ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় করোনা রোধে শেষ ভরসা জোন ভিত্তিক লকডাউন!
দেশের অন্যন্য জেলার মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়াও প্রতিদিন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। জেলা সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৪০৬ জন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬ জন। এছাড়া করোনায় নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এদিকে জেলায় দিন দিন করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বিগ্ন স্থানীয় জনতা ও প্রশাসন। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করার বিষয়ে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার বিবেচনা করছে স্থানীয় প্রশাসন। এ ক্ষেত্রে জোন ভিত্তিক লকডাউন ও স্থানীয় সচেতনতার দিকে বেশি নজর দিচ্ছে জেলা সিভিল সার্জন অফিস। এই দুইটি পদক্ষেপ কার্যকর করার বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে চায় প্রশাসন।
এদিকে জেলার স্থানীয় বাসিন্দা ও স্থানীয় প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশের অন্যসব জেলার মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়াও ১১ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া অঘোষিত লকডাউনে স্থানীয়দের তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে এই লকডাউন চলাকালীন জেলায় করোনার সংক্রমণের সংখ্যা বাড়তে থাকে। ফলে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়া এখন করোনার হটস্পট জেলায় রূপান্তরিত হয়েছে।
জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকা ও উপজেলায় সরেজমিনে দেখা যায়, লকডাউন তুলে নেওয়ার পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘর থেকে বের হওয়ার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল তা সঠিকভাবে পালন হচ্ছে না। খুব অল্প সংখ্যক মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে বের হলেও অধিকাংশ মানুষ তা মানছেন না। ফলে দিন দিন যেমন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে তেমনি আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় বিশিষ্টজন ও চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যেহেতু করোনাভাইরাসের কমিউনিটি সংক্রমণ শুরু হয়েছে এজন্য সচেতনতা ও লকডাউনই এর প্রতিকারের একমাত্র উপায়। কেননা এখন পর্যন্ত করোনার চিকিৎসায় স্থায়ী কার্যকর কোনো ওষুধ না আসায় লকডাউনই শেষ ভরসা। এছাড়া জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কাজের গতিও আরও বাড়াতে হবে। কিছু কিছু জাগায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের গাফিলতি থাকার কারণেও সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।
এজন্য জেলায় জোন ভিত্তিক লকডাউন বা পূর্ণাঙ্গ লকডাউন ঘোষণা করার প্রয়োজন বলেও তারা মনে করছেন।
জেলা সিভিল সার্জন অফিস জানান, জেলায় করোনা সংক্রমণ রোধ করতে না পারার অন্যতম কারণ হচ্ছে জন সচেতনতা বৃদ্ধি না হওয়া ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে না চলা। তাই এই দুইটি বিষয় নিশ্চিত করণে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে জেলা সিভিল সার্জেন্ট অফিস।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ বার্তা২৪.কমকে বলেন, জেলায় করোনাভাইরাস রোধে জোন ভিত্তিক (রেড, ইয়েলো ও গ্রিন) লকডাউনকে আমরা এখন অগ্রাধিকার দেব চিন্তা করছি। এ বিষয়ে কার্যকরী সিদ্ধান্ত দ্রুত নেব আমরা। তাছাড়া জন সচেতনতার অভাব রয়েছে জেলায়। এ বিষয়টি নিশ্চিত করতেও আমরা কাজ করে যাব।