সিনহা হত্যার বিচার সম্পন্ন হলে মাইলফলক হয়ে থাকবে
মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যাকাণ্ড নিয়ে সংসদীয় কমিটিতে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। পাশাপাশি অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছেন সংসদীয় কমিটির সদস্যরা। তবে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও বিচার সম্পন্ন হলে তা বাংলাদেশে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।
বুধবার (৭ অক্টোবর) সংসদ ভবনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উত্থাপিত কার্যপত্র থেকে এ তথ্য জানা যায়। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সাবেক সেনা সদস্য কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর পদক্ষেপ জানতে চান।
মুহাম্মদ ফারুক খান বৈঠকে বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যা করে ফেলা এটাই খুবই দু:খজনক। সংসদীয় কমিটিকে একটি পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সংসদীয় কমিটিকে জোরালো ভূমিকা রাখার অনুরোধ করেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এ ব্যাপারে কি পদক্ষেপ নিয়েছে জানত চান তিনি।
বৈঠকে উপস্থিতি সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি মেজর জেনারেল মো. এনায়েত উল্ল্যাহ বলেন, মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানের মৃত্যুর খবর পেয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হলে তিনি যৌথভাবে একটি কমিটি করে দেন। উক্ত কমিটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা নিয়ে কাজ করছে। যৌথ কমিটির কার্যক্রম এখনো চলমান রয়েছে। তদন্ত শেষ হওয়ার পর সর্বশেষ অগ্রগতি হয়তো বলা যাবে। তদন্ত সঠিকভাবে শেষ হবার পর যারা অপরাধী তাদের উপযুক্ত শাস্তির আওতায় আনা হবে। পুলিশের পক্ষ থেকেও এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করা হয়েছে। এই তদন্ত ও বিচার সম্পন্ন হলে তা বাংলাদেশে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে তিনি কমিটিকে জানান।
কমিটি সদস্য মোতাহার হোসেন বলেন, ওসি প্রদীপ এতো অপরাধ করার পরেও মিডিয়া বা কেউ তা প্রকাশ করেনি, তার ভয়ে কেউ বিচার চাইতেও সাহস পায়নি। গোয়েন্দা সংস্থা কেনো এ ব্যাপারে আগে কোনো তথ্য দিতে পারলো না? তিনি ওসি প্রদীপের অপরাধের জন্য উপযুক্ত শাস্তি এবং মেজর (অব.) সিনহাকে গুলি করে হত্যার করার জন্য অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
প্রসঙ্গত গত ৩১ জুলাই রাত আনুমানিক ৯টা ২৫ মিনিটে টেকনাফ থানার আওতাধীন মেরিন ড্রাইভ এলাকার শামলাপুর পুলিশ চেকপোস্টে ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী কর্তৃক গুলিবর্ষণে বিএ-৬৯৩১ মেজর অব. সিনহা মো. রাশেদ খান নিহত হন।
কমিটি সভাপতি মোহাম্মদ সুবিদ আলী ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটি সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান, মো. ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ, মো. মোতাহার হোসেন, মো. নাসির উদ্দিন, মো. মহিববুর রহমান এবং বেগম নাহিদ ইজাহার খান অংশগ্রহণ করেন।
এছাড়া বৈঠকে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় এসডিজি এর লক্ষ্য অর্জনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গৃহীত পদক্ষেপ সমূহের উপর প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
বৈঠকে প্রতিরক্ষা সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনী, আবহাওয়া অধিদপ্তর ও জরিপ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।