ক্ষমতা হারানোর ভয়ে আওয়ামী লীগ: রিজভী

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ক্ষমতা হারানোর ভয়ে আছে আওয়ামী লীগ। তাই জনগণকে জিম্মি ও রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ১৫ বছর ধরে গায়ের জোরে ক্ষমতা দখল করে রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

সোমবার (১ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন তিনি। বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক মুহম্মদ মুনির হোসেন গণমাধ্যমে এ বিবৃতি পাঠান।

বিজ্ঞাপন

বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক গত ৩০ ডিসেম্বর বলেছেন, আমরা খবর পাচ্ছি-নির্বাচনকে ঘিরে সব আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এখন গুপ্ত হত্যার দিকে যাবে। ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্য মানে ক্ষমতাসীনদের গভীর ষড়যন্ত্র ও নীলনকশার অংশ বলে দাবি করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।

শুধু তাই নয়, রাষ্ট্রযন্ত্রের সমর্থনে আওয়ামী লীগের যে চিরন্তন ‘সেখানে নিজেরা অপকর্ম করে অন্যের ঘাড়ে তার দায় চাপানোর রাজনীতি’ তারা সেটার আবারও পুনরাবৃত্তি করার চক্রান্ত করছে বলে মনে করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় উৎকণ্ঠা ও উদ্বেগ জানিয়ে রিজভী বলেন, বিএনপি নিয়ে তিনি যে মন্তব্য করেছেন তা ন্যাক্কারজনক, নিন্দনীয় এবং রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত। বাংলাদেশে কারা সন্ত্রাসী কায়দায় সব দল বন্ধ করে, সকল সংবাদপত্র বন্ধ করে, কথা বলার স্বাধীনতাকে স্তব্ধ করে বাকশাল করেছিল? সে ইতিহাস এ দেশের জনগণ জানে। গুম, গুপ্ত হত্যা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঐতিহ্য আওয়ামী লীগের।

রিজভী বলেন, বিএনপি এদেশের গণতন্ত্র ও জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র তো বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাত ধরেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সুতরাং যারা গুপ্ত হত্যা ও সন্ত্রাসের রাজনীতি করে তাদের মুখেই গুপ্ত হত্যার কথা মানায়। সেজন্যই ওবায়দুল কাদের হয়তো অবলীলায় তাদের নীলনকশার অংশ হিসেবে গুপ্ত হত্যার বিষয়ে আগাম পরিকল্পনাটি বলে ফেলেছেন। তা না হলে তিনি কি করে জানলেন যে, বিএনপি গুপ্ত হত্যা ঘটাবে?

রিজভী বিবৃতিতে আরও বলেন, বিএনপির প্রতি দেশের জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়েই কিন্তু বিএনপি ৪ বার রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছিল। জনগণের ভালোবাসা ও সমর্থন না থাকলে এটা কীভাবে সম্ভব। আজকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে বিএনপি আবারও নিরঙ্কুশ জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় যাবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।

তিনি বলেন, ক্ষমতা হারানোর ভয়ে আওয়ামী লীগ জনগণকে জিম্মি ও রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহারের মাধ্যমে ১৫ বছর ধরে গায়ের জোরে ক্ষমতা জবরদখল করে রেখেছে। সারাদেশে তাদের পোষ্য ও সেবাদাস আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘরের ভেতর থেকে নেতাকর্মীদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে। হাজার হাজার নেতাকর্মী কারাগারে এবং অসংখ্য নেতাকর্মী পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাহলে এমন পরিস্থিতিতে শুধু সরকারের মদদপুষ্ট ব্যক্তিদের দ্বারাই গুপ্তহত্যা করা সম্ভব। এখানে সবকিছুর পরিকল্পনা করছে আওয়ামী সরকার আর সেটার বাস্তবায়ন করছে তাদের অনুগত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

রিজভী প্রশ্ন রেখে বলেন, গত বছরের ২৯ অক্টোবর রাজশাহীতে দুজন চিকিৎসক এক রাতে নিহত হয়েছেন। কুমিল্লায় স্বেচ্ছাসেবক দলের জাকির হোসেনকে পুলিশ ধাওয়া করে। পরে তার লাশ পাওয়া যায়। বিএনপির গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অদ্যাবধি ২৭ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এগুলো কারা ঘটিয়েছে? অতএব প্রমাণিত হয় যে, এসব ঘটনা সরকারেরই ভয়ংকর পরিকল্পনা। কেন্দ্রীয়ভাবে পরিকল্পনা করে এটি করা হচ্ছে। গোটা জাতিকে স্তব্ধ করে দিতে এই পন্থা অবলম্বন করেছে সরকার। দেশে টার্গেট কিলিং শুরু করেছে সরকার।

৭ জানুয়ারি নির্বাচন ঘিরে সরকারের এ ধরনের আরও কিছু জঘন্য পরিকল্পনা থাকতে পারে, যেটি তারা কৌশলে বিএনপি’র দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে জনমনে বিভ্রান্তির অপচেষ্টা চালালেও প্রকারান্তরে তাতে নিজেদের সর্বনাশা চক্রান্তেরই আভাস পাওয়া যাচ্ছে। সম্প্রতি কয়েকটি ঘটনায় সেটির প্রমাণ পাওয়া যায় বলেও জানান তিনি।

রিজভী বলেন, সুতরাং আমরা দেশপ্রেমিক জনগণকে আওয়ামী লীগ সরকারের দুরভিসন্ধিমূলক নীল নকশা গুপ্তহত্যা ও নাশকতার চক্রান্ত সম্পর্কে সতর্ক থাকার আহবান জানাচ্ছি। কেননা সরকার নিজেরাই কোনো না কোনো নীলনকশা বাস্তবায়ন করে এগোচ্ছে। এ বিষয়ে দলের নেতাকর্মীসহ সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখার কথা জানান তিনি।