ছাড়া ঘরের বাহিরে বের হচ্ছে না সাধারণ মানুষ। নগরীতে এসময় সকল ধরনের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে টহল দিতে দেখা গেছে। সাদা পোশাকেও নিয়োজিত রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অনেকেই মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারে জরুরি প্রয়োজনে বের হলেও একেবারেই আমজনতারা প্রয়োজনীয় গন্তব্যে যাচ্ছেন রিকশায় অথবা হেঁটে।

বিজ্ঞাপন
স্বাধীনতা দিবসে নিষ্প্রাণ ঢাকা

সাধারণ সময়ের তুলনায় রিকশা ভাড়া একটু বেশি রাখলেও এতে কোনো অনুযোগ বা অভিযোগ নেই যাত্রীদের। সেগুনবাগিচা থেকে রিকশাযোগে শাহবাগ মোড়ে বারডেম হাসপাতালে এসেছেন আব্দুল ওয়াহাব। ৬০ টাকা ভাড়া লাগলেও এনিয়ে কোনো অভিযোগ নেই এই রিকশা যাত্রীর। বার্তা২৪কম-কে তিনি বলেন, চিকিৎসার মতো জরুরি প্রয়োজন না হলে বাহিরে বের হতাম না। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে এ রিকশা পেয়েছি তাই দামদর না করে উঠে পড়েছি এখানে আসার পর রিকশাচালক যা চেয়েছেন তাই দিয়েছি। এতে আমি আপত্তি করিনি। কোনো ধরনের যানবাহন যখন চলছে না তখন নিজেদের পেটের তাগিদে ঝুঁকি নিয়ে আমাদের বহনের কাজ করছেন যারা, এসময় তাদের সাথে দরদাম না করাই শ্রেয় বলে মনে করেছি।

রিকশাচালক শামীম শেখ বলেন, যাত্রী পাওয়া যায় না মামা। কোনো যাত্রী পাইলে তাই ভাড়ার জন্য ট্রিপ দেওয়া আটকায় রাখি না। আমরাও বাঁচি তারাও বাঁচুক।

বিজ্ঞাপন

নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট, ট্রাফিক সিগনাল ও মোড়গুলোতে ‘রাস্তা সাময়িকভাবে বন্ধ’ লেখা সাইনবোর্ড বসিয়ে দেওয়া হয়েছে, আনসার পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশ রাস্তার যানবাহন চলাচলে নজর রাখছেন। কোথাও কোথাও ব্যারিকেড দিয়ে একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে রাস্তা।

স্বাধীনতা দিবসে নিষ্প্রাণ ঢাকা

চিকিৎসক, সংবাদমাধ্যম, অ্যাম্বুলেন্স এবং আমদানি-রফতানির কাজে নিয়োজিত কিছু গাড়ি চলতে দেখা গেলেও সংখ্যায় সেগুলো খুবই নগণ্য। শাহবাগ মোড়ে দেখা গেছে সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করে রাখতে।

চিকিৎসা, বাজার সদাই বা দূর-দূরান্ত থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া বেশ কিছু সাধারণ নাগরিকের সাথে কথা বলে জানা যায়।

স্বাধীনতা দিবসের মতো একটা দিনে ঢাকার এমন চিত্র দেখতে খুবই অস্বাভাবিক লাগছে। যে ঢাকা লাল সবুজে ঢেকে যাওয়ার কথা সেই ঢাকাকে নিষ্প্রাণ দেখতে মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। গত রাতে সিলেট থেকে রওনা দিয়ে নানা উপায়ে আজ দুপুরে ঢাকায় পৌঁছে শাহবাগ থেকে গাবতলী যাওয়ার সময় যানবাহনের অপেক্ষায় থাকা আদনান মির্জা এমটা বলছিলেন।