লালমনিরহাটে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় কয়েক দিন ধরে সূর্যের দেখা নেই। ফলে এ অঞ্চলে আলু ক্ষেতে দেখা দিয়েছে লেট ব্লাইট বা নাবি ধসা রোগ। এতে আলুর ফলন নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। এ-দিকে আলুর রোগ প্রতিরোধে হিসেবে চাষিদের পরিমিত মাত্রায় ওষুধ স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছে কৃষি বিভাগ।
কয়েক দিনের টানা কুয়াশায় আলু গাছের পাতায় এই রোগ দেখা দিয়েছে। রোগের লক্ষণ হিসেবে গাছের পাতা সাদা হয়ে ধীরে ধীরে গাছ নুয়ে পড়ে। ছত্রাকজনিত এ রোগটি ছড়িয়ে পড়লে ফলন অনেকাংশে কমে আসে। নিয়মিত কুয়াশার প্রভাব কাটাতে স্প্রে করায় খরচ বাড়ছে কৃষকদের। এতে উৎপাদন ব্যয়ও বৃদ্ধি পাবে। কৃষকেরা জানিয়েছেন, এসব কারণে চলতি বছর আলুর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা কঠিন হয়ে পড়তে পারে। তাদের দাবি, কোনো ওষুধেই কাজ হচ্ছে না, গাছ মরে যাচ্ছে।
লালমনিরহাট কৃষি বিভাগ জানায়, লালমনিরহাটে এ বছর ৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে মাত্র ২ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে।
হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারীর তিস্তাচরের কৃষক আবদুস সোবহান বলেন, ‘প্রতি বছর আমরা তিস্তাচরে আগাম আলু আবাদ করি। এবারও আলু লাগিয়েছি কয়েক একর জমিতে। কয়েকদিনের ঠাণ্ডা আর কুয়াশায় আলু ক্ষেতের অবস্থা খুবই খারাপ। গাছ মরে যাচ্ছে। স্প্রে করতেও প্রচুর টাকা খরচ হচ্ছে।
পাটগ্রাম উপজেলার বাউরার আলু চাষি মামুন বলেন, ‘৪ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। কুয়াশার কারণে আলু ক্ষেতের গাছ মরে যাচ্ছে। স্প্রে করেও কাজ হচ্ছে না। ঘন কুয়াশা থাকলে বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।
কালীগঞ্জের কাকিনা এলাকার কৃষক বাবুল মিয়া বলেন, ‘২ বিঘা জমিতে আগাম জাতের আলু চাষ করেছি। ঘন কুয়াশার কারণে আলু ক্ষেতে মড়ক দেখা দিয়েছে। চরম বিপাকে পড়েছি।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলার কৃষি অফিসার মিজানুর রহমান বলেন, দিন দিন শীত ও কুয়াশার প্রকোপ বাড়ছে এতে আলু ক্ষেতে নাবি ধসা রোগ দেখা দিয়েছে। সেক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ে কৃষি উপ-সহকারীরা কৃষকদেরকে এই ছত্রাক নাশক দমন করার জন্য কৃষকদের স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছে। এখন পর্যন্ত এই রোগটি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড. মো. সাইখুল আরিফিন বলেন, ‘ঘন কুয়াশার কারণে আলু খেতে লেট ব্লাইট রোগ দেখা দিয়েছে। আমরা কৃষককে পরামর্শ দিচ্ছি জমিতে স্প্রে করার। আশা করি খুব বেশি ক্ষতি হবে না।