ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হিন্দুত্ববাদী একটি সংগঠনের হামলা ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননার ঘটনায় কুড়িগ্রামে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বিকালে জেলা শহরের কলেজ মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি কুড়িগ্রাম জেলা শাখা যৌথভাবে এই কর্মসূচি পালন করে।
বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননার প্রতিবাদ জানিয়ে মিছিলে প্রতিবাদী স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা। ‘গোলামি না আজাদি, আজাদি আজাদি; দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা ; দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ ; আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ; দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’ ইত্যাদি স্লোগানে ভারতকে সতর্ক করেন বিক্ষোভকারীরা। পরে জেলা শহরের শহীদ মিনার সংলগ্ন শাপলা চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির জেলা নেতৃবৃন্দ। বক্তারা ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে বলেন, ‘ বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও জাতীয় পতাকা অবমাননা করে ভারত সীমালঙ্ঘন করেছে। আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
বাংলাদেশের বর্তমান অস্থিতিশীলতার জন্য ভারতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দায় দিয়ে বক্তারা বলেন, ‘ ভারতে বসে শেখ হাসিনা “র” এর মাধ্যমে বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। আমরা ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এরপর যদি আর ন্যূনতম কোনও ষড়যন্ত্রের বীজ বপন করা হয় তাহলে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা কঠোরভাবে তার জবাব দেবে।’
জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য মুকুল মিয়া বলেন, ‘জুলাই পরবর্তী স্বাধীন বাংলাদেশে আর একবার যদি ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করা হয় তাহলে আমরা তার দাঁতভাঙা জবাব দেব। এদেশের মানুষ জীবন দিয়ে এই স্বাধীনতা পেয়েছে। প্রয়োজনে আবারও জীবন দিবে। তবুও আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে এ দেশে ফিরে আসতে দেবে না।’
উল্লেখ্য, গত সোমবার ‘হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি’ নামে ভারতীয় একটি ডানপন্থি সংগঠনের নেতৃত্বে একদল লোক আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে বিক্ষোভ ও হামলা করেন। এ সংগঠনটি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সঙ্গে সম্পর্কিত। এ সময় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা টেনে হিঁচড়ে ছিঁড়ে ফেলা হয়।
ঘটনার পর ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা তার দেশের বিক্ষোভকারীদের এমন আচরণের নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘ আমি এই ঘটনার নিন্দা করি। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করা যায়, কিন্তু এই ধরনের আচরণ মেনে নেওয়া যায় না।’