‘দেশে স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে দেয়নি আ.লীগ’
স্বাধীনতার পর থেকে আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই দেশে স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে দেয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, প্রাণবন্ত গণতন্ত্রের জন্য যে দলীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং উদার সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রবণতা অপরিহার্য তা আওয়ামী লীগ কখনোই রপ্ত করেনি। বাংলাদেশের নিজস্ব ভূমিতে যাতে গণতন্ত্রের শিকড় গজাতে না পারে সেজন্য তারা সবসময় সর্বশক্তি নিয়োগ করে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো কন্ঠরুদ্ধ করার নানা কালাকানুন, গুম, অপহরণ, বিচারবহির্ভূত হত্যার অমানবিক নিষ্ঠুরতার সীমাহীন আবর্তের মধ্যে দেশকে ঠেলে দিয়েছে তারা। স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পরেও গেলো না আঁধার।
মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) বেলা ১২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, আগামীকাল ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কিত অধ্যায়। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের রাতে অর্থাৎ ২৯ ডিসেম্বর ‘ভোট ডাকাতি’ হয়েছে। তাই ৩০ ডিসেম্বর দিনটিকে দেশবাসী ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করে। পৃথিবীর ইতিহাসে অভাবনীয় রেকর্ড সৃষ্টিকারী রাতে র্যাব-পুলিশের সহায়তায় ব্যালট বাক্স পূর্ণ করে ক্ষমতা দখলের দুই বছর পূর্ণ হবে আজ মঙ্গলবার রাতে। তাই ওই রাতটি দেশবাসীর কাছে তাদের ভোটাধিকার হরণের কালো রাত হিসেবে কলঙ্কিত হয়ে থাকবে। ২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর কালো রাতে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেয় আওয়ামী লীগ। সেদিন গণতন্ত্রের গলায় ফাঁসির দড়ি ঝুলিয়েছিল। তাই ৩০ ডিসেম্বর কোনো ভোট হয়নি, যা হয়েছে তা হলো নির্বাচন কমিশন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের সম্মিলিত উদ্যোগে ভোট ডাকাতি।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, অভিনব ও নজীরবিহীন নিশিরাতের নির্বাচন করে অনুশোচনার বালাই নেই বরং গত পরশু দিন ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন ‘বিএনপি তখন সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা ব্যাহত ও বাধাগ্রস্ত করতে এবং গণতন্ত্রকে সংকটে ফেলতে চেয়েছিল’। আদিম মানুষেরা নরবলি দেওয়ার পর মৃতদেহ নিয়ে যেভাবে উল্লাস করতো ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্য যেন গণতন্ত্র হত্যা করে সেই ধরনের উল্লাসেরই বহিঃপ্রকাশ। গণতন্ত্র হত্যা করে গণতন্ত্রের প্রতি এহেন শ্রদ্ধাহীন স্পর্ধার সংস্কৃতিতে দেশবাসী আজ চরমভাবে ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান অথচ সিইসি নুরুল হুদার নেতৃত্বে যে কমিশন সেই কমিশনের অধীনে আজ পর্যন্ত একটি নির্বাচনও সুষ্ঠু হয়নি। মানুষের ভোটের অধিকারকে এই কমিশন শুধু হরণই করেনি বরং মহান স্বাধীনতার মূল চেতনা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে তারা গুরুতর অসদাচরণ করেছেন। নির্বাচন কমিশনের এই ভূমিকা জনগণের বিরুদ্ধে সরকারের নির্দয় মনোবৃত্তির সারাংশ মাত্র। দেশের ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিক ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল’ গঠন করে ইসির ভোট ডাকাতি, অনিয়ম ও দুর্নীতির যে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন এবং তাদের বিচার দাবি করেছেন-এ দাবি দেশের ১৬ কোটি মানুষের দাবি।