এত কাছে তবুও কত দূরে



তাসনীম হাসান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবিঃ বার্তা২৪.কম

ছবিঃ বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

পাশাপাশি তিনটি চেয়ার। সেই তিন চেয়ারে বসে আছেন তিন প্রার্থী। একেবারে গা ছোঁয়া দূরত্ব। কিন্তু কারও সঙ্গে কারও কথা নেই। উল্টো চলছে ‘বাকযুদ্ধ’। এই ‘যুদ্ধ’ এক প্রার্থীর হয়ে অন্য প্রার্থীর মনোনয়নপত্রের খুঁত বের করার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জোট বেধেঁও দুজন হারাতে পারলেন না একজনকে!

এত কাছে তবুও কত দূরের এই ‘গল্পটি’ চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে চট্টগ্রাম-১৫ (লোহাগাড়া-সাতকানিয়া) আসনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সময়কার।

সোমবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা ধরে সেখানে চলতে থাকে পক্ষে-বিপক্ষে নানা যুক্তিতর্ক। এই তিন প্রার্থী হলেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মোতালেব এবং দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ডা. আ.ম.ম মিনহাজুর রহমান।

২০১৪ সালে সংসদ সদস্য হওয়ার আগে আওয়ামী লীগের কেউ ছিলেন না আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী। সেজন্য নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে টানা দুটি নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও এখনও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ‘আস্থা’ অর্জন করতে পারেননি তিনি। এবার তাই নদভীকে ঠেকাতে একাট্টা হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা। বেশ কয়েকজন নেতা দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন। এরপরেও নদভীর ওপরেই আস্থা রাখে আওয়ামী লীগ। তবে এ আসনে এম এ মোতালেব ও ডা. আ.ম.ম মিনহাজুর রহমান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন।

পৃথকভাবে প্রার্থী হলেও মোতালেব এবং মিনহাজুর একসঙ্গেই নানা কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন। তবে নদভীর শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মোতালেবকেইে এগিয়ে রাখছিলেন সবাই। মাঠেও এর আভাষ পাওয়া যাচ্ছিল। গত কয়েকদিনে নদভীর সমর্থকদের হাতে মোতালেবের সমর্থকেরা হামলার শিকার হয়েছেন। মোতালেবের বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিলও করেছেন নদভীর সমর্থকেরা। এই ঘটনায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগও করেন মোতালেব। সেজন্য মনোনয়ন যাচাইয়ের সময় নদভী ও মোতালেব কি করেন সেদিকে সবার নজর ছিল।

সোমবার (৪ ডিসেম্বর) ছিল মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের শেষদিন। এইদিন বিকেল তিনটায় শুরু হয় চট্টগ্রাম-১৫ আসনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই। এই নিয়ে দুই পক্ষই বেশ প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিল। বিশেষ করে নদভী সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন বিশাল আইনজীবী প্যানেল। নগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এবং চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরীর নেতৃত্বে এই প্যানেলে ছিলেন অন্তত ১২ জন আইনজীবী। অন্যদিকে মোতালেবের সঙ্গে ছিলেন দুজন আইনজীবী।

শুরুতে মোতালেবের দুজন আইনজীবী নদভীর জমা দেওয়া মনোনয়নপত্রের নানা খুঁত বের করেন। তাঁরা নদভীর ৯০ ভরি সোনার দাম শুধু আড়াই লাখ টাকা উল্লেখ করা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্রে নদভী ৫০ ভরি স্বর্ণের কথা উল্লেখ করেছিলেন। অর্থাৎ গত পাঁচ বছরে তিনি অতিরিক্ত আরও ৪০ ভরি স্বর্ণ অর্জন করেছেন। কিন্তু সেই তুলনায় স্বর্ণের দাম কোনোভাবেই আড়াই লাখ টাকা হওয়ার সুযোগ নেই বলে দাবি করেন মোতালেবের আইনজীবীরা।

এরপর ডা. আ.ম.ম মিনহাজুর রহমান একটি পত্রিকায় নদভীর হলফনামা নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বরাতে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম থেকে সম্মানি ও ভাতা নেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন। পাশাপাশি দ্বাদশ নির্বাচন পরিচালনা ম্যানুয়েলের বরাতে বিদেশি অনুদান থেকে সম্মানি নেওয়ার বিষয়টি সাংঘর্ষিক বলে উল্লেখ করেন। তবে এই দাবির বিপরীতে পাল্টা যুক্তি দেখান নদভীর আইনজীবীরা। এভাবে চলতে থাকে পক্ষে-বিপক্ষে নানা যুক্তি। তবে শেষ পর্যন্ত যুক্তিতে জয় হয় নদভীরই। জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান নদভীর পক্ষেই ‘রায়’ দেন। জানান, সব কাগজপত্র বিবেচনা করে নদভীর মনোনয়নটি সঠিক বিবেচিত হয়েছে।

এরপর শুরু হয় মোতালেবের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই। তাঁর ১ শতাংশ সমর্থক তালিকা থেকে দ্বৈবচয়নের মাধ্যমে নির্বাচিত করা ১০ জনের মধ্যে দুজনকে নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জেলা প্রশাসক। স্থানীয় সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা যাচাইকালে ওই দুজন মোতালেবের পক্ষে স্বাক্ষর করেননি বলে জানান তিনি। তবে মোতালেব ওই দুই সমর্থককে সেখানে হাজির করলে জেলা প্রশাসক দুজনের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) যাচাই করার উদ্যোগ নেন। কিন্তু এই পর্যায়ে নদভীর আইনজীবীরা প্রশ্ন তোলেন। তারা বলেন, যে বিষয়টি সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা দ্বারা যাচাইয়ের সময় মিমাংসিত হয়েছে সেটা এখানে আবার নতুন করে তোলার সুযোগ নেই। এ যুক্তির পর জেলা প্রশাসক শেষ পর্যন্ত মোতালেবকে নির্বাচন কমিশনারের কাছে আপিলের পরামর্শ দিয়ে তাঁর মনোনয়নপত্রটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়ে দেন।

এরপর মিনহাজুরের মনোনয়নপত্রেও ওই এক শতাংশ সমর্থক নিয়ে প্রশ্ন উঠে। দ্বৈবচয়নের মাধ্যমে নির্বাচন করা ১০ সমর্থকের মধ্যে ৭ জনের বিষয়েই ভুল তথ্য উপস্থাপন করার কথা বলেন জেলা প্রশাসক। একই সময়ে নদভীর আইনজীবীরাও সৈয়দুল হক নামের একজনকে মোতালেব ও মিনহাজুর দুজনেই সমর্থক হিসেবে দেখিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন। কিন্তু এই বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি মিনহাজুর। শেষ পর্যন্ত তাঁর মনোনয়নটিও বাতিল করা হয়।

পুরো সময় নির্ভার দেখা গেছে আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভীকে। মূলত তাঁর হয়ে আইনজীবীরাই যুক্তিতর্ক করে যান। আর একসঙ্গে নদভীর ৪-৫ জন আইনজীবীর যুক্তিতর্কের সামনে মোতালেবের দুই আইনজীবী কিছুটা অস্বস্তিতে ছিলেন। সে কারণে নদভীকে সেভাবে পাল্টা কিছুই বলতে হয়নি।

মনোনয়নপত্র যাচাইবাছাই শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ও নদভী বলেন, ‘সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার মানুষ আমার সঙ্গেই আছেন। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে আমাকেই তাঁরা বিজয়ী করবেন।’

অন্যদিকে মনোনয়নপত্র বাতিল হলেও হাল ছাড়ছেন না এম এ মোতালেব। জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনে আপিল করবেন এবং আপিল শেষে তিনি মনোনয়নপত্র ফিরে পাবেন।

মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সময় নদভী ও মোতালেব-মিনহাজুর ‘লড়াই’ দেখা অনেকে বলছেন, ‘নদভী ঠাণ্ডা মাথার খেলোয়াড়। বরাবরের মতো এবারও তিনি পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে আইনজীবীদের নামিয়ে দিয়েছেন। নদভীর এই খেলায় অন্য প্রার্থীরা কিছুটা পিছিয়ে পড়েছেন। সেজন্য নদভীর বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগগুলো সেভাবে হালে পানি পায়নি। উল্টো অন্য প্রার্থীরা হয়েছেন কোনঠাসা।’

বিএনপি-জামায়াতের তাণ্ডবে অনেক নিরীহ মানুষ মারা গেছে: কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বিএনপি-জামায়াতের তাণ্ডবে অনেক নিরীহ মানুষ মারা গেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা জানতে চেয়ে প্রশ্ন করলে কাদের বলেন, ‘আমরা মৃত্যুর তালিকা..পত্র-পত্রিকায় দু’শোর মতো বা দু’শো চেয়ে একটু বেশি। আমরা এটার খোঁজ খবর নিচ্ছি। অনেক জায়গায়.. জাহাঙ্গীরের (গাজীপুরের সাবেক মেয়র) সঙ্গে জুয়েল নামে একটি ছেলে সবসময় থাকত, তাকে উত্তরায় মেরে লাশ লটকিয়ে রাখা হয়েছে। কি বর্বর, নৃশংসতা। পুলিশকে মেরে ঝুঁলিয়ে রাখা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘অনেক নিরহ মানুষ মারা গেছে। জানালায় দিয়ে বাইরের দৃশ্যপট দেখতেছিল..বাচ্চা যখন তাকালো, সেই বাচ্চা গুলি খেয়ে মারা গেল। তারপরে এ ধরণের ঘটনা আরও অনেক ঘটেছে। রাস্তায় বেরিয়েছে, নিষ্পাপ, নির্বোধ শিশু, কিছুক্ষণ পর দেখা গেল সেও লাশ হয়ে পড়েছিল। এরকম ঘটনা অনেক আছে। এগুলো জামায়াত-শিবিরের তান্ডব। আমরা খোঁজ-খবর নিচ্ছি। সময়মতো সাংবাদিকেরাও নিচ্ছেন। সব সত্য বেরিয়ে আসবে।’

আপনি বলেছেন অনেকেই রাস্তায় বের হয়ে, জানালা দিয়ে দেখার সময় গুলি খেয়ে মারা গেছে। মৃতদের বেশিরভাগই গানশর্টে মারা গেছে। তাহলে আপনি কি বলেছেন জামায়াত-শিবিরের হাতে অস্ত্র ছিল। থাকলে সেই অস্ত্র কি উদ্ধার করা হয়েছে?  সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, ‘জামায়াত-শিবিরের হাতে অস্ত্র ছিল। কিছু অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। এখনো চলছে (উদ্ধার অভিযান)। উদ্ধার হবেই। এদের নির্দেশ দাতা ও হোতারা কিন্তু গ্রেপ্তার হয়েছে। রিমান্ডে আছে। অনেক সত্য বেরিয়ে আসবে।’  

এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘আমরাতো রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করছি। প্রশাসনিকভাবে মোকাবিলা করছি। আপনাদেরও আমরা সহযোগিতা চায়। এ অপশক্তি সকলেরই শত্রু। সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলব।’

কাদের বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে যখন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্রে নৈরাজ্য-নাশকতার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। নির্দেশদাতা ও অর্থদাতাদের পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে। মির্জা ফখরুল..থলের বিড়াল বের হতে শুরু করছে। তখন তিনি আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি করছেন। তারা সবসময় জনগণের আস্থা না রেখে বিদেশী প্রভুদের উপর ভর করে রাজনীতি করে। এক্ষেত্রেও তাদের সন্ত্রাসী চরিত্র উম্মোচিত হওয়া থেকে দায়মুক্তির জন্য বিদেশী হস্তক্ষেপের দাবি করছে।’

বিএনপি-জামায়াত-উগ্রবামপন্থী-জঙ্গিগোষ্ঠি কুচক্রি মহল এখনো সক্রিয় আছে বলে দাবি করে কাদের বলেন, ‘তাদের প্রশিক্ষিত ক্যাডাররা চোরাগোপ্তা হামলা চালাতে প্রস্তুত হচ্ছে বলে আমাদের কাছে খবর আছে। তারা আবারও বিভিন্নভাবে হামলা চালাতে পারে। দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান যেখানে অস্ত্রধারী ক্যাডারদের খোঁজ পাবেন, তাদের তথ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে সহযোগিতা করবেন ।’

নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত, ছাত্রদল-শিবির, জঙ্গিগোষ্ঠির সন্ত্রাসীরা আর যাতে সহিংসতা ছড়াতে না পারে সে জন্য সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।’ এছাড়া নেতাকর্মীদের কারফিউ মেনে চলার অনুরোধ করেন কাদের।

;

অরাজকতা রুখতে মাঠে ছিলাম-আছি-থাকবো: লিটন



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন

  • Font increase
  • Font Decrease

জনগণের জানমাল রক্ষার্থে ও যে কোনো অরাজকতা রুখতে আমরা মাঠে ছিলাম, এখনো আছি ও ভবিষ্যতেও থাকবো বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) বাদ জুম্মা রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার বড় মসজিদে আয়োজিত দোয়া ও মোনাজাতে অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজশাহী মহানগরীরের সকল মসজিদে এই দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

সম্প্রতি সারাদেশে বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতায় নিহত শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ যারা প্রাণ হারিয়েছে তাদের আত্মার মাগফেরাত এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করা হয়।

এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আমরা শুরু থেকে লক্ষ্য রাখছিলাম। আমাদের কাছে মনেই হচ্ছিলো, এটা হয়তো ভিন্নখাতে প্রবাহিত হবে এবং কয়েকদিন যেতে না যেতেই সেটা প্রমাণিত হতে শুরু করলো। তখন থেকে আমরা সতর্ক হয়ে যাই এবং রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরে নেতাকর্মীদের নিয়ে আমরা রাজপথে থাকি। জনগণের জানমাল রক্ষার্থে ও যাতে কেউ অরাজকতা করতে না পারে সেজন্য আমরা মাঠে ছিলাম। আমরা এতে সফল হয়েছি। রাজশাহীর শান্তিপ্রিয় মানুষ আমাদের সমর্থন দিয়েছেন, সাধুবাদ জানিয়েছেন।

মেয়র লিটন বলেন, বিছিন্নভাবে আমাদের ওপর হামলা করার চেষ্টা করা হয়নি; তা নয়, বিভিন্ন অলি-গলি থেকে হামলার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু জনগণকে সাথে নিয়ে আমাদের সম্মিলিত প্রতিরোধের মুখে তারা সরে যেতে বাধ্য হয়েছে। আমাদের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে ছিলেন। আমরা মাঠে আছি, সেভাবে আমরা এ পর্যন্ত রাজশাহীকে নিরাপদ রেখেছি। জনজীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। কারফিউ উঠে হলে আরো স্বাভাবিক হবে।

এরআগে সাহেববাজার বড় মসজিদে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে পবিত্র জুম্মার নামাজ আদায় করেন রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। জুম্মার নামাজ শেষে দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন তিনি। এরপর দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে কুমারপাড়াস্থ মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে যান এবং সেখানে অবস্থান নেন।

কর্মসূচিতে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, ডা. তবিবুর রহমান শেখ, নাইমুল হুদা রানা, সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, সাংগঠনিক এ্যাড. আসলাম সরকারসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

;

‘শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা সকল স্বৈরাচারের নির্মম নিষ্ঠুরতাকেও হার মানিয়েছে’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর সরকারদলীয় সন্ত্রাসী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে হামলা চালিয়ে ইতিহাসে হতাহতের যে বর্বরোচিত নজীর স্থাপন করেছে তা দেশ-বিদেশের সকল স্বৈরাচারের নির্মম নিষ্ঠুরতাকেও হার মানিয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন তিনি।

সাধারণ মানুষকে গ্রেফতার, কারান্তরীণ ও জুলুম-নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অবৈধ সরকার নিজেদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও ব্যর্থতা আড়াল করতে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে গ্রেফতার করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, বরিশাল মহানগর বিএনপি’র সদস্য সচিব এ্যাডভোকেট জিয়াউদ্দিন সিকদার, নাটোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজকে গ্রেফতার এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র গ্রেফতারকৃত সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব মোশাররফ হোসেন খোকনকে ৩ দিন পর আদালতে তোলা হয়েছে। অব্যাহত গতিতে দেশব্যাপী বিরোধী দলের নেতাকর্মী বাড়ি বাড়ি তল্লাশি হচ্ছে, বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুর বাসাসহ অনেক সিনিয়র নেতৃবৃন্দের বাসায় তল্লাশি চালাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “গ্রেফতারকৃত নেতৃবৃন্দকে গুম করে রেখে নির্যাতন চালিয়ে তিন/চার কিংবা পাঁচ দিন পর আদালতে হাজির করা হচ্ছে যা আইন ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। দেশের নাগরিকদেরকে গুম করে রাখার ভয়াবহ সংস্কৃতি চালু রেখে মানুষের মনে ভীতি সঞ্চার করা হচ্ছে। সরকারকে এ ধরণের লোমহর্ষক কর্মকাণ্ড পরিহারের আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, একটি স্বাধীন দেশে সরকারের দায়িত্ব হলো-রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া, গত কিছুদিন যাবত কোটা সংস্কার আন্দোলনে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা যখন যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলনরত তখন সেই মুহূর্তে সরকার প্রধানসহ সরকারি দলের নেতা-মন্ত্রীরা তাদেরকে তাচ্ছিল্য করে আওয়ামী সন্ত্রাসীদেরকে নির্দেশ দেয় তাদেরকে নির্মূল করার। সরকারি দলের সন্ত্রাসী এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যৌথভাবে জনগণের টাকার কেনা গুলি, টিয়ারসেল, রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড শিক্ষার্থীদেরকে লক্ষ্য করে নিক্ষেপের মাধ্যমে শত শত নিরীহ ছাত্র-ছাত্রীকে গণহারে হত্যা এবং হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীকে আহত করেছে যা দেশবাসীসহ বিশ্ববাসী অবলক্ষণ করেছে।

নির্মম অত্যাচারে দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ হতবাক ও ক্ষুদ্ধ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলও একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে নৈতিক সমর্থন দিয়েছে এবং সারা দেশে কর্মসূচীও পালন করেছে। কিন্তু অবৈধ সরকার মরিয়া হয়ে রাষ্ট্রের সকল বাহিনীসহ দলীয় সন্ত্রাসীদেরকে সাধারণ মানুষ, বিএনপি নেতা-কর্মী ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়ে ব্লক রেড দিয়ে গ্রেফতার করছে। এখন পর্যন্ত তাদের হিসাবে প্রায় ৩ হাজার গ্রেফতার করছে। যা জাতির জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও লজ্জার।

তিনি বলেন, ছাত্র জনতার ন্যায় সংগত আন্দোলনকে দমন করার জন্য সেনা বাহিনীকে ব্যবহার কখনই গ্রহণযোগ্য নয়। অবিলম্বে সান্ধ্য আইন প্রত্যাহার এবং সেনা বাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। বরাবরই আওয়ামী লীগ লাশের উপর দিয়ে ক্ষমতায় গিয়েছে এবং ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য গত কয়ক দিন যে পরিমাণ নিরীহ ছাত্র-মানুষকে গুলি চালিয়ে পাখির মতো হত্যা করেছে, গণহত্যা চালিয়েছে তা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর কথাই মনে করিয়ে দেয়।

গত কয়েকদিনে কতজন নিরীহ মানুষকে হত্যা ও পঙ্গু করা হয়েছে জনগণ তার সঠিক পরিসংখ্যান জানতে চায়। এছাড়া জনগণের টাকায় কেনা কি পরিমান গোলাবারুদ, টিয়ার সেল, সাউন্ড গ্রেনেড শিক্ষার্থীদের ওপর ব্যবহার করা হয়েছে তার হিসাবও জনগণ জানতে চায়। রাষ্ট্রের টাকায় কেনা হেলিকপ্টার দিয়ে মানুষ হত্যার জবাব জনগণ একদিন কড়ায়-গন্ডায় আদায় করে নিবে।

সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ কারার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যে সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য নির্মমভাবে নিরীহ মানুষকে হত্যা করতে পারে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও স্থাপনার নিরাপত্তা দিতে পারে না সেই সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোন নৈতিক অধিকার নেই। তাই এই অবৈধ সরকারকে বলবো-অবিলম্বে পদত্যাগ করে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করার লক্ষ্যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা নিন।”

;

বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, বরগুনা
খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ

খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে অসহায় কর্মজীবী মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে বরগুনা জেলা পরিষদ ডাক বাংলো হলরুমে অসহায় কর্মজীবী মানুষের মাঝে এ খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি প্রত্যয় দেব প্রান্ত, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাদুমনি, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য সাইফুল ইসলাম সাগর। ১ নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমন রায়, মো. শাহরিয়ার শুভসহ জেলা ছাত্রলীগের অন্যান্য নেতাকর্মীরা।

খাদ্য সামগ্রী পেয়ে ফরহাদ জানান, দেশের বর্তমান অবস্থা তাতে রিকশা গাড়ি নিয়ে বের হতে পারি না। পরিবার নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় ছিলাম। ছাত্রলীগ আমাকে সরকারের তরফ থেকে যতটুকু দিয়েছে আমি অনেক খুশি, কয়েকদিন পরিবার নিয়ে ভালো চলবে।

হলিমা খাতুন বলেন, আমার ম্বামী অনেক আগেই মারা গেছে। দুই সন্তান, আমি ডেইলি মানুষে বাসায় কাজ করে সংসার চলাই। কয়েক দিন ধরে কাজে যেতে পারছি না। প্রধানমন্ত্রীর উপহারে কিছুদিন চলবে, দেশের পরিস্থিতি ভালো হলে আবার কাজে ফিরবো।

;