ফেসবুক লাইভে এসে স্ত্রীকে খুন, ফোন করে স্বামীর আত্মসমর্পণ
ফেনী পৌরসভার বারাহীপুরে ফেসবুক লাইভে এসে স্ত্রীকে হত্যার পর নিজেই পুলিশকে ফোন করে আত্মসমর্পণ করেছেন ওবায়দুল হক টুটুল নামের এক ব্যক্তি।
বুধবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের বারাহীপুরের পূর্ব বাড়িতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
এই ঘটনায় ওবায়দুল হক টুটুল নামের ওই ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ওবায়দুল হক টুটুল একই এলাকার গোলাম মাওলা ভূঁইয়ার ছেলে। তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন বলেন জানা গেছে।
পুলিশ সুপার খোন্দকার নূরুন্নবী জানান, আটক ব্যক্তিটিকে এখন জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনার তাৎক্ষণিকতা এতো বেশি যে আমরা ভাবতেই পারিনাই যে এমন কিছু ঘটতে পারে। এখানে পারিবারিক, মানসিক সবদিক খুঁটিয়ে দেখা হবে জানান তিনি। তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
নিহতের নাম তাহমিনা আক্তার। তার ১৮ মাস বয়সী এক মেয়ে রয়েছে।
নিহতের বোন রেহানা আক্তার জানান, ৫ বছর আগে কুমিল্লা জেলার গুণবতী এলাকার আকদিয়া গ্রামের সাহাবুদ্দিনের মেয়ে তাহমিনা আক্তারের সাথে ওবায়দুল হক টুটুলের প্রেমের সম্পর্কে বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকে আর্থিক অসচ্ছলতা নিয়ে তাদের পরিবারের মাঝে প্রায় সময় ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকতো। এরই মধ্যে স্বামী টুটুল নিহতের পরিবারের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা দাবি করেন। এর মধ্যে তাকে ৬০ হাজার টাকা দেয়া হয়। বাকি টাকাও তাকে দেয়া হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু একপর্যায়ে বুধবার দুপুরে ফেসবুক লাইভে এসে স্বামী টুটুল তার স্ত্রীকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।
এই পুরো ঘটনা টুটুল নিজেই লাইভের মাধ্যমে ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেন। অভিযুক্ত হত্যাকারী হত্যাকাণ্ডের কিছু সময় পর ভিডিওটি ফেসবুক থেকে সরিয়ে ফেলেন। হত্যাকাণ্ডের কিছুক্ষণ পরে আরো একটি ভিডিওতে অবতীর্ণ হয় অভিযুক্ত টুটুল। সেখানে তার কোলে ছোট্ট একটি শিশুকে দেখা যায়। পুলিশ বলছে, শিশুটি এখন তার দাদীর হেফাজতে আছে।
ফেনী মডেল থানার ওসি তদন্ত সাজেদুল ইসলাম জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবু বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।