বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার লেজ রয়ে গেছে। ভারতে বসে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে। এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে, বিএনপি কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে, ক্ষতিগ্রস্ত হবে সমগ্র দেশ ও দেশের মানুষ।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা’ ও জনসম্পৃক্তি বিভাগীয় কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। সকাল ১০টায় শুরু হওয়া কর্মশালাটি শেষ হয় সন্ধ্যা সোয়া ৫টায়।
দেশের অর্থ পাচার প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, যারা লুটপাট করে অর্থ পাচার করেছে, আশপাশের যেসব দেশগুলো নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছে তারা এখনো বসে নেই। এখনো ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। গণতান্ত্রিক পুণঃপ্রতিষ্ঠিত হলে এসব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়া সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, চলার পথে গণতন্ত্র অনেক সময় বাধাগ্রস্থ হয়। গণতন্ত্র পুণরুদ্ধারে ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে বিএনপি আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে। এতে অনেক নেতা গুম-খুনের শিকার হয়েছেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, নির্বাচিত সরকারের জবাবদিহিতা থাকতে হবে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করা হবে। জুলাই-আগস্টের শহীদদের তালিকা করা হবে। বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জনগণের আস্থা ধরে রাখতে হবে। দলীয় কর্মকান্ড দেখে যাতে বিএনপির প্রতি জনগণের আস্থা-ভরসা আরও বাড়ে। রাষ্ট্র মেরামতে বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে নেতাকর্মীদের সাধারণ মানুষের দ্বারে দ্বারে যেতে হবে।
তারেক রহমান বলেন, আজকে দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। দল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশ ও দেশের গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই আসুন আমরা মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী নিজেদেরকে গড়ে তোলার চেষ্টা করি।পলাতক স্বৈরাচারের অত্যাচার ও নির্যাতন সহ্য করে যারা টিকে আছেন তারা আগামীতেও টিকে থাকবেন বলে আমি মনে করি।
বিএনপির শীর্ষ নেতা জোর দিয়ে বলেন, আমাদেরকে গণতন্ত্রের পক্ষে থাকতে হবে, গণতন্ত্রকে চালু রাখতে হবে। যেখানে যেটাই নির্বাচন হউক সেটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াতে হতে হবে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেনের পরিচালনায় কর্মশালায় প্রধান প্রশিক্ষক ছিলেন বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ডা. অধ্যাপক মওদুদ হোসেন পাভেল।
দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রশিক্ষণ প্রদানকালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য এম. নাসের রহমান ও সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীসহ কয়েকজন ৩১ দফা কর্মসূচির উপর বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
প্রশিক্ষণে প্যানেল আলোচক ছিলেন-ডা. মওদুদ আলমগীর, বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ডা. মহিউদ্দিন আলমগীর পাবেল, কৃষক দলের যুগগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবা হাবিবা, সহ ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট নেওয়াজ হালিমা আর্লি, সহপ্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু।
কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খন্দকার আনিসুর রহমান তালুকদার, নির্বাহী কমিটির সদস্য (দপ্তরের দায়িত্বে) আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন ও মিফতাহ্ সিদ্দিকী।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য তাহসিনা রুশদির লুনা, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির ও ড. এনামুল হক চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, সহ সম্পাদক শাম্মী আক্তার ও আব্দুর রাজ্জাক, নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, মিজানুর রহমান চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহবান ফজলুল হক ময়ুন, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নজিবুর রহমান নজিব।