রংপুরে থামছে না চোরেরা, বাড়ছে গরু চুরি

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যাচ্ছে দিনে দুপুরে চুরি করা গরু নিয়ে যাচ্ছেন একজন

সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যাচ্ছে দিনে দুপুরে চুরি করা গরু নিয়ে যাচ্ছেন একজন

সকাল সাড়ে ১০টা। জরুরি প্রয়োজনে ঘরের দরজায় তালা ঝুলিয়ে বাহিরে যান নাজিরুল ইসলাম। বাড়িতে কেউ না থাকায় সুযোগ নেয় চোরেরা। গয়নাসহ প্রায় পৌনে তিন লাখ টাকার মালামাল চুরি হয়। বাড়ি ফিরে দরজা খুলতে গিয়ে অবাক। ঘরের দরজায় তালা লাগানো থাকলেও ভিতর দিয়ে আটকানো। ঘরের পিছনে গিয়ে চোখে পড়ল শয়ন কক্ষের জানালার গ্রিল কাটা। তিন ঘণ্টার ব্যবধানে দিনে দুপুরে চুরির এই ঘটনায় তিনি বাকরুদ্ধ।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) দুপুরে রংপুর নগরীর সাতগাড়া মিস্ত্রিপাড়া এলাকার নাজিরুল ইসলাম ওরফে তলামের বাসা বাড়িতে চুরির এই ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী।

বিজ্ঞাপন

রংপুরে এমন চুরির ঘটনা এখন প্রায়ই ঘটছে। শুধু বাড়ি থেকে চুরি নয়। করোনা দুর্যোগে বিভিন্ন এলাকায় বেসরকারি ছাত্রাবাস, ছাত্রীনিবাস, ফ্লাট বাসা-বাড়িসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হঠাৎ করে চুরি বেড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বুধবার (১৫ জুলাই) রাতে নগরীর সিটি পার্ক মার্কেটে আরটিভি অফিস থেকে ১২ জোড়া বিদেশি কবুতর চুরি হয়। এর আগেও ওই অফিস থেকে এমন চুরির ঘটনা ঘটেছে। এনিয়ে আরটিভির রংপুর প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম বাদল কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ করেছেন।

বিজ্ঞাপন

এর আগে গত ৩০ জুন নগরীর কোবারু ডাক্তারপাড়া গ্রামের মিজানুর রহমানের বাড়ি থেকে টাকা, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন চুরি করে নিয়ে যায় অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা। ২৪ জুন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া মাহিগঞ্জের ব্যবসায়ী তোফাজ্জল হোসেনের লকডাউন করা বাড়ি থেকে নগদ ১২ লাখ টাকাসহ মূল্যবান মালামাল চুরি হয়। এছাড়াও ইন্টারনেট সংযোগের তার চুরির ঘটনাও বেড়েছে।

এদিকে চুরির ঘটনার সাথে কোরবানির ঈদকে ঘিরে সক্রিয় হয়ে উঠেছে গরু চোরের দলও। গেল পনেরো দিনে রংপুর মহানগরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে অন্তত ত্রিশটি গরু ও ছাগল চুরি হয়েছে। এসব ঘটনায় পুলিশ কয়েকজনকে আটকও করেছে। উদ্ধার হয়েছে চুরি যাওয়া কয়েকটি গরু।

সোমবার (১৩ জুলাই) তারাগঞ্জ উপজেলার ঘনিরামপুর ঝাকুয়াপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুস সালামের গোয়াল ঘরের দরজা ভেঙে ছয়টি গরু চুরি হয়েছে। এছাড়াও জেলার পীরগঞ্জ, মিঠাপুকুর, সদর ও বদরগঞ্জে আরও ২৫টির মতো গরু ও ছাগল চুরির ঘটনা ঘটেছে।

হঠাৎ করেই এমন অপরাধ কর্মকাণ্ড বেড়ে যাওয়ায় চোরদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে পুলিশ। বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি অভিযানে চোর চক্রের সক্রিয় সদস্যদের কয়েকজন আটক হয়েছেন। অন্যদের ধরতেও অভিযান অব্যহত রাখা হয়েছে।

এব্যাপারে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) শহিদুল্লাহ কাওছার জানান, করোনাকাল ও ঈদকে ঘিরে যাতে চুরি, ছিনতাইসহ অন্যান্য অপরাধ বেড়ে না যায়, এজন্য পুলিশ সজাগ রয়েছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি সফল অভিযান পরিচালনা করে চুরি যাওয়া মালামালসহ কয়েকজন চোর ও অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়েছে। শুধু চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই রোধে নয়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাবে এমন যে কোনো কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।