করোনার প্রভাবে ৩.০২ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে
করোনাভাইরাসের নেতিবাচক প্রভাবে ৩ দশমিক শূন্য ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৩.০২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হবে মর্মে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) প্রাক্কলন করেছে। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে মনে হচ্ছে এই ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে।
রোববার (০৫ এপ্রিল) সকালে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ‘করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রভাব থেকে উত্তরণে সরকারে কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, করোনার প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিল্প উৎপাদন, রফতানি বাণিজ্য, পর্যটন, অ্যাভিয়েশন, সেবাখাত, সরবাহ ক্ষেত্রে চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। আইএমএফ ইতিমধ্যে অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হয়েছে বলে ঘোষণা করেছে। বিশ্বব্যাপী পুঁজিবাজারে ২৮.৩৪ শতাংশ দরপতন হয়েছে। বিশ্ব প্রবৃদ্ধি ১.৫ শতাংশ নেমে আসতে পারে। কর্মসংস্থান হারিয়ে মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বে।
করোনাভাইরাসের প্রভাবে গোটা বিশ্বের অর্থনীতিতে প্রভাব পড়েছে, বাংলাদেশেও তার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, আমাদের দেশে কতটুকু নেতিবাচক প্রভাব পড়বে তা নির্দিষ্ট করে বলার সময় এখনও আসেনি। এরপরও আমি কিছু ক্ষেত্রের অর্থনৈতিক প্রভাব তুলে ধরছি।
প্রধানমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে ইতিমধ্যে আমদানি ব্যয় ও রফতানি আয় গত অর্থ বছরের তুলনায় প্রায় ৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এ সংখ্যা আরো কমতে পারে। চলমান মেগা প্রকল্পের বাস্তবায়ন ও অর্থনৈতিক অঞ্চল নিমার্ণের ধীরগতি, ব্যাংক সুদের হার হ্রাসের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন বেসরকারি বিনিয়োগ প্রত্যাশিত মাত্রায় অর্জিত হবে না, হোটল অ্যাভিয়েশনে বিরূপ প্রভাব পড়বে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা হ্রাস পাওয়া দাম কমেছে, এর প্রভাব পড়বে বৈদেশিক আয়ে। শেয়ার বাজারের উপরও বিরূপ প্রভাব পড়েছে।
তিনি বলেন, স্বল্প আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে যাবে। রাজস্ব আদায় কম হবে। বিগত তিন বছর গড়ে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়েছে। গত বছর ৮ শতাংশের বেশি ছিল। প্রবৃদ্ধি অর্জনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখে শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও রাজস্ব আদায়। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উৎপাদান বন্ধ রয়েছে, ফলে কর্মসংস্থান কমে যাবে। জিপিডি অর্জন কমে যাবে।
দেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গতকাল রোববার (৪ এপ্রিল) বাংলাদেশে পর্যন্ত ৭০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। ৮ জন মারা গেছেন। তবে ৩০ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এখানে সুস্থ হওয়ার সংখ্যা বেশি দেখছি। যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের বয়স সবার ৭০ বছরের উপরে। যদিও একটি মৃত্যু আমাদের কাম্য নয়।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আমরা পৃথিবীর সকল দেশের সঙ্গে ফ্লাইট বন্ধ করেছি। গত ২ মার্চ থেকে ১৭ দিন ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সবাইকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ঘরে থাকতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনায় একটি মৃত্যুও আমাদের কাম্য নয়: প্রধানমন্ত্রী
করোনায় আমদানি ব্যয় ও রফতানি আয়ের পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে
৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
আর্থিক সহায়তার অপব্যবহার করবেন না: প্রধানমন্ত্রী