বিএনপির প্রধান কার্যালয়ের অসহায় চিঠিগুলোর খবর কেউ নিলো না
২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ও পরবর্তী সময়ে হরতাল-অবরোধে রাজধানীর নয়াপল্টনে ভিআইপি রোড ঘেঁষা ২৮/১ নম্বরের বাড়িটি ৬ তলা ভবন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)'র কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ অঙ্গ সংগঠনেরও কার্যালয়। দেশের অন্যতম বড় এ রাজনৈতিক দলের প্রধান কার্যালয়জুড়ে ঝুলছে দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ও বিভিন্ন নেতার মুক্তির দাবির অসংখ্য ব্যানার।
তবে গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ও পরবর্তী সময়ে হরতাল-অবরোধে কেন্দ্রীয় কার্যালয়টিতে নেতাকর্মীদের সশরীরে উপস্থিতি নেই।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় নির্বাচন কমিশনের প্রধান কাজী হাবিবুল আউয়াল জাতির উদ্দেশ্যে এক ভাষণ শেষে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেছেন। নির্বাচনী এই প্রস্তুতির প্রথম ধাপের ঘোষণার সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা আনন্দ মিছিল করেছেন। বাদ যায়নি নয়াপল্টনের এই সড়কও। কিন্তু সম্পূর্ণ বিপরীত এক চিত্রের দেখা মিলল বিএনপির প্রধান কার্যালয়ে।
৬ তলা ভবনের প্রতিটি কোনায় কোনায় নেতা-কর্মীদের আনাগোনায় মুখোরিত থাকার কথা থাকলেও পুরো ভবনজুড়ে অন্ধকার আর নীরাবতা। ভবনের ভেতর বাহির কোথাও আলোর দেখা নেই। বহু আনন্দময় ঘটনা, রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষমতা আর নির্বাচনী প্রস্তুতির সাক্ষী কার্যালয়টি নিজেই যেনো একা। ভবনজুড়ে স্মৃতি আর শূন্যতা। অতীত রোমন্থন করার কেউ নেই। ভবনের প্রধান ফটকে ৪ থেকে ৫ ফুটের কেচি গেটটিতে ঝুলছে একাধিক তালা। গেটের সামনে রাখা নীল রঙের তিনটি চেয়ার। তার ওপরে কয়েকটি চিঠি। যার মধ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে দাওয়াত দিয়ে পাঠানো চিঠিটিও রয়েছে।
চেয়ার আর চিঠির খামগুলো ধুলার আস্তরে একাকার। প্রতিষ্ঠার পর একাধিকবার দেশে সরকার চালানো দলটির ঠিকানায় আসা চিঠিগুলো তুলে নেওয়ার কেউই নেই। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলেও পক্ষে বিপক্ষে নেই কোনো ব্যস্ততা। বড় নেতার আগমন নেই। নেতা-কর্মীদের স্লোগান নেই। আছে শুধু বন্ধ কার্যালয় ঘিরে পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৮টার দিকে দেখা যায়, ২৮/১ নম্বর ভবনজুড়ে শুধুই অন্ধকার। কেউ সন্ধ্যা বাতিটিও জ্বালায়নি। গেটের বাইরে রাস্তাজুড়ে পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা আর গণমাধ্যম কর্মীদের ব্যস্ততা। কার্যালয়ে কেউ না থাকলেও হয় তো তৃণমূলের নেতাকর্মীরা চেয়ে আছে বন্ধ কার্যালয়টির দিকেই।