দেশে ইসলামী শ্রমনীতি না থাকায় দেশের শ্রমিক সমাজ অধিকার হারা বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, শ্রমিক সমাজের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দেশে ইসলামী শ্রমনীতি চালুর কোন বিকল্প নেই।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর কাফরুলে ইব্রাহিমপুর ঈদগাহ রোডে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের কাফরুল দক্ষিণ থানা আয়োজিত শ্রমজীবী দাওয়াতি সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. রেজাউল করিম বলেন, দেশের শ্রমিক সমাজই জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতির ক্ষেত্রে সব সময় অগ্রসৈনিকের ভূমিকা পালন করেছেন। কিন্তু তারা একবিংশ শতাব্দীতে এসেও অবহেলিত ও অধিকার বঞ্চিত। তাদেরকে তাদের প্রাপ্য ও ন্যায্য অধিকার দেওয়া হয় না। মূলত, দেশে ইসলামী শ্রমনীতি না থাকায় দেশের শ্রমিক সমাজ আজও অধিকার হারা। তাই শ্রমিক সমাজের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দেশে ইসলামী শ্রমনীতি চালুর কোন বিকল্প নেই।
তিনি দেশকে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে শ্রমিক সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানান। অন্যথায় শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায় করা সম্ভব হবে না।
তিনি বলেন, দেশকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে এবং সকল প্রকার আন্দোলন সংগ্রামে দেশের শ্রমিক সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। মূলত, শ্রমিক সমাজ দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। আর মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে প্রীতির সম্পর্ক দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে পারে। তাই এ বিষয়ে উভয় পক্ষকে সতর্ক থাকতে হবে। কোন অপশক্তি যাতে উভয় পক্ষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করা দরকার। মালিক পক্ষকে অবশ্যই শ্রমজীবী মানুষের অধিকারের বিষয়ে সুদৃষ্টি দেওয়া জরুরি। তাদেরকে শ্রমিক না মনে করে ব্যবসা সহযোগী মনে করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠা সম্ভব। রাসূল (সা.) শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকানোর আগেই তাদের পারিশ্রমিক পরিশোধ করতে বলেছেন। তাই বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ করতে চাইলে শ্রমিকদেরকে যথাযথ মর্যাদা প্রদান করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে লস্কর মোহাম্মদ তসলিম বলেন, আওয়ামী-বাকশালীরা আমাদের সব রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা দেশকে অপরাধ ও অপরাধীদের অভয়ারণে পরিণত করেছে। বিগত সাড় ১৫ বছরের শাসনামলে দেশের মানুষকে তাদের সাংবিধানিক ও মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
এইচ এম আতিকুর রহমান বলেন, বাকশালীরা জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়ে দেশকে এক মাফিয়াতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। কিন্তু আওয়ামী-ফ্যাসিবাদীদের শেষ রক্ষা হয়নি বরং ছাত্র-জনতার যুগপৎ আন্দোলনের মাধ্যমে তাদেরকে ক্ষমতা থেকে লজ্জাজনকভাবে বিদায় নিতে হয়েছে।
ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য ও থানা আমির উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক আনোয়ারুল করিমের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি আবু নাহিদের পরিচালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহ-সভাপতি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি এইচ এম আতিকুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন থানা নায়েবে আমির নাজমুল হাসান খান, মুফতি মাসুদুর রহমান, থানা কর্মপরিষদ সদস্য বোরহান আলী, শামসুর রহমান খান, সেলিম উদ্দিন খলিফা ও ওয়াহিদুর রহমান তপন প্রমূখ। সভায় সসাস ও সন্দিপনের শিল্পীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।