কুষ্টিয়ার কুমারখালিতে লাইসেন্স ছাড়াই সার মজুদের অপরাধে জাকির হোসেন (৪১) নামের এক ব্যবসায়ীকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। পেঁয়াজের ভরা মৌসুমেও নন-ইউরিয়া টিএসপি, এমওপি, ডিএপি সার সংকট সৃষ্টি করে অতিরিক্ত টাকায় বিক্রি করছিলো চক্রটি।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের গেদের বাজার এলাকায় অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে। আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম।
ভ্রাম্যমাণ আদালতসুত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে লাইসেন্সবিহীন সার কীটনাশক বিক্রি করে আসছে কুমারখালি উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের গেদের বাজার এলাকায় মেসার্স লাকী এন্টারপ্রাইজ। সম্প্রতি পেঁয়াজের ভরা মৌসুমেও নন-ইউরিয়া টিএসপি, এমওপি, ডিএপি সার সংকট সৃষ্টি করে অতিরিক্ত টাকায় বিক্রি করছিলো চক্রটি।
বিকেলে খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে ব্যবসায়ীর গুদামে ২০০ বস্তা সার পাওয়া যায়। এসময় লাইসেন্সবিহীন সার মজুদ করার অপরাধে মেসার্স লাকী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী ব্যবসায়ীকে সার ব্যবস্থাপনা আইনে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এছাড়া, কৃষি কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মজুদকৃত সার ন্যায্য মূল্যে প্রকৃত কৃষকদের মাঝে বিক্রির নির্দেশ দেন আদালত।
আদালত পরিচালনায় সহযোগিতা করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাইসুল ইসলাম ও কুমারখালী থানার পুলিশ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কৃষকরা জানান, পেঁয়াজের চারা রোপণের মৌসুম চলছে। তবে নন-ইউরিয়া সারের ব্যাপক সংকট দেখা দিয়েছে। নিবন্ধিত ডিলাররা পরিমিত সার দিচ্ছেন না। আর অনিবন্ধিত ব্যবসায়ীরা সার মজুদ করে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছেন। তাঁদের ভাষ্য, এক হাজার ৩৫০ টাকা মূল্যের ৫০ কেজির এক বস্তা টিএসপি সার কিনতে হচ্ছে এক হাজার ৭০০-৮০০ টাকায়, এক হাজার ৫০ টাকা মূল্যের এক বস্তা এমওপি সার কিনতে হচ্ছে এক হাজার ১৫০-২০০ টাকায়, আর এক হাজার ৫০ টাকা মূল্যের এক বস্তা ডিএপি সার বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৩৫০ টাকায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাইসুল ইসলাম বলেন, বছরজুড়ে ভালো দাম থাকায় এবছর পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। চলতি বছরে চার হাজার ৮৯০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ভরা মৌসুমে কিছুটা সারের সংকট দেখা দিয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, লাইসেন্স ছাড়াই সার মজুদ করার অপরাধে এক ব্যবসায়ীকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া মজুদকৃত সার কৃষি কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ন্যায্যমূল্যে প্রকৃত কৃষকদের মাঝে বিক্রির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জনস্বার্থে এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।