সিরিজ বোমা হামলার ১৩ বছর ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সফলতা

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা: ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে একযোগে ৬৩ জেলায় বোমা হামলা চালিয়েছিল নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)। সারাদেশের হাইকোর্ট, সুপ্রিমকোর্ট, জেলা আদালত,  বাংলাদেশে থাকা মার্কিন দূতাবাস, বিমানবন্দর, প্রেসক্লাবসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় সিরিজ এ বোমা হামলা চালায় জঙ্গিরা। এতে দু’জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি  আহত হন প্রায় দুই শতাধিক মানুষ।

দেশজুড়ে এই সিরিজ বোমা হামলার ১৩ বছর পূর্ণ শুক্রবার (১৭ আগস্ট)। সেসময় এই হামলার উদ্দেশ্য ছিল, দেশজুড়ে জেএমবি'র শক্তির জানান দেওয়া।

বিজ্ঞাপন

এই ঘটনার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জেএমবি দমনে সাঁড়াশি অভিযান চালান। তবুও থেমে থাকেনি শায়খ আবদুর রহমান ও বাংলা ভাইয়ের নেতৃত্বাধীন জেএমবি'র জঙ্গি হামলা। তবে তাদের এই জঙ্গি তৎপরতা বেশি দিন চালাতে দেয়নি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। র‍্যাব-পুলিশের তৎপরতায় পরবর্তীতে কোনঠাসা হয়ে পরে এই নিষিদ্ধ সংগঠনটি।

পরবর্তীকালে সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা একে একে আটক হয়। বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে জেএমবির কার্যক্রম। একপর্যায়ে  ২০০৭ সালের মার্চ মাসে শায়খ আবদুর রহমান, বাংলাভাই, আতাউর রহমান সানিসহ ছয় শীর্ষ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।

বিজ্ঞাপন

জেএমবি'র বর্তমান সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে জানতে চাইলে র‍্যাব-পুলিশের কর্মকর্তারা বলেন,  মাঝে মাঝে জেএমবির সদস্যরা বিচ্ছিন্নভাবে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করলেও তারা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।

তবে ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার মধ্য দিয়ে জেএমবি আবার নতুন করে তাদের শক্তির জানান দেয়। তারপর একটানা প্রায় অর্ধশতাধিক অপারেশন করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নতুন ধারার এই জেএমবির বেশির ভাগ নেতৃস্থানীয় নেতা নিহত ও গ্রেফতার হয়। তবে পুরোপুরি নির্মূল না করা গেলেও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এই নিষিদ্ধ সংগঠনের উপর, বলছেন সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা।

পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) সুত্রে জানা যায়,  ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশজুড়ে সিরিজ বোমা হামলার পর জেএমবি কমপক্ষে আরও ৪০টি বোমা হামলার ঘটনা ঘটায়। এইসব ঘটনায় সারাদেশে ১৫৯টি মামলা দায়ের হয়। এর মধ্যে ৯৩টি মামলার নিষ্পত্তিও হয়।

সিরিজ বোমা হামলা নিয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান ডিআইজি মনিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন,  সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় জড়িত যেসব জঙ্গি এখনো পলাতক রয়েছে, তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তাদের অপতৎপরতার ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা হচ্ছে। তাদের সাংগঠনিক সক্ষমতা নেই বললেই চলে।

এবিষয়ে র‍্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বার্তা২৪.কমকে বলেন,  র‍্যাব জঙ্গিদের বিরুদ্ধে একটানা অপারেশন করেছে। যার ফলে তারা অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। তাদের সকল কার্যক্রমের উপর র‍্যাবের নজরদারি আছে।