গৌরীপুরে ‘সেলফ লকডাউন’ ঘোষণা



উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
গৌরীপুরে সেলফ লকডাউন

গৌরীপুরে সেলফ লকডাউন

  • Font increase
  • Font Decrease

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ব্যক্তি নিরাপত্তা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলাকে সেলফ লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদ।

বুধবার (৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে গৌরীপুরের প্রবেশদ্বার রামগোাপালপুরে সড়কে প্রতিবন্ধকতা স্থাপন ও লাল নিশান উড়িয়ে দিয়ে সেলফ লকডাউন ঘোষণা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেজুতি ধর।

এর আগে ময়মনসিংহ -নেত্রকোনা মহাসড়কে গৌরীপুরের প্রবেশদ্বার শ্যামগঞ্জে সড়কে প্রতিবন্ধকতা স্থাপন ও লাল নিশান উড়িয়ে সেলফ লকডাউন করা হয়।

এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে উপজেলা গ্রামাঞ্চলের সড়ক ও পৌর মহল্লার সড়কে প্রতিবন্ধকতা দিয়ে সেলফ লকডাউন করছে স্থানীয় এলাকাবাসী। পাশাপাশি এখন মানুষকে ঘরে রাখতে ও যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোরভাবে বিধিনিষেধ কার্যকর করবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া অযথা কেউ ঘরের বাইরে বের হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

বুধবার রাতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেজুতি ধর বলেন, আমরা অনানুষ্ঠানিকভাবে গৌরীপুর উপজেলাকে সেলফ লকডাউনের আওতায় নিয়ে আসতে চাচ্ছি। সেলফ লকডাউন চলাকালীন জরুরি পণ্যবাহী গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, সরকারি কাজে ব্যবহৃত গাড়ি, নিত্যপণ্য, কৃষিপণ্যের গাড়ি ব্যতিত সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। উপজেলার কেউ বাইরে যাবে না। বাইরের কেউ হবেন উপজেলায় আসবে না।

রামগোপালপুরে সেলফ লকডাউন ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোফাজ্জল হোসেন খান, গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. বোরহান উদ্দিন, রামগোপালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল আল আমিন জনি, ডৌহাখলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শহীদুল হক সরকার, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. রইছ উদ্দিন প্রমুখ।

মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা ও নূরজাহান বেগম স্মরণ সভা মঙ্গলবার



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা ও নূরজাহান বেগম স্মরণ সভা মঙ্গলবার

মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা ও নূরজাহান বেগম স্মরণ সভা মঙ্গলবার

  • Font increase
  • Font Decrease

আগামী ২৮ মার্চ মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় কিশোরগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে ৬ষ্ঠ ও ৭ম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননার যৌথ আয়োজিত হবে। এতে ৬ষ্ঠ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা-২০২০ প্রদান করা হবে কিশোরগঞ্জের আইন পেশার কৃতিজন নাসিরউদ্দিন ফারুকী, ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন ও শাহ আজিজুল হককে এবং ৭ম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা-২০২১ প্রদান করা হবে ইতিহাসবিদ, সাংবাদিক, পাঠ ও পাঠাগার আন্দোলনের অগ্রণীজন মু.আ. লতিফ, মুক্তিযোদ্ধা-শিক্ষাবিদ ঊষা দেবী এবং শতবর্ষ অতিক্রমকারী ১২০ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান আলীমুদ্দীন লাইব্রেরীকে।

সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক লাইজু আক্তার। সম্মাননা বক্তৃতা করবেন মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মাহফুজ পারভেজ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন চেয়ারম্যান, জেলা পরিষদ, কিশোরগঞ্জ এবং সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত), জেলা আওয়ামী লীগ, কিশোরগঞ্জ, বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান।

শেষে মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, রত্নগর্ভা নূরজাহান বেগম স্মরণ, দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

উল্লেখ্য, ভাষা সংগ্রামী ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ডা. এএ মাজহারুল হক এবং সমাজসেবী নূরজাহান বেগম প্রতিষ্ঠিত কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, শিক্ষা, সমাজসেবা ও বুদ্ধিবৃত্তিক সংস্থা 'মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন' কর্তৃক কিশোরগঞ্জের জীবিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জীবনব্যাপী বিশিষ্ট অবদানের স্বীকৃতি জানাতে ও ঐতিহাসিক মূল্যায়ন করতে ২০১৫ সাল থেকে এ সম্মাননা বক্তৃতা আয়োজন করা হচ্ছে, যা বক্তৃতা ও লিখিত আকারে প্রদান করেন মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. মাহফুজ পারভেজ।

মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন' গতানুগতিক সম্মাননার বদলে ব্যক্তির কর্ম ও কীর্তির বিশ্লেষণমূলক-মূল্যায়নভিত্তিক সম্মাননা বক্তৃতার মাধ্যমে তাঁর প্রকৃত স্বরূপ চিহ্নিত করে এবং এরই ভিত্তিতে জ্ঞাপন করা হয় যথাযথ সম্মান। সম্মাননা স্মারকের পাশাপাশি লিখিত আকারে বক্তৃতা-পুস্তিকায় চিত্রিত হন সম্মাননা প্রাপ্তগণ। মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন এই বুদ্ধিবৃত্তিক-একাডেমিক আবহে ধারাবাহিকভাবে সম্মাননা বক্তৃতার আয়োজন করে আসছে, যা কিশোরগঞ্জে তো বটেই, বাংলাদেশের মধ্যে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী। শুরু থেকে সম্মাননা বক্তৃতা প্রদান করেন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র প্রফেসর, বিশিষ্ট লেখক ও বুদ্ধিজীবী ড. মাহফুজ পারভেজ, যিনি কিশোরগঞ্জে পাবলিক লেকচার সিরিজের মাধ্যমে গণবুদ্ধিবৃত্তিক পরিসর তৈরির পথিকৃৎ।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে প্রথম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান শিক্ষাবিদ প্রাণেশ কুমার চৌধুরী, ২০১৬ সালে দ্বিতীয় মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান দীপ্তিমান শিক্ষকদম্পতি: অধ্যক্ষ মুহ. নূরুল ইসলাম ও বেগম খালেদা ইসলাম, ২০১৭ সালে তৃতীয় মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান ‘প্রজ্ঞার দ্যুতি ও আভিজাত্যের প্রতীক: প্রফেসর রফিকুর রহমান চৌধুরী’ এবং ২০১৮ সালে চতুর্থ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান ‘ঋদ্ধ মননের প্রাগ্রসর ভূমিপুত্র: শাহ্ মাহতাব আলী’। ২০১৯ সালে পঞ্চম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা দেয়া হয় 'স্বাস্থ্যসেবা-শিক্ষায় পথিকৃৎ চিকিৎসক-দম্পতি' প্রফেসর ডা. আ ন ম নৌশাদ খান ও প্রফেসর ডা. সুফিয়া খাতুনকে। ৬ষ্ঠ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা-২০২০ প্রদান করা হয় নাসিরউদ্দিন ফারুকী, ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন ও শাহ আজিজুল হককে। এ উপলক্ষে ‘কিশোরগঞ্জে আইন পেশার নান্দনিক বিন্যাস’ শীর্ষক সম্মাননা বক্তৃতা বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদান করা সম্ভব হয়নি।

৭ম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা-২০২১ প্রদান করা হয়েছে ইতিহাসবিদ, সাংবাদিক, পাঠ ও পাঠাগার আন্দোলনের অগ্রণীজন মু.আ. লতিফ, মুক্তিযোদ্ধা-শিক্ষাবিদ ঊষা দেবী এবং শতবর্ষ অতিক্রমকারী ১২০ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান আলীমুদ্দীন লাইব্রেরীকে, যারা কিশোরগঞ্জের সামাজিক ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক বিন্যাসে স্বকীয় কৃতিত্বের প্রভায় উজ্জ্বল। জীবনব্যাপী কিশোরগঞ্জের মাটি ও মানুষের জন্য শৈল্পিক দ্যোতনায় নান্দনিক বর্ণালী সৃজন করেছেন এই তিন গুণান্বিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান।

ভাষাসংগ্রামী, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ডা. এ এ মাজহারুল হক এবং রত্নগর্ভা নূরজাহান বেগম প্রতিষ্ঠিত কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, শিক্ষা, সমাজসেবা ও বুদ্ধিবৃত্তিক সংস্থা 'মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন' কিশোরগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের অবদানের স্বীকৃতি জানাতে ২০১৫ সাল থেকে সম্মাননা বক্তৃতা আয়োজন করছে।

;

শেখ হা‌সিনা‌কে স্বাধীনতা দিব‌সের শুভেচ্ছা পাক প্রধানমন্ত্রীর



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জা‌নি‌য়ে‌ছেন পা‌কিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ।

শ‌নিবার (২৫ মার্চ) ঢাকার পা‌কিস্তান হাইক‌মিশন এক বিজ্ঞ‌প্তি‌তে এ তথ্য জা‌নি‌য়ে‌ছে।

পা‌কিস্তানের প্রধানমন্ত্রী অভিনন্দন বার্তায় বলেন, পাকিস্তান বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয় এবং দুই দেশের জনগণের পারস্পরিক সুবিধার জন্য দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদারের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে।

শেহবাজ শরীফ বঙ্গবন্ধুকন্যার দীর্ঘায়ু, সুস্বাস্থ্য ও সুখ এবং ভ্রাতৃপ্রতিম বাংলাদেশি জনগণের অব্যাহত অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অতর্কিতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আক্রমণ চালায়। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা অর্জন করি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।

;

২৫ মার্চ গণহত্যার স্বীকৃতি চাইলেন সজীব ওয়াজেদ জয়



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দ্বারা পরিচালিত ‘অপারেশন সার্চলাইট’কে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

শনিবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে এক স্ট্যাটাস দেন তিনি।

পোস্টে সজীব ওয়াজেদ জয় লেখেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সামরিক শাসনের কবল থেকে মুক্তি চেয়েছিল বাঙালি জাতি, তাদের স্বপ্ন ছিল নিজেদের মতো সুন্দর জীবন যাপন করা। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকরা ঝাঁপিয়ে পড়ে ঘুমন্ত বাঙালির ওপর ২৫ মার্চের কালরাতে।

তিনি লেখেন, ইয়াহিয়া খান আর বিশ্বস্ত কসাই টিক্কা খানকে দায়িত্ব দেন বাঙালি জাতিকে নিধন করার। তারা এর নাম দেয় ‘অপারেশন সার্চলাইট’। এই এক রাতেই তারা শুধু ঢাকা শহরে ৭ হাজারের ওপর মানুষকে মেরে ফেলে। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে বাংলাদেশের ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়, আর পাকিস্তানি ঘাতকদের কাছে সম্ভ্রম হারান ২ লাখেরও বেশি মা-বোন। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লাখ মানুষ তখন হারিয়ে যায় মুক্তিযুদ্ধের ওই ৯ মাসেই। ভারতে শরণার্থী হয় প্রায় ১ কোটি মানুষ। অথচ আজ পর্যন্ত এই গণহত্যাকে স্বীকৃতি দিতে নারাজ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, কারণ তখন সোভিয়েত ইউনিয়ন বাদে সব পরাশক্তিই ছিল পাকিস্তানি হত্যাকারীদের পক্ষে।

সজীব ওয়াজেদ জয় আরও লেখেন, তাই আজ আমরা দাবি জানাই, পাকিস্তানি ঘাতকদের হত্যাকাণ্ডকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হোক। স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য আত্মত্যাগকারী সব মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনা মায়ের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

 

;

দুই বছর প্রেমের পর ৭১ বছরে বিয়ের পিঁড়িতে কলেজশিক্ষক



উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মোংলা (বাগেরহাট)
১ বছর বয়সে বিয়ে পিঁড়িতে কলেজশিক্ষক

১ বছর বয়সে বিয়ে পিঁড়িতে কলেজশিক্ষক

  • Font increase
  • Font Decrease

৭১ বছর বয়সে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার জিগিরমোল্লা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর মো. শওকত আলী। তার দীর্ঘ দুই বছর ধরে চলে আসা প্রেম অবশেষে প্রণয়ে পরিণত হয়েছে। গত ১৮মার্চ তার প্রেম গড়িয়েছে বিয়ের পিড়িতে। খুবই জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে হয় তাদের বিয়ে। কিন্তু বর যাননি কনের বাড়ি বরং কনেযাত্রী এসেছেন বরের বাড়িতে। রীতি রেওয়াজ অনুযায়ী যেখানে বরযাত্রী যান কনের বাড়িতে, সেখানে বরের বাড়িতে কনেযাত্রী আসাটা রীতিমতো ব্যতিক্রম ঘটনা বলে এনিয়ে এলাকা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। যদিও তাদের এই বিয়ের বিষয়টি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে।

জানা যায়, শওকত আলীকে চাকরিকালে বিয়ে দেয়ার জন্য পারিবারিকভাবে বিভিন্ন জায়গায় কনে দেখা হয়। কিন্তু সে সকল কনে তার পছন্দ না হওয়া ও ওই সকল কনের পরিবারের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন মনে করার কারণেই তার বিয়ে করা হয়ে উঠেনি। একপর্যায়ে এসে তিনি বিয়ে না করে চিরকুমার হয়ে থাকার বিষয়টি পরিবারকে জানিয়ে দেন। তার এমন সিদ্ধান্তে পরিবার আর নতুন করে বিয়ের চাপও দেননি তাকে।

তিনি কলেজ শিক্ষকতা থেকে অবসর নিয়ে রামপাল উপজেলা হুড়কা ইউনিয়নের হুড়কা এলাকায় চিংড়ি ঘের ব্যবসায়ে জড়িয়ে পড়েন। এরপর থেকে ঘেরই হয়ে ওঠে তার সংসার। সেই ঘের দিয়ে তিনি সম্পদের বিস্তার ঘটিয়েছেন। কিনেছেন ৭০/৮০ বিঘা জমিও। হুড়কায় তার রয়েছে ১০ বিঘার একটি বাগান বাড়িও। নিজের আয়ের অর্থ দিয়ে স্থানীয় অনেক ছেলে-মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে চাকরিরও ব্যবস্থা করে দিয়েছেন তিনি। তাদের মধ্যে মোংলার কুমারখালী এলাকার বিএনপি নেতা আব্দুল হালিম খোকন, মোংলা কলেজের প্রফেসর শ্যামা পদ, ইউনুস আলী স্কুলের শিক্ষক সুজীত মন্ডলকে তার খরচে রামপালে লেখাপড়া শিখিয়েছেন তিনি।

তার পরিবারের ৮ ভাই ও ৭ বোনের সকলেই শিক্ষিত। তিনি ছাড়াও তার পরিবারে ভাইয়েরাও প্রফেসরসহ সরকারি চাকরিজীবীও রয়েছেন। ৮ ভাইয়ের মধ্যে মেঝো ভাই শওকত আলী আর বড় ভাই সরকারি চাকরি করেন আর একেবারে ছোট ভাই কলেজের প্রফেসর।

তিনি শিক্ষাজীবন থেকে পরিবার থেকে আলাদা থাকতেন। পড়াশোনার জন্য বড় সময় কাটিয়েছেন খুলনায়। আর রামপাল সরকারি কলেজে চাকরিতে ঢুকে তার যৌবনের বড় সময় কেটে যায়। চাকরি ছেড়ে লেগে যান ঘের ব্যবসায়। ছিল পরিবহন ব্যবসাও।

বয়স যখন ৭০-এ তখন তিনি নিজ থেকে একাকিত্বটা অনুভব করতে থাকেন। সেই একাকিত্ব কাটাতে নিজে পথ খুঁজতে থাকেন। তার মধ্যেই ফেসবুকে তার পরিচয় ঘটে মোংলার মিঠাখালী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা জাফর হাওলাদারের তৃতীয় মেয়ে শাহিদা পারভীন নাজমার সাথে। শাহিদা বিধবা, তার স্বামী মারা যান ক্যান্সারে। একটি মেয়েকে নিয়ে তিনি বাবার বাড়িতেই থাকতেন। এরপর তাদের সম্পর্ক গভীর হয়ে উঠলে শওকত তার পরিবারকে শাহিদাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত জানান।

পরিবার এ সিদ্ধান্ত পেয়ে বিয়ের আয়োজন করে। পরিবারের সকলের উপস্থিতিতে গত ১৮মার্চ হুড়কায় শওকত আলীর বাড়িতে হয়ে এ বিয়ে। বিয়েতে বরের বাড়িতে আসেন কনেযাত্রীরা। ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে হয় ৭১ বছরের বর ও ৩১ বছর বয়সের বিধবা কনের। কনের চাহিদানুযায়ী ১০ লাখ টাকা দেনমোহরের ৫ লাখ টাকার স্বর্ণাংকারে উসুলসহ ৬ বিঘা জমি লিখে দেন কনেকে। এছাড়া কনের মেয়েটির দায়িত্বও নেন বর শওকত আলী। বিয়ের পরই রমজান শুরু হয়েছে, তাই হানিমুনের সিদ্ধান্ত করে রেখেছেন শওকত। রোজার পর নতুন বউকে নিয়ে হানিমুনে হজে যাবেন তিনি।

শওকত আলী বলেন, মুলত স্বাধীনতা খর্ব হবে বিদায় বিয়ে করিনি। বিয়ে করলে বউকে জবাবদিহি, অর্থের হিসাব, কাজ কর্মের কৈফিয়ত দিতে হয়। এছাড়া আমার কাছে রেখে ভাইদের লেখাপড়া শিখিয়েছি, এখনও পরিবারকে নানাভাবে সহায়তা করছি। স্ত্রী থাকলে এসব কিছুতে বাঁধা আসতো তাই বিয়ে করিনি। কিন্তু এখন দেখছি একাকিত্ব লাগছে তাই পরিবারকে জানিয়ে বিয়ে করলাম।

;