চাঁদপুরের দলীয় কোন্দল মেটাতে ঢাকায় বসবেন কেন্দ্রীয় নেতারা
স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা-উপজেলায় যে সকল নেতা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে রয়েছেন তাদের সঙ্গে তৃণমূলের নেতাদের এক ধরনের বিরোধপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে চাঁদপুরে। এই বিরোধের জেরে শনিবার (০২ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের বাকবিতণ্ডা হয়। বিরোধের বিষয়টি তখন সামনে চলে আসে। তাই স্থানীয় নেতাদের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক মিটিয়ে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করতে চাঁদপুরের তিন উপজেলার নেতাদের নিয়ে ঢাকায় বসবেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
চাঁদপুরের বিরোধপূর্ণ তিন উপজেলা হচ্ছে কচুয়া, ফরিদগঞ্জ ও মতলব উত্তর। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও নেতাদের নিয়ে ঢাকায় বসবেন চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা। চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পরপরই এই তিন উপজেলা নিয়ে ভিন্ন ভিন্নভাবে বৈঠকে বসবেন তারা। এরপর এসব উপজেলার বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন সম্মেলন শেষ করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
রোববার (০৩ অক্টোবর) চাঁদপুর সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া আগামী ৭ অক্টোবর মতলব দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। শুধুমাত্র সভাপতি পদে এই উপজেলায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নভেম্বরে চাঁদপুর পৌর আওয়ামী লীগেরও সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসির উদ্দীন আহমেদ, সভা সঞ্চালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম মোহাম্মদ দুলাল পাটোয়ারী। বর্ধিত সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, শিক্ষামন্ত্রী ডাক্তার দীপু মনি, চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ডক্টর সেলিম মাহমুদ, সংসদ সদস্য মেজর অবসরপ্রাপ্ত রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, মুহাম্মদ শফিকুর রহমান ও নুরুল আমিন রুহুল। জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দসহ সহযোগী সংগঠনের নেতারা সভায় অংশ নেন।
আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন জানান, প্রায় ৪ ঘণ্টব্যাপী আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় বিভিন্ন সাংগঠনিক সংকট ও তার সমাধান নিয়ে আলোচনা হয়। শনিবার অনুষ্ঠিত তৃণমূল প্রতিনিধি সভায় যেসব সংকট উঠে এসেছে, সেগুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের বক্তব্য শোনা হয়েছে। এরপর আমরা বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ৭ অক্টোবর মতলব দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে সভাপতি মারা যাওয়ায় শূন্য পদে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে পারে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চলমান থাকায় কচুয়া, ফরিদগঞ্জ ও মতলব উত্তর উপজেলার সাংগঠনিক সংকট সমাধানের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পর স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের নিয়ে আমরা ঢাকায় পৃথক পৃথক ভাবে বসবো। আশাকরছি সেখানে সব সমস্যা সমাধান হবে। এরপর এসব উপজেলার ওয়ার্ড থেকে সম্মেলন শুরু করে ইউনিয়ন সম্মেলন করার পর উপজেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া নভেম্বরে চাঁদপুর পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। তার আগে পৌর আওয়ামী লীগের যেসব ওয়ার্ডে কাউন্সিল হয়েছে। সেগুলো নিয়ে কিছু অভিযোগ আছে। সেই অভিযোগগুলোর সমাধানের জন্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি টিম করা হয়েছে। তারা আমাদেরকে রিপোর্ট দেবেন সময়ের মধ্যে। এর পরেই আমরা পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলন আয়োজন করব। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ইউনিয়নগুলোর সম্মেলন হয়েছে। এসব নিয়ে কিছু অভিযোগ আছে। কারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে সেই তালিকাগুলো আমাদেরকে দেওয়া হবে। ইউপি নির্বাচনের পর চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করা হবে। এছাড়া সহযোগী সংগঠন যেগুলো মেয়াদ উত্তীর্ণ আছে তাদেরকে দ্রুত সম্মেলন করে ফেলার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।