‘সাংবাদিক হইছ তাতে কী হয়েছে’

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

নাছির (বামে),  রাতুল (ডানে)/ছবি: সংগৃহীত

নাছির (বামে), রাতুল (ডানে)/ছবি: সংগৃহীত

বরিশালে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সামনেই স্থানীয় দুই ফটোসাংবাদিককে পিটিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।

মারধরের শিকার দুই সাংবাদিক হলেন— বরিশালের স্থানীয় আঞ্চলিক পত্রিকা দৈনিক দেশজনপদ পত্রিকার ফটোসাংবাদিক মো. সাফিন আহমেদ রাতুল ও দৈনিক দখিনের মুখ পত্রিকার ফটোসাংবাদিক মো. নাছির উদ্দিন।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতুর ঢালে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক নাছির বার্তা২৪.কমকে বলেন, যাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা থাকলেও থাকছেন না এবং যারা অবাধে ঘোরাঘুরি করছেন, তাদের বিরুদ্ধে বরিশাল সদর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো. মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে শুনে আমরা ছবি তুলতে সেতুর ঢালে যাই। তখন সেখানে তাদের না পেয়ে মোটরসাইকেল রেখে একটু সামনে হেঁটে যাই। কিছুক্ষণ পর পেছন থেকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের পোশাক পরিহিত আট থেকে নয় জন পুলিশ এসে কোনো কথা জিজ্ঞেস না করেই আমাদের বেধড়ক পেটানো শুরু করে।

বিজ্ঞাপন

‘আমরা বহুবার সাংবাদিক পরিচয় দিলেও মারধর থেকে রেহাই পাইনি। তখন আমাদের গলায় প্রেসের কার্ড ও ক্যামেরা ঝোলানো ছিল এবং মুখে মাস্ক ও মাথায় হেলমেটও ছিল’, বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘কী কারণে মারছে’— এটি জিজ্ঞাসা করায় তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে পেটানো শুরু করে, আর বলেন, ‘সাংবাদিক হইছ তাতে কী হয়েছে’। আমাদের পেটানোর সময় উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো. মোশাররফ হোসেন সামনে দাঁড়িয়ে দেখেছে। কিন্তু পুলিশকে কিছুই বলেনি।

এ বিষয়ে কথা বলতে নিবার্হী কর্মকর্তা মো. মোশাররফ হোসেনের মোবাইল নম্বরে ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

ন্যাশনাল ডেইলিজ ব্যুরো চিফ অ্যাসোসিয়েশনের (এনডিবিএ) সাধারণ সম্পাদক আখতার ফারুক শাহিন বার্তা২৪.কমকে জানান, প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা আছেন যারা ভুলে যান যে জনগণের করের টাকায় তাদের বেতন হয়৷ এখনি যদি তাদের বিনয়ী হওয়া প্রশিক্ষণ দেওয়া না হয়, তাহলে জনগণ, সাংবাদিক বা কোনো এমপিকেও অপরিচিত ভেবে হেনস্তা করতে তাদের বাধবে না। দুই সাংবাদিককে মারধরের ঘটনাটি বরিশাল জেলা প্রশাসনের মিডিয়া সেলে জানানো হয়েছে।

রোববার সাংবাদিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান বার্তা২৪.কমকে বলেন, দুই ফটোসাংবাদিককে মারধরের ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। কেননা সাংবাদিকরাই করোনাসহ যেকোনো পরিস্থিতিতে প্রশাসনকে সহযোগিতা করে। তারা সবার মাঝে খবর পৌঁছে দেয়।

তিনি বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বরিশালের জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বার্তা২৪.কম কে বলেন, আমি বিষয়টা একটু জেনে নেই। সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও সম্মানের জন্য সব করা হবে। আমার অফিসারের অবহেলা থাকলে তার শাস্তি হবে। অন্য কেউ করলেও আমি তাদের সঙ্গে আলোচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।