মেহেরপুরে চামড়া বেচাকেনা নিয়ে সংশয়

  • কান্ট্রি ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

মেহেরপুর: মেহেরপুরে চামড়া কেনাবেচা নিয়ে ব্যবসায়ী ও কোরবানির পশু মালিকদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। দর পতন, চামড়ার মান নির্ধারণ ও গতবারের বিক্রিত চামড়ার টাকা না পাওয়ায় দিশেহারা ব্যবসায়ীরা।

চামড়া ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছর কোরবানির সময়ে মেহেরপুর জেলায় প্রায় ৭০-৮০ হাজার চামড়া কেনাবেচা হয়। এবারো সমপরিমাণ পশু কোরবানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে প্রাণিসম্পদ অফিস। কিন্তু সরকার চামড়ার যে মূল্য নির্ধারণ করেছে তা গত বছরের চেয়ে অনেক কম।

জেলার বড় আকারের চামড়া ব্যবসায়ী তুহিন আহম্মেদ বলেন,‘গত বছরের চেয়ে এবার চামড়ার দাম কমানোয় কোরবানির পশু মালিকদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। অপরদিকে আকিজ ও এপেক্স কোম্পানি থেকে চামড়ার মান, শ্রেণি নির্ধারণ নতুন করে সংকট সৃষ্টি করেছে। চামড়া ছাড়ানোর সময় ছুরির দাগ ও ফাটা চামড়া ক্রয় করবে না বলে ওই দু’টি কোম্পানির প্রতিনিধিরা আমাদের জানিয়ে দিয়েছে। এই শর্ত মানতে হলে আমাদের ক্রয়কৃত চামড়ার শতকরা ২০ ভাগ বিক্রি হবে।’

চামড়া ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ জানান, মেহেরপুর জেলার ব্যবসায়ীরা নাটোরসহ দেশের বিভিন্ন মোকামে চামড়া বিক্রি করে থাকেন। গত বছর যে চামড়া বিক্রি করা হয়েছিল তার অর্ধেক টাকাও এখনো পরিশোধ করেনি মোকামের আড়তদাররা। ফলে কোরবানির দিনে কীভাবে চামড়া ক্রয় করবে তা ভেবে অস্থির ব্যবসায়ীরা। পশু কোরবানির মালিকরা বাকিতে চামড়া বিক্রি করেন না। যেকোনো ভাবেই তাদের টাকা দিতে হয়। তাই ঋণ ও সুদের টাকা সংগ্রহের চেষ্টা করছে ব্যবসায়ীরা।

পশু কোরবানি দিতে ইচ্ছুক কয়েকজন জানান, মাংস তৈরির খরচ ও বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে চামড়া বিক্রির অর্থ দেয়া হয়। এ বছরে চামড়ার যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন সংশ্লিষ্ট সবাই।

চামড়া ব্যবসায়ী সূত্রে আরও জানা গেছে, প্রতি বছরই মৌসুমী চামড়া ক্রেতাদের কারণে বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। তারা বেশি দরে গ্রাম থেকে চামড়া ক্রয় করে থাকেন। এক প্রকার সিন্ডিকেট তৈরি করে বেশি দরে চামড়া বিক্রির চেষ্টা করেন। এতে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে অনেক সময় চামড়া ক্রয় করতে হয়।

চামড়া ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, একটি গরুর চামড়ায় ৫-৭ কেজি ও খাসির চামড়াতে ১-২ কেজি লবণ প্রয়োজন। প্রতি কেজি লবণের দাম ১৬-১৭ টাকা। লবণের দাম বৃদ্ধিতেও চামড়া ব্যবসায় এক নতুন সংকট তৈরি করেছে। এছাড়াও বৃদ্ধি পেয়েছে শ্রমিকের মজুরি।

চামড়া ব্যবসায়ের সংকটের বিষয়টি নজরে আনলে মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) মহিদুল ইসলাম জানান, চামড়ার বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টির বিষয়ে জেলা প্রশাসনের নজরদারি রয়েছে। ইউএনও, পৌরসভার মেয়রসহ সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

বিজ্ঞাপন

এদিকে গত ৯ আগস্ট চামড়ার দাম ঘোষণা করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী। এবারে ঢাকায় গরুর চামড়া ৪৫-৫০ টাকা ফুট এবং ঢাকার বাইরে ৩৫-৪০ টাকা ফুট। খাসির চামড়া ১৮-২০ টাকা ফুট এবং বকরির চামড়া ১৩-১৫ টাকা ফুট।

গত বছর ট্যানারি ব্যবসায়ীরা ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া ৫০ থেকে ৫৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় সংগ্রহ করেন। এছাড়া সারাদেশে খাসির চামড়া ২০-২২ টাকা এবং বকরির চামড়া ১৫-১৭ টাকায় সংগ্রহ করা হয়।

 

বিজ্ঞাপন