মানহীন সামগ্রী কেনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তা জড়িত: টিআইবি

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

করোনার কারণে সৃষ্ট দুর্যোগকালীন পরিস্থিতি কাজে লাগিয়ে পাঁচ থেকে ১০ গুণ বাড়তি মূল্যে মানহীন সুরক্ষা সামগ্রী কেনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের একাংশের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে বলে দাবি করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

টিআইবি বলছে, মানহীন এসব সুরক্ষা সামগ্রী কিনে একটি চক্র লাভবান হচ্ছে এবং এসব মানহীন সামগ্রী হাসপাতালে সরবরাহ করে স্বাস্থ্যকর্মীদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে। একটি সিন্ডিকেট বিভিন্ন ফার্মের নামে সব ধরনের কেনাকাটা নিয়ন্ত্রণ করছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায় এবং এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের একাংশের জড়িত থাকারও অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে এন-৯৫ মাস্ক লেখা মোড়কে সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক সরবরাহ এর একটি উদাহরণ।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৫ জুন) ‘করোনাভাইরাস সংকট মোকাবিলায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ’ উপলক্ষে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে টিআইবি বলেছে, চলমান করোনা পরিস্থিতিতে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই), মাস্কসহ বিভিন্ন সামগ্রী একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কেনা হচ্ছে। এ ক্রয় প্রক্রিয়া নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং কেন্দ্রীয় ওষুধ প্রশাসনের দুই-একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়া অন্যরা কিছুই জানছেন না। এতে করে কোন সামগ্রীর মূল্য কত, তা জানা যাচ্ছে না। বেশিরভাগ সামগ্রী মৌখিক আদেশে সরবরাহ করা হয়েছে। আবার লিখিতভাবে যেসব কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে, সেগুলোরও মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি।

বিজ্ঞাপন

বর্তমানে তীব্র সংকট মোকাবিলায় বিশ্ব ব্যাংকের অর্থে ভেন্টিলেটর আমদানির পরিকল্পনা নেওয়া হলেও ক্রয় প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা ও দুর্নীতির অভিযোগে করোনাকালের ১২ সপ্তাহেও ক্রয়াদেশ দেওয়া সম্ভব হয়নি। এছাড়া ‘করোনাভাইরাস মোকাবিলায় জরুরি সহায়তা’ শীর্ষক প্রকল্পে অস্বাভাবিক ক্রয় মূল্য প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমান বাজার মূল্যের চেয়ে কয়েকগুণ বাড়িয়ে প্রতিটি সামগ্রীর মূল্য প্রস্তাব করা হয়েছে বলেও এসময় উল্লেখ করা হয়।

একটি হাসপাতালে ব্যবহৃত পিসিআর মেশিন থাকা সত্ত্বেও নতুন পিসিআর মেশিন কেনার চাহিদা পাঠানো হয়। এছাড়া স্বাস্থ্য খাত দুর্নীতিগ্রস্থ থাকার কারণে অনেক অবকাঠামো ঠিকমতো ব্যবহার করা যায়নি। একটি মেডিকেল কলেজে ক্রয় সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলা চলমান থাকায় পাঁচ বছর অব্যবহৃত অবস্থায় ১৬টি ভেন্টিলেটর পড়ে ছিল। পরে ১০টি সচল করা হয়। পরীক্ষাগারের সম্প্রসারণ করতে সরকারিভাবে ৩১টি আরটি পিসিআর মেশিন কেনা হয়। করোনা সংকটকালে বিশ্বব্যাপী চাহিদার কারণে সরবরাহকারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ২০০৯ সালের পুরনো মডেলের পিসিআর মেশিন সরবরাহ করে। মেশিনের ত্রুটির কারণে কয়েকটি হাসপাতাল এ মেশিন গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়। কয়েকটি পরীক্ষাগারে বারবার করোনার নমুনা পরীক্ষা বন্ধ হওয়ার এটি একটি কারণ।