বীরের জাতি বাঙালি কখনো অন্যায়ের কাছে মাথানত করে না বলে মন্তব্য করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, এক সুভাষচন্দ্র বসু ভারতের প্রেক্ষাপটে স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন কিন্তু তিনি সফল হতে পারেননি। আর এক বীর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা ও লড়াই করে সফল হয়েছেন।
রোববার (১০ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জাতীয় নাগরিক ফোরামের উদ্যোগে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের চেতনা, জুলাই গণঅভ্যুত্থান প্রেক্ষিত আজকের বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ১৯৭২ থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত শেখ মুজিবুর রহমান সব দলকে নিষিদ্ধ করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু করেন। সব পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে মাত্র চারটি পত্রিকা খোলা রাখেন। এরই প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে ১৫ আগস্ট। এরপরে সাত নভেম্বর।
তিনি আরও বলেন, ৭ নভেম্বর সম্পর্কে যারা পত্রপত্রিকায় পড়েছে কিন্তু স্বচক্ষে দেখেনি তারা পুরোপুরি ইতিহাস জানতে পারেনি। তিন নভেম্বর খালেদ মোশাররফ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে বন্দী করে। ৭ নভেম্বর সিপাহী জনতা তাকে মুক্ত করে। একজন স্বাধীনতার ঘোষক এতটা জনপ্রিয় যে তাকে বন্দি থেকে বের করে কাঁধে তুলে নিয়েছিল সাধারণ জনগণ ও সিপাহীরা। ৭ নভেম্বর বাংলাদেশের ভাগ্য নির্ধারণ হয়েছে।
বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, দেশ স্বাধীনের জন্য, দেশের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে আমরা যে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম। সেই স্বাধীনতা, গণতন্ত্র নিজের হাত দিয়ে কবরস্থ করেছিল শেখ মুজিবুর রহমান। রক্ষীবাহিনী দিয়ে প্রায় ৪০ হাজারের ওপরে বিরোধী দলীয় নেতাকে হত্যা করেছে। গুম, খুন তখনই শুরু হয়েছে। ১৯৭৩ সালে নির্বাচনী ব্যবস্থা একেবারে ধ্বংস করে ফেলেছিল। দুর্ভিক্ষ হয়ে পথে-ঘাটে লাখ লাখ মানুষ মারা গেছে। শেখ হাসিনা তার বাবার আমলকে ভুলানোর জন্য সংবিধানে বিশেষ আইন তৈরি করেছেন। এবং এদেশের শিশু-কিশোরদেরকে ভুল ইতিহাস শিক্ষা দিয়েছে।
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, এদেশের মানুষ দীর্ঘ ১৬ বছর লড়াই সংগ্রাম করেছে। কত মায়ের বুক খালি হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ এখনও নিখোঁজ। দীর্ঘ ১৬ বছর লড়াই সংগ্রামের পর দেশের জনগণ সফল হয়েছে। তবে যতদিন না মানুষের ভোটের অধিকার, গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে না পারবো, ততদিন পর্যন্ত গণতান্ত্রিক আন্দোলন শেষ হয়েছে এটা বলা যাবে না।
তিনি বলেন, যারা গণতন্ত্র, নির্বাচন আড়াল করতে চায় তারা পক্ষান্তরে ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে চিহ্নিত হবে। চারদিকে ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্রে পা দেওয়া যাবে না। ধৈর্যের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে তৈরি থাকতে হবে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিচক্ষণতার সাথে বলেছেন এই সরকারের ব্যর্থ হওয়ার কোন সুযোগ নেই। এজন্যে এই সরকারকে আমরা সহযোগিতা করছি। এবং এই সরকারের মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর আগ পর্যন্ত আমাদেরকে তৈরি থাকতে হবে।
জাতীয় নাগরিক ফোরামের চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জাসাসের সাবেক সভাপতি রেজাবুদ্দোলা, সহ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আমিন্দ দাস অপু, কৃষক দল নেতা এসকে সাদী, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন সহ প্রমুখ।