দেশে অদ্ভুত শাসন বিরাজ করছে: রিজভী

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

বাংলাদেশে এক অদ্ভুত শাসন বিরাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর পল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

রিজভী বলেন, দেশে এমন এক দুঃশাসন চলছে যেখানে এক ব্যক্তির ইচ্ছায় আদালতের কার্যক্রম চলে। এখানে ন্যায়বিচার, বিধিবদ্ধ আইনি প্রক্রিয়ায় কোন কাজ হয় না। সকল মামলায় জামিন পাওয়ার পরেও এবং আর কোন মামলা দায়ের না করার উচ্চ আদালতের নির্দেশনা সত্বেও যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্নাকে মুক্তি দেয়া হয়নি।

ইতিপূর্বে নানাভাবে তাকে আটকিয়ে রাখার যে বেআইনি কার্যক্রম দেশব্যাপী প্রত্যক্ষ করা হয়েছে তা নজিরবিহীন। হাইকোর্টের নির্দেশনা অমান্য করে ব্যাক ডেট দিয়ে পেন্ডিং মামলায় মুন্নাকে আটকিয়ে রাখার পর আবারও উচ্চ আদালতে রিট করলে তাকে মুক্তির নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু সেই নির্দেশনাকে অগ্রাহ্য করা হয়েছে। এক্ষেত্রে জেল কতৃর্পক্ষ নীরব। আব্দুল মোনায়েম মুন্না এ মূহুর্তে সকল মামলা থেকে জামিনপ্রাপ্ত। অথচ তাকে কারাগার থেকে বের হতে দিচ্ছে না জেল কতৃর্পক্ষ। তারা বলছে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেটর কাছ থেকে মুক্তির নির্দেশনা না পেলে মুন্নাকে ছাড়বে না। এই ঘটনা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। দেশে মানুষের নির্বিঘ্নে চলাচলের স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ নাগরিক স্বাধীনতা এখন শেখ হাসিনার আঁচলবন্দী বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই সিনিয়র নেতা।

বিজ্ঞাপন

পুলিশ ও আদালত এ ক্ষেত্রে আইনের শাসনের বদলে শেখ হাসিনার চোখ রাঙানিকেই আমলে নিচ্ছে। শেখ হাসিনার চেতনার স্তরে বিরোধী দল নিশ্চিহ্ন করা ছাড়া আর কিছু নেই।

আব্দুল মোনায়েম মুন্নাসহ সকল রাজবন্দীর মুক্তির জন্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাসহ সকল মানবাধিকার সংগঠনকে উদ্দাত্ত আহবান জানান রুহুল কবির রিজভী।

গণতন্ত্রের পক্ষে তরুণদের যে ঢল নেমেছে তাতে স্নায়ুবিক প্রতিক্রিয়ায় বিহব্বল শেখ হাসিনা। এতে তিনি স্বৈরতন্ত্রের ক্রমোন্নতির ক্রমাগত বিকাশ ঘটাতে আরও মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এখন চলছে নানা রকমের উদ্দেশ্য ও অভিসন্ধি। অবৈধ আওয়ামী সরকারের আদালত তাই উঠে পড়ে লেগেছে বিএনপি নেতাদের সাজা দিতে। নতুন নতুন মিথ্যা মামলা ও গ্রেফতারের প্রবাহ আটকে নেই। কারাবন্দী নেতাদেরকে দীর্ঘদিন কারাগারে আটকিয়ে রাখার জন্য প্রহসনের আইনি প্রক্রিয়াও তারা আর অবলম্বন করছেন না। এখন গায়ের জোরেই বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাদেরকে কারাগারে আটকিয়ে রাখা হচ্ছে। গ্রেফতারসহ রিমান্ডের নামে উৎপীড়ণ এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের কপালের লিখন হয়ে গেছে।

আওয়ামী লীগ বহুদলীয় গণতন্ত্রের মূল্যবোধ ও নীতিকে সমাধিস্থ করে নব্য বাকশালী কতৃর্ত্ববাদের নতুন আদর্শ, নতুন ভাবধারা, নতুন রুচি ও নীতি প্রতিষ্ঠিত করেছে। যার বাস্তব প্রতিফলন আমরা প্রতি মূহুর্তেই অবলোকন করছি। যেমন উচ্চ আদালতের বিচারপতি বলেন, ‘আমরা শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ’। গণতন্ত্রের মহান আদর্শ, জীবনের মহান সত্যের পদধ্বণি ওরা শুনতে পাচ্ছে না।

বর্তমানে দেশব্যাপী আবারও একতরফা নির্বাচন করতে পুলিশের পাশাপাশি আদালতকে গণতন্ত্রকামী মানুষের বিরুদ্ধে স্বৈরশাসকের পৈশাচিক প্রবৃত্তির লীলাকেন্দ্র করা হয়েছে।

ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের ক্ষমতায় থাকার দিগন্তবিস্তৃত লালসা পূরণের সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করছেন আদালতের বিচারকরা। তাই শেখ হাসিনার একতরফা নির্বাচন নিয়ে দাম্ভিক স্বার্থপরতার পক্ষে বিচারকরা কাজ করছেন এবং সেজন্য তারা অত্যন্ত আন্তরিকতা সহকারে জোরেশোরে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু নেতাকর্মীকে সাজানো মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। সাক্ষীদেরকে শিখিয়ে পড়িয়ে তাদের জবানবন্দী নেওয়া হচ্ছে। সাক্ষীরা সাক্ষী দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে তাদেরকে পুলিশ দিয়ে উঠিয়ে এনে জোর করে সাক্ষী দেওয়া হচ্ছে।