ঢাকা-শিলিগুড়ি ট্রেন চলবে আগামী জুনে
জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: আগামী জুনে ঢাকা-শিলিগুড়ি ট্রেন চলাচল করবে বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। তিনি বলেছেন, সড়ক পথের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে রেলপথের ওপর গুরুত্ব বাড়াতে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে ।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনিত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে রেলপথ মন্ত্রী একথা বলেন।
ঢাকা শহরের চারদিকে চক্রাকার (সার্কুলার) রেললাইন নির্মাণের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ফরিদপুরের ভাঙ্গা হতে বরিশাল, খুলনা-মংলা পর্যন্ত ট্রেন লাইনের উন্নয়নে কাজ চলছে। শুধু তাই না আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধিতে ভারতের ভুরুঙ্গামারী পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার রেললাইন করা হবে। আগামী জুনের মধ্যে ঢাকা-শিলিগুড়ি পর্যন্ত ট্রেনে যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হবে।
এদিকে ঢাকা-কলকাতা চলাচলকারী মৈত্রী এক্সপ্রেস যেখানে সপ্তাহে ৪দিন চলতো সেটি আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি হতে সপ্তাহে ৫ দিন চলবে এবং খুলনা-কলকাতা যেটি একদিন চলতো সেটি ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে সপ্তাহে দু’দিন চলবে।
তিনি বলেন, আমেরিকার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। সেই দেশ থেকে আমরা ৪০টি ব্রডগেজ ইঞ্জিন কিনবো। আগামী বছরের মার্চ থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে ইঞ্জিনগুলো রেল মন্ত্রণালয় সংগ্রহ করবে। এছাড়া এই জুনের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে মিটার গেজের ইঞ্জিন ১০টি এবং আগামী বছরের মধ্যে আরও ২০টি ইঞ্জিন সংগ্রহ করা হবে।
তিনি বলেন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সকল রেল ব্রিজ সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। আমাদের ট্রেনের গড় গতি যেখানে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার সেই গতি ১০০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আমাদের নতুন প্রকল্পগুলোতে এসব বিষয় যুক্ত থাকবে।
মন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যে ট্রেন চলবে ঢাকা-যশোর সেখানে ইলেকট্রিক ট্রেন প্রকল্প গ্রহণ করেছি। নারায়ণগঞ্জ-জয়দেবপুর পর্যন্ত ইলেকট্রিক ট্রেন এবং চট্টগ্রাম-কক্সবাজার পর্যন্ত ইলেকট্রিক করবো। সড়কের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে ট্রেনে ৩০-৩৫ ভাগ সক্ষমতা করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিএনপি-জামায়াত রেলকে ধ্বংস করেছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রেল মন্ত্রণালয়ে ১৯৭৩-৭৪ সালে জনবল ছিল প্রায় ৭০ হাজারের মতো সেই জনবল কমে এখন ২৭ হাজারে পৌঁছেছে। বিএনপি ক্ষমতায় এসে একদিনে ১০ হাজার কর্মী ছাটাই করে।
রেল যোগাযোগ বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালের ৪ ডিসেম্বর রেল মন্ত্রণালয় আলাদা করে প্রায় ৭৭টি প্রকল্প ইতিমধ্যে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের প্রায় ৩৬টি প্রকল্প চলমান রয়েছে। তার মধ্যে ৩৩টি উন্নয়ন প্রকল্প আর ৩টি হচ্ছে কারিগরি প্রকল্প। প্রধানমন্ত্রীর ১০টি মেগা প্রকল্পের অন্যতম চট্টগ্রাম-কক্সবাজার এবং ঢাকা-যশোর পর্যন্ত পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যে রেললাইন।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যে চায়নার সঙ্গে জি টু জি পদ্ধতি প্রকল্প গ্রহণ করেছি। তার অন্যতম হল জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী পর্যন্ত ডাবল লাইন, জয়দেবপুর-জামালপুর পর্যন্ত ডাবল লাইন, এবং আখাউড়া- সিলেট পর্যন্ত ডাবল লাইন করা।
জাইকার অর্থায়নে বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে আরও একটি রেলসেতু করা হবে বলে জানান মন্ত্রী। টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ১৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই কাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করবেন।