কপাল পুড়ল ফিরোজ-বাবলা ও রত্নার
আসন সমঝোতার খেলায় ছিটকে গেলেন জাতীয় পার্টির দুই কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি ও প্রেসিডিয়াম সদস্য রত্না আমিন হাওলাদার এমপি। তিন জনই ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ছাড়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এবারও তারা সমঝোতার আসন পেতে শেষ পর্যন্ত লবিং তদবির চালিয়ে যান। কিন্তু আওয়ামী লীগ যে সব আসনের প্রার্থীদের সরিয়ে নিয়েছে সেই তালিকায় নেই তারা কেউই। জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী কাজী ফিরোজ রশীদ বিগত ২টি নির্বাচনে ঢাকা-৬ আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেন। এবার ওই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী দিয়েছে সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনকে। সমঝোতার আসন না পাওয়ায় শেষ মুহূর্তে এসে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন কাজী ফিরোজ রশীদ।
আরেক কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ঢাকা-৪ আসন থেকে বিগত দুটি নির্বাচনে বিজয়ী হন। এবার আর সেই সুযোগ পেলেন না। আওয়ামী লীগ আসনটিতে সাবেক এমপি সানজীদা ইসলামকে মনোনয়ন দিয়েছেন। সমঝোতায় আসন না পেলেও লাঙল প্রতীক নিয়ে লড়তে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
কপাল পুড়েছে বরিশাল-৬ (বাকেরগঞ্জ) আসন থেকে দুই বারের সংসদ সদস্য জাপার সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের স্ত্রী রত্না আমিনেরও। ২০১৪ সালে স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই পৃথক আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৮ সালে এসে শুধু রত্না আমিন নির্বাচিত হন। এবার স্ত্রীর আসন ছাড় না দিলেও স্বামী এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার পেয়েছেন পটুয়াখালী-১ আসন।
ছিটকে গেছেন নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসন থেকে নির্বাচিত প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকাও। বিগত ২টি সংসদে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগবিহীন নির্বাচনী মাঠে। এবার আর তার আসনটি ছাড় দেয়নি আওয়ামী লীগ।
সমঝোতায় যুক্ত নতুন আসন
সমঝোতার আসনে নতুন করে কপাল খুলেছে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও পার্টির চেয়ারম্যানের সহধর্মীনী শেরিফা কাদেরের। তার ঢাকা-১৭ আসন থেকে আওয়ামী লীগ তাদের প্রার্থী গোলাম হাবিব হাসানের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। সমঝোতায় যুক্ত হওয়া নতুন আসনগুলো হচ্ছে মানিকগঞ্জ-১ আসনে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জহিরুল ইসলাম রুবেল, হবিগঞ্জ-১ আসনে মিয়া মোহাম্মদ আব্দুল মুনিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৮ আসনে প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠ, গাইবান্ধা-২ আসনে আব্দুর রশীদ সরকার।
রাজধানী ঢাকায় মাত্র একটি আসন ছাড় দেওয়া হয়েছে। পার্টির কো-চেয়ারম্যান যমুনা গ্রুপের কর্ণধার সালমা ইসলাম ঢাকা-১ ও ১৭ আসন থেকে মনোনয়ন নিলেও শেষ পর্যন্ত ঢাকা-১৭ আসন থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বলে বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন।
জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রথম নির্বাচনী জোট হয় ২০০৮ সালে। ওই নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে শেষ পর্যন্ত ৩২ আসন ছেড়ে দেয়। আর উন্মুক্ত ১৭টি আসন উভয়দলের প্রার্থীরা নিজ নিজ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। অন্যদিকে ২০১৪ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ২০ আসনে এবং পরে নির্বাচনে ১৩টি আসনে বিজয়ী হন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে ২৬টি আসন ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ, সব মিলিয়ে ২৭৮টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। এরমধ্যে জোটগতভাবে ২১টি আরও উন্মুক্ত থেকে একটি আসনে বিজয়ী হন জাতীয় পার্টির প্রার্থী।