কিশোরগঞ্জ পৌরসভার অনন্য প্যানেল মেয়র
কিশোরগঞ্জ: একটানা কুড়ি বছর ধরে তিনি কমিশনার বা কাউন্সিলার। টানা দশ বছর ধরে প্যানেল মেয়র। ১৮৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত শতবর্ষ পেরুনো কিশোরগঞ্জ পৌরসভার ইতিহাসে এমন ঈর্ষণীয় রেকর্ড আর কারোই নেই। ইসমাঈল হোসেন ইদু হলেন তেমনই একজন অনন্য জনপ্রতিনিধি।
১৯৯৮ সালে কিশোরগঞ্জ পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড থেকে কমিশনার নির্বাচিত হন ইসমাঈল হোসেন ইদু। তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয় নি তাকে। পর পর চার মেয়াদে কুড়ি বছর জনপ্রতিনিধিত্ব করে চলেছেন তিনি। শেষের দশ বছর ধরে বাড়তি প্যানেল মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন।
সদা হাস্যময়, মিষ্টিভাষী, সাধারণ শারীরিক কাটামোর প্যানেল মেয়র ইসমাঈল হোসেন ইদু’র জনপ্রিয়তার মূলে রয়েছে তার ব্যাপক জনসংযোগ, সততা ও স্বচ্ছতা। এলাকার প্রতিটি ঘরের খবর তিনি রাখেন। উন্নয়নমূলক বা আর্থিক কাজকর্মে নিরঙ্কুশ সততা রক্ষা করেন। প্রতিটি কাজেরই শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করেন তিনি। গণমানুষের মধ্যে তার সম্পর্কে এমনই ধারণা।
ইসমাঈল হোসেন ইদু সম্পর্কে মানুষের ধারণা যে আসলেই সত্যি, সে প্রমাণ পাওয়া গেলো বৃহস্পতিবার (১৬ আগস্ট) বিকালে কিশোরগঞ্জ পৌরসভা চত্বরে। সারা দিন ধরে তিনি ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া বিপুল পরিমাণ চাল নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বিলি-বণ্টনের ব্যবস্থা করিছিলেন।
‘১০ কেজি করে ৪ হাজার ৬০০ জন গরীব-দুঃখী মানুষকে চাল দেওয়া হচ্ছে। ওজন বা বণ্টনে কোনও কারচুপি বা অনিয়ম যাতে না হয় আমি নিজে উপস্থিত থেকে তা নিশ্চিত করছি। সরকারি বা মানুষের সম্পদ সঠিকভাবে সঠিক মানুষের কাছে পৌঁছানো আমার দায়িত্ব,’ বললেন ইসমাঈল হোসেন ইদু।
লাইনে অপেক্ষমাণ লোকজনও একবাক্যে সায় দিলেন, ‘শুধু এখানেই নয়, সব জায়গাতেই প্যানেল মেয়র সাহেব নিজে থেকে কাজ তদারকি করেন। ড্রেন, রাস্তা নির্মাণ থেকে শুরু করে লাইটপোস্টের বাতি লাগানোর কাজও তার নজর এড়ায় না।’
প্যানেল মেয়র ইসমাঈল হোসেন ইদু সম্পর্কে একটি প্রচলিত কথা হলো, পৌরসভায় কাউকে না পাওয়া গেলেও তাকে পাওয়া যাবেই। জন্ম নিবন্ধন, নাগরিকত্বের সার্টিফিকেট ইত্যাদি নানা ধরনের পৌর সুবিধা অতিদ্রুত ও সহজে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে তিনি সদা তৎপর।
বার্তা২৪.কমকে ইসমাঈল হোসেন ইদু বলেন, ‘মানুষের কাজ আমি সামান্য সময়ের জন্য আটকে রাখি না। মানুষের কাজ করার জন্যই মানুষ আমাকে নির্বাচিত করেন। সেই কাজ সুষ্ঠুভাবে করাই আমার দায়িত্ব। দ্রুততার সাথে সৎ ও স্বচ্ছভাবে কাজ করি বলেই মানুষ আমাকে বার বার সমর্থন করেছেন। আমি আমার সর্বশক্তি দিয়ে মানুষের সমর্থনের মযাদা রক্ষা করবো।’
কিশোরগঞ্জ শহরের এলিট এলাকা নামে পরিচিত ১নং ওয়ার্ডে জেলার প্রায়-সকল অফিস অবস্থিত। অফিসার, অধ্যাপকসহ শিক্ষিত মানুষের বাস এখানে। এখানকার স্থায়ী বাসিন্দা ইসমাঈল হোসেন ইদু পৈত্রিক পুরনো বাড়িতে থেকেই কাজ-কর্ম করেন। ব্যক্তিগত বা পারিবারিক আর্থিক অবস্থার কোনও উন্নতি করতে না পারলেও কোনও দুঃখ নেই তার। আচরণে ও চলনে আলাদা কোন চমক তার নেই। সাধারণভাবে সারাদিনই মানুষের সাথে মিশেন। মানুষের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে নানা অফিসে ঘুরেন। এলাকার মসজিদ, মাদ্রাসা, নানা প্রতিষ্ঠানের কল্যাণ চিন্তাতেই কেটে যায় তার দিনরাত। পরিবারকে ঠিক মতো সময় দেওয়ার সুযোগও পান না এই পৌর জনপ্রতিনিধি।
‘নিজের আর্থিক উন্নতির জন্য রাজনীতি বা নির্বাচন করি না’, দৃঢ় কণ্ঠে বললেন ইসমাঈল হোসেন ইদু। জানালেন, এলাকার জনগণ যতদিন চাইবেন, ততদিনই তিনি তাদের জন্য কাজ করবেন।