রাজধানীর জনজীবনে করোনার প্রভাব
করোনা আতঙ্কে পাল্টে গেছে রাজধানীর জনজীবনের চিত্র। রাজধানীর এই জনজীবনের চিত্র উঠে এসেছে সুমন শেখ-এর ক্যামেরায়।
করোনা আতঙ্কে পাল্টে গেছে রাজধানীর জনজীবনের চিত্র। রাজধানীর এই জনজীবনের চিত্র উঠে এসেছে সুমন শেখ-এর ক্যামেরায়।
কয়েক দিন ধরেই ভয়াবহ বায়ুদূষণে বিপর্যস্ত ভারতের দিল্লি। এ ছাড়া সম্প্রতি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বাতাসেও নেই স্বস্তির খবর। কয়েক দিন ধরেই বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর তালিকায় উপরের দিকেই রয়েছে মেগাসিটি ঢাকাও।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ৯টা ৪৪ মিনিটের দিকে আইকিউএয়ারের বাতাসের মানসূচকে ঢাকার স্কোর ৩২০। একে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বায়ু হিসেবে গণ্য করা হয়। আর বিশ্বের ১১৯ শহরের মধ্যে দূষণে ঢাকার অবস্থান তৃতীয়।
আজ সকাল ৯টা ৪৪ মিনিটের দিকে বায়ুদূষণে প্রথম অবস্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি, স্কোর ৪১২। আর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বসনিয়ার হার্জেগোভিনার সারাজেভো, স্কোর ৩৩৬। তৃতীয় অবস্থানে রাজধানী ঢাকা যার স্কোর ৩২০, চতুর্থ স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর শহর, যার স্কোর ২৪২। এছাড়া ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকতার স্কোর ১৪৭।
বায়ুদূষণের পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এ লাইভ বা তাৎক্ষণিক সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় ও সতর্ক করে থাকে।
ঢাকার বায়ু আজ ঝুঁকিপূর্ণ’। এ বায়ু যেকোনো মানুষের জন্যই ক্ষতিকর।
একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়, আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু বলে মনে করা হয়।
২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। এ ছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
ময়মনসিংহে ডিবি পুলিশের অভিযানের পর ফয়সাল খান (৩০) মৃত্যুর ঘটনার দু'জনকে গ্রেফতার করে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার মোস্তফা হাবিবের ছেলে ফরহাদ তানভীর ওরফে তুষার (২৫), অপরজন একই উপজেলার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে মো. কাউছার মিয়া (২৪)।
রোববার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় গ্রেফতারকৃত আসামিদের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হলে বিচারক রওশন জাহান তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্ধেশ দেন।
চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পরিদর্শক (ওসি) পিএসএম মোস্তাছিনুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, কোতোয়ালি থানা পুলিশ গ্রেফতারকৃত আসামিদের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠালে বিচারক রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করে কারাগারে পাঠানোের নির্দেশ দেন।
এর আগে গত শুক্রবার কক্সবাজারের লালদিঘী মোড় এলাকা থেকে দু'জনকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছে মামলা তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালী মডেল থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. আবদুল হক।
তিনি বলেন, মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারের পর মূল রহস্য বেরিয়ে আসবে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
নিহত ফয়সাল খান জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সরিষা কাশিপুর এলাকার মো. সেলিম খানের ছেলে। তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ শেষ করে নগরের কেওয়াটখালী পাওয়ার হাউস রোডে বড় বোনের বাসায় থেকে চাকরির জন্য চেষ্টা করছিলেন।
ফয়সালের স্বজনদের ভাষ্য, চার বছর ধরে ফয়সালের সঙ্গে একই এলাকার এক তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি তরুণীর সরকারি চাকরি হয়। এরপর অন্য আরেক জনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এতে ফয়সালের সাথে তরুণীর দূরত্ব তৈরি হয়। এদিকে, ওই তরুণী ও তার প্রেমিকের পরিবারের লোকজন তাদের বিয়ের দিনক্ষণ নির্ধারণ করেন। ফয়সাল বিয়েতে বাধা দিতে চাইলে তরুণীর বাবা ১ নভেম্বর পর্নোগ্রাফি আইনে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। এরপরে গত ১০ নভেম্বর ডিবি পুলিশের কাছে একই অভিযোগ করেন ওই মেয়ের স্বজনরা। পরে ওই দিন রাত সাড়ে নয়টার দিকে ফয়সালের বোনের বাসায় অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ। ডিবির অভিযানের সময় দুজন বহিরাগত সঙ্গে ছিলেন। ডিবি অভিযান চালিয়ে যাওয়ার পর বাসার সামনে ফয়সালকে অচেতন ও রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ১৫ নভেম্বর তার মৃত্যু হয়। একই দিনে গোপনে ওই তরুণীকে তার প্রেমিকের সাথে বিয়ে দেয়া হয়।
ফয়সালের আহত হওয়ার ঘটনায় ১২ নভেম্বর রাতে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করেন ফয়সালের বাবা সেলিম খান। এতে ওই তরুণীর বাবাসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা হত্যার উদ্দেশ্যে ছাদ থেকে ৬০ ফুট নিচে ফয়সালকে ফেলে দিয়েছে বলে মামলায় এজাহারে অভিযোগ করা হয়।
ডিবি পুলিশের অভিযানের পর রহস্যনজক মৃত্যুর ঘটনায় ১৭ নভেম্বর রাতে পুলিশ সুপার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। তবে, তদন্ত ৭ কার্য দিবস পেরিয়ে গেলেও প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি কমিটি। তদন্ত কাজ শেষ করতে আরও সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শামীম হোসেন।
সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ লায়েককে আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশি প্রহরা উপেক্ষা করে কিল-ঘুষি দিয়েছেন জনতা।
রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে সিলেটের আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটেছে।
এদিন তাকে সিলেট চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তুলে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়। তবে আবেদনের শুনানি পরবর্তীতে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.জিয়াউল হক।
এর আগে রোববার দুপুরে পুলিশি নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আদালতে নেওয়া হয় লায়েককে। এসময় পুলিশি প্রহরায় আদালত প্রাঙ্গণে তাকে কয়েকজন কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। এসময় অনেকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজও করেন।
এর আগে, শনিবার (২৩ নভেম্বর) ভোর রাতে রাজধানী ঢাকা থেকে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) ৩ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ লায়েককে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাকে সড়ক পথে ঢাকা থেকে সিলেটে আনা হয়। দীর্ঘ যাত্রায় অসুস্থতাবোধ করার কারণে সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করানোর পর কোতোয়ালি মডেল থানা হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়।
আবুল কালাম আজাদ লায়েকের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় ১৩টি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে রোববার আদালতে হাজির করা হয়।
এব্যাপারে সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.জিয়াউল হক বলেন, ১৩টি মামলার মধ্যে আজকে আসামি লায়েককে একটি মামলায় ১০দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। কিন্তু আজ রিমান্ড শুনানি হয়নি। পরবর্তীতে রিমান্ড শুনানি হবে। বর্তমানে তাকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয় সদস্য আলী হোসেন সৌরভকে (১৯) পিটিয়ে হত্যার সাথে জড়িত আসামিরা অধরা। পুলিশ বলছে আসামিদের পাওয়া যাচ্ছে না, আর সৌরভের বাবা বলেছেন আসামিদেরকে এলাকাতেই ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়।
গত ২ নভেম্বর রাতে চাঁদাবাজীর প্রতিবাদ করায় স্থানীয় সন্ত্রাসীরা সৌরভকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে হাসপাতালের সামনে ফেলে রেখে যায়। হাসপাতালে ভর্তির আগেই তার মৃত্যু হয়। সৌরভ টিএমএসএস টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংএর ছাত্র ছিল। তিনি বগুড়া সদরের ঠেঙ্গামারা গ্রামের ট্রাক চালক আব্দুল মমিন সাকিদারের ছেলে।
সৌরভের সহপাঠিরা জানান, জুলাই মাসে ছাত্র আন্দোলন শুরু হলে সৌরভের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। ৫ আগস্ট পট পরিবর্তন হলে এলাকায় নতুন কিছু চাঁদাবাজের আবির্ভাব হয়। তারা বিভিন্ন ছাত্রাবাসে চাঁদা আদায় শুরু করে। সৌরভ চাঁদাবাজীর প্রতিবাদ করতে শুরু করে। একারনে তার উপর ক্ষুদ্ধ হয় স্থানীয় চাঁদাবাজরা। গত ২ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে সৌরভকে ডেকে নিয়ে যায় ওই চাঁদাবাজেরা। আধাঘণ্টা পর তারাই মোবাইল ফোনে খবর দেয় সৌরভ গুরুতর অসুস্থ। ওই চাঁদাবাজেরাই মটরসাইকেল যোগে সৌরভকে টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
সৌরভের বাবা মমিন সাকিদার বলেন, হাসপাতালের সামনে ট্রেচারে আমার ছেলেকে মৃত অবস্থায় পাই। সৌরভের মাথাসহ শরিরের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ফোলা জখম ছিল । পরে পুলিশকে খবর দিলে মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পরদিন ছয় জনের নামে বগুড়া সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করি। এরপর বারবার থানায় ঘুরলেও পুলিশ বলছে আসামি পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ আসামিদেরকে রাতের বেলা এলাকায় মটর সাইকেলে ঘুরতে দেখা যায়।
সৌরভের সাথে ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়া রিফাত এবং মেহরাজ বলেন, সৌরভ ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ছাত্রাবাসে চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করে আসছিল। যার কারণে তাকে কৌশলে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তারা বলেন আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে আমরা এলাকায় মানববন্ধন করেছি, আসামিদের ছবি দিয়ে পোস্টারিং করেছি। কিন্তু পুলিশ আসামি গ্রেফতারে তৎপর হচ্ছে না।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মঈনুদ্দিন বলেন, আসামি গ্রেফতারে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তারা এলাকায় নেই। পুলিশ বিভিন্ন কৌশলে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। শীঘ্রই আসামি গ্রেফতার হবে।