আত্মপ্রকাশের দ্বারপ্রান্তে ষষ্ঠতম জাতীয় পার্টি



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতীয় পার্টি নামে ৫টি দল রাজনীতির মাঠে সক্রিয় রয়েছে। আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ষষ্ঠতম জাতীয় পার্টির জন্ম হতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।

সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের হাতে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পার্টি সম্ভবত সবচেয়ে বেশি ভাঙনের শিকার হয়েছে। ইতোমধ্যে ৫টি টুকরো রাজনীতির মাঠে বিচরণ করছে। ৯ মার্চ কাউন্সিলের মাধ্যমে আরও একটি জাতীয় পার্টি গঠন এখন সময় ব্যাপার বলা যেতে পারে।

জাপা প্রথম ভাঙ্গনের শিকার হয় ১৯৯৯ সালে। ওই সময় কারাবন্দি এরশাদের নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে বসেন সংসদ সদস্য ও সিনিয়র কয়েকজন নেতা। মিজানুর রহমান চৌধুরী-আনোয়ার হোসেন মঞ্জু নেতৃত্বে গঠন করা হয় পৃথক জাতীয় পার্টি (মিম)। ওই ভাঙ্গনটি ছিলো সবচেয়ে বড় ভাঙ্গন। তখন অল্পের জন্য সংসদীয় নেতার পদ রক্ষা করতে সক্ষম হন কারাবন্দি এরশাদ। পরে দলীয় প্রতীক লাঙল নিয়ে টানা হেচড়া করেন জাতীয় পার্টি (মিম)। শেষ পর‌্যন্ত কোর্টে গড়ায় বিষয়টি। তখন কোর্টে এরশাদের পক্ষে লড়েছিলেন সহধর্মীনী রওশন এরশাদ। জাপার ওই অংশটি এখন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরীক। নির্বাচন কমিশনে জাতীয় পার্টি জেপি নামে নিবন্ধিত অংশটির প্রতীক বাইসাইকেল।

২০০০ সালে জাতীয় পার্টি তখন বিএনপি জোটের দিকে ঝুঁকেছিল। ২০০১ সালের নির্বাচনের পুর্বে হঠাৎ ইউটার্ণ নিলে তৎকালীন মহাসচিব প্রয়াত নাজিউর রহমান মঞ্জু ও কাজী ফিরোজ রশীদের নেতৃত্বে আরেকবার ভাঙ্গনের মুখে পড়ে জাপা। এবার সৃষ্টি হয় বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (নাফি) বিজেপি। যেই দলটি এখনও জাতীয় পার্টি বিজেপি নামে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে রয়ে গেছে। এই অংশটিও ইসিতে নিবন্ধিত তাদের দলীয় প্রতীক দেওয়া হয়েছে গরুরগাড়ি।

বিজেপি ভেঙে আরেকটি দল হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি নামে। এই অংশটিও নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত। কাঁঠাল প্রতীক পাওয়া ওই অংশটির ইসির নিবন্ধন নম্বর ০২৮।

সর্বশেষ ভাঙ্গনের শিকার হয় ২০১৩ সালের ২০ ডিসেম্বর। সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত কাজী জাফর আহমেদ’র হাত ধরে। তখনও বেশ কিছু প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ বের হয়ে গিয়ে নতুন জাতীয় পার্টি (জাফর) সৃষ্টি করেন। এই অংশটিও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটে সক্রিয় রয়েছে।

ভাঙ্গা গড়ার খেলায় পার্টি অনেকটাই নেতৃত্বে শূন্য বলা যেতে পারে। ঝানু রাজনীতিবিদ বলতে যা বুঝায় এমন নেতার সংখ্যা সংখ্যা হাতে গোনা। যে কারণে মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন দল থেকে হায়ার করে জেলা কিংবা বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। যেমন হঠাৎ করেই যোগদান করা এক নেতাকে খুলনা মহানগরের আহ্বায়ক করা হয়। আবার ইদানিংকালে ঢাকা সিটি করপোরেশনের কয়েকটি নির্বাচনে নেতা হায়ার করতে দেখা গেছে।

রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করেন, জাপার মাঠ পর্যায়ে অনেক জনপ্রিয়তা রয়েছে। কিন্তু সেই সমর্থনকে কাজে লাগানোর মতো নেতার সংকট প্রকট। আবার যারাও রয়েছেন তারাও ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে জাতীয় পার্টি এরশাদকে কেন্দ্র করে আবর্তিত। দু’একবার যারাই এরশাদের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করতে গেছেন তাদেরকেই দল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। আবার অনেক নেতা একাধিক দফায় শোকজ ও সাময়িক বহিস্কারের শিকার হয়েছেন। শো’কজের ক্ষেত্রে এরশাদ ছাড় দেননি আপন ভাই জিএম কাদের ও স্ত্রী রওশন এরশাদকেও।

এরশাদের মৃত্যূর পর থেকেই নানা রকম টানাপোড়েনের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে দেবর-ভাবির (জিএম কাদের ও রওশন এরশাদ) সম্পর্ক। এরশাদের মৃত্যূতে শুন্য হওয়া বিরোধীদলীয় নেতার পদ নিয়ে প্রথম বিরোধ দেখা দেয়। দেবর ও ভাবি পৃথকভাবে নিজেকে বিরোধীদলীয় নেতা করার জন্য স্পিকারকে চিঠি দেন বিগত সংসদে। শেষ পর্যন্ত রওশন এরশাদকে বহাল করেন স্পিকার। আরও কতগুলো ইস্যুতে তাদের মধ্যে টানাপোড়েন ছিল।

কিন্ত গত সংসদ নির্বাচনে রওশন এরশাদ এবং তার সন্তানকে পার্টি থেকে মনোনয়ন না দেওয়া অম্লমধুর সম্পর্ক এখন সাপে-নেউলে রূপান্তরিত হয়েছে।

গত ২৮ জানুয়ারি রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে তাদের পদ থেকে অব্যাহতি দেন। একইসঙ্গে নিজেকে জাপার চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন। রওশন দাবী করেছেন তৃণমূল ও কেন্দ্রীয় নেতাদের অনুরোধে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।

জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। দলটির সর্বশেষ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর। নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন করতে না পারায় ইসির কাছে একাধিক দফায় সময় চেয়ে নিয়েছিল জাপা। সেই সময়ও গত হয়েছে কয়েক মাস আগেই, কিন্তু কাউন্সিল করতে পারেনি জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধীদলের চেয়ারে থাকা দলটি। আর এই সুযোগটি কাজে লাগাতে চাচ্ছেন রওশন এরশাদ। হঠাৎ করেই একতরফাভাবে জাতীয় পার্টির কাউন্সিল ডেকেছেন। এরপর বর্ধিতসভাসহ নানান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে রওশন এরশাদকে সামনে রেখে। রওশন এরশাদের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া সিনিয়র বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতাকে ইতিমধ্যেই বহিস্কার করা করেছেন জিএম কাদের।

রওশনপন্থীরা শুধু পার্টির চেয়ারম্যান এবং মহাসচিবকে মানতে চাইছেন না। আর অন্যান্য সকল কমিটিকে তাদের কমিটি বলে দাবী করে আসছেন। তারা বলতে চাইছেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ সকল জেলা-উপজেলা কমিটি তাদের সঙ্গে রয়েছে। তারা কাউন্সিলের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু কাউন্সিলকে পাত্তাই দিচ্ছেন না। তিনি বলেছেন, রওশন এরশাদ পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক পদে রয়েছেন, পদটি অলঙ্কারিক। তার কাউন্সিল ডাকার কোন এখতিয়ার নেই। আর তার সঙ্গে জাতীয় পার্টির কোন নেতাকর্মী নেই। তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা কেনো নেওয়া হচ্ছে না এমন প্রশ্নের জবাবে বলেছেন তার সঙ্গে জাতীয় পার্টির সম্পর্ক স্পর্শকাতর।

কাউন্সিল নিয়ে জিএম কাদের পন্থীদের যে অস্বস্তি কাজ করছে তা তাদের কার্যক্রম দেখলে বোঝা যায়। পার্টির একটি খবর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এবং মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর নির্দেশনা এবং আহ্বান ছাড়া অন্যকোন ব্যক্তিবর্গের আহ্বানে এবং জাতীয় পার্টির নাম ব্যবহার করে ঢাকায় বা অন্য কোন স্থানে আয়োজন করা কোন সম্মেলন, সভা, সমাবেশে কিংবা রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ না করার জন্য অনুরোধ করা হলো। ওই চিঠি কেন্দ্রীয় কমিটি, সকল জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন কমিটিকে দেওয়া হয়েছে।

রওশন পন্থীরা কাউন্সিল করেই ক্ষ্যান্ত দিচ্ছেন বলে আভাস পাওয়া গেছে। তারা এরপর পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় দখলের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। আবার লাঙ্গল প্রতীকও তাদের চাই, ইতোমধ্যে ইসিতে চিঠি দিয়েছেন। আবার কাউন্সিলের পর তৎপর হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। প্রয়োজন হলে কোর্টে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন তারা।

বিএনপি-জামায়াতের তাণ্ডবে অনেক নিরীহ মানুষ মারা গেছে: কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বিএনপি-জামায়াতের তাণ্ডবে অনেক নিরীহ মানুষ মারা গেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা জানতে চেয়ে প্রশ্ন করলে কাদের বলেন, ‘আমরা মৃত্যুর তালিকা..পত্র-পত্রিকায় দু’শোর মতো বা দু’শো চেয়ে একটু বেশি। আমরা এটার খোঁজ খবর নিচ্ছি। অনেক জায়গায়.. জাহাঙ্গীরের (গাজীপুরের সাবেক মেয়র) সঙ্গে জুয়েল নামে একটি ছেলে সবসময় থাকত, তাকে উত্তরায় মেরে লাশ লটকিয়ে রাখা হয়েছে। কি বর্বর, নৃশংসতা। পুলিশকে মেরে ঝুঁলিয়ে রাখা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘অনেক নিরহ মানুষ মারা গেছে। জানালায় দিয়ে বাইরের দৃশ্যপট দেখতেছিল..বাচ্চা যখন তাকালো, সেই বাচ্চা গুলি খেয়ে মারা গেল। তারপরে এ ধরণের ঘটনা আরও অনেক ঘটেছে। রাস্তায় বেরিয়েছে, নিষ্পাপ, নির্বোধ শিশু, কিছুক্ষণ পর দেখা গেল সেও লাশ হয়ে পড়েছিল। এরকম ঘটনা অনেক আছে। এগুলো জামায়াত-শিবিরের তান্ডব। আমরা খোঁজ-খবর নিচ্ছি। সময়মতো সাংবাদিকেরাও নিচ্ছেন। সব সত্য বেরিয়ে আসবে।’

আপনি বলেছেন অনেকেই রাস্তায় বের হয়ে, জানালা দিয়ে দেখার সময় গুলি খেয়ে মারা গেছে। মৃতদের বেশিরভাগই গানশর্টে মারা গেছে। তাহলে আপনি কি বলেছেন জামায়াত-শিবিরের হাতে অস্ত্র ছিল। থাকলে সেই অস্ত্র কি উদ্ধার করা হয়েছে?  সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, ‘জামায়াত-শিবিরের হাতে অস্ত্র ছিল। কিছু অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। এখনো চলছে (উদ্ধার অভিযান)। উদ্ধার হবেই। এদের নির্দেশ দাতা ও হোতারা কিন্তু গ্রেপ্তার হয়েছে। রিমান্ডে আছে। অনেক সত্য বেরিয়ে আসবে।’  

এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘আমরাতো রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করছি। প্রশাসনিকভাবে মোকাবিলা করছি। আপনাদেরও আমরা সহযোগিতা চায়। এ অপশক্তি সকলেরই শত্রু। সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলব।’

কাদের বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে যখন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্রে নৈরাজ্য-নাশকতার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। নির্দেশদাতা ও অর্থদাতাদের পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে। মির্জা ফখরুল..থলের বিড়াল বের হতে শুরু করছে। তখন তিনি আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি করছেন। তারা সবসময় জনগণের আস্থা না রেখে বিদেশী প্রভুদের উপর ভর করে রাজনীতি করে। এক্ষেত্রেও তাদের সন্ত্রাসী চরিত্র উম্মোচিত হওয়া থেকে দায়মুক্তির জন্য বিদেশী হস্তক্ষেপের দাবি করছে।’

বিএনপি-জামায়াত-উগ্রবামপন্থী-জঙ্গিগোষ্ঠি কুচক্রি মহল এখনো সক্রিয় আছে বলে দাবি করে কাদের বলেন, ‘তাদের প্রশিক্ষিত ক্যাডাররা চোরাগোপ্তা হামলা চালাতে প্রস্তুত হচ্ছে বলে আমাদের কাছে খবর আছে। তারা আবারও বিভিন্নভাবে হামলা চালাতে পারে। দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান যেখানে অস্ত্রধারী ক্যাডারদের খোঁজ পাবেন, তাদের তথ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে সহযোগিতা করবেন ।’

নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত, ছাত্রদল-শিবির, জঙ্গিগোষ্ঠির সন্ত্রাসীরা আর যাতে সহিংসতা ছড়াতে না পারে সে জন্য সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।’ এছাড়া নেতাকর্মীদের কারফিউ মেনে চলার অনুরোধ করেন কাদের।

;

অরাজকতা রুখতে মাঠে ছিলাম-আছি-থাকবো: লিটন



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন

  • Font increase
  • Font Decrease

জনগণের জানমাল রক্ষার্থে ও যে কোনো অরাজকতা রুখতে আমরা মাঠে ছিলাম, এখনো আছি ও ভবিষ্যতেও থাকবো বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) বাদ জুম্মা রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার বড় মসজিদে আয়োজিত দোয়া ও মোনাজাতে অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজশাহী মহানগরীরের সকল মসজিদে এই দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

সম্প্রতি সারাদেশে বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতায় নিহত শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ যারা প্রাণ হারিয়েছে তাদের আত্মার মাগফেরাত এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করা হয়।

এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আমরা শুরু থেকে লক্ষ্য রাখছিলাম। আমাদের কাছে মনেই হচ্ছিলো, এটা হয়তো ভিন্নখাতে প্রবাহিত হবে এবং কয়েকদিন যেতে না যেতেই সেটা প্রমাণিত হতে শুরু করলো। তখন থেকে আমরা সতর্ক হয়ে যাই এবং রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরে নেতাকর্মীদের নিয়ে আমরা রাজপথে থাকি। জনগণের জানমাল রক্ষার্থে ও যাতে কেউ অরাজকতা করতে না পারে সেজন্য আমরা মাঠে ছিলাম। আমরা এতে সফল হয়েছি। রাজশাহীর শান্তিপ্রিয় মানুষ আমাদের সমর্থন দিয়েছেন, সাধুবাদ জানিয়েছেন।

মেয়র লিটন বলেন, বিছিন্নভাবে আমাদের ওপর হামলা করার চেষ্টা করা হয়নি; তা নয়, বিভিন্ন অলি-গলি থেকে হামলার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু জনগণকে সাথে নিয়ে আমাদের সম্মিলিত প্রতিরোধের মুখে তারা সরে যেতে বাধ্য হয়েছে। আমাদের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে ছিলেন। আমরা মাঠে আছি, সেভাবে আমরা এ পর্যন্ত রাজশাহীকে নিরাপদ রেখেছি। জনজীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। কারফিউ উঠে হলে আরো স্বাভাবিক হবে।

এরআগে সাহেববাজার বড় মসজিদে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে পবিত্র জুম্মার নামাজ আদায় করেন রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। জুম্মার নামাজ শেষে দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন তিনি। এরপর দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে কুমারপাড়াস্থ মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে যান এবং সেখানে অবস্থান নেন।

কর্মসূচিতে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, ডা. তবিবুর রহমান শেখ, নাইমুল হুদা রানা, সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, সাংগঠনিক এ্যাড. আসলাম সরকারসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

;

‘শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা সকল স্বৈরাচারের নির্মম নিষ্ঠুরতাকেও হার মানিয়েছে’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর সরকারদলীয় সন্ত্রাসী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে হামলা চালিয়ে ইতিহাসে হতাহতের যে বর্বরোচিত নজীর স্থাপন করেছে তা দেশ-বিদেশের সকল স্বৈরাচারের নির্মম নিষ্ঠুরতাকেও হার মানিয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন তিনি।

সাধারণ মানুষকে গ্রেফতার, কারান্তরীণ ও জুলুম-নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অবৈধ সরকার নিজেদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও ব্যর্থতা আড়াল করতে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে গ্রেফতার করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, বরিশাল মহানগর বিএনপি’র সদস্য সচিব এ্যাডভোকেট জিয়াউদ্দিন সিকদার, নাটোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজকে গ্রেফতার এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র গ্রেফতারকৃত সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব মোশাররফ হোসেন খোকনকে ৩ দিন পর আদালতে তোলা হয়েছে। অব্যাহত গতিতে দেশব্যাপী বিরোধী দলের নেতাকর্মী বাড়ি বাড়ি তল্লাশি হচ্ছে, বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুর বাসাসহ অনেক সিনিয়র নেতৃবৃন্দের বাসায় তল্লাশি চালাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “গ্রেফতারকৃত নেতৃবৃন্দকে গুম করে রেখে নির্যাতন চালিয়ে তিন/চার কিংবা পাঁচ দিন পর আদালতে হাজির করা হচ্ছে যা আইন ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। দেশের নাগরিকদেরকে গুম করে রাখার ভয়াবহ সংস্কৃতি চালু রেখে মানুষের মনে ভীতি সঞ্চার করা হচ্ছে। সরকারকে এ ধরণের লোমহর্ষক কর্মকাণ্ড পরিহারের আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, একটি স্বাধীন দেশে সরকারের দায়িত্ব হলো-রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া, গত কিছুদিন যাবত কোটা সংস্কার আন্দোলনে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা যখন যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলনরত তখন সেই মুহূর্তে সরকার প্রধানসহ সরকারি দলের নেতা-মন্ত্রীরা তাদেরকে তাচ্ছিল্য করে আওয়ামী সন্ত্রাসীদেরকে নির্দেশ দেয় তাদেরকে নির্মূল করার। সরকারি দলের সন্ত্রাসী এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যৌথভাবে জনগণের টাকার কেনা গুলি, টিয়ারসেল, রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড শিক্ষার্থীদেরকে লক্ষ্য করে নিক্ষেপের মাধ্যমে শত শত নিরীহ ছাত্র-ছাত্রীকে গণহারে হত্যা এবং হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীকে আহত করেছে যা দেশবাসীসহ বিশ্ববাসী অবলক্ষণ করেছে।

নির্মম অত্যাচারে দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ হতবাক ও ক্ষুদ্ধ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলও একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে নৈতিক সমর্থন দিয়েছে এবং সারা দেশে কর্মসূচীও পালন করেছে। কিন্তু অবৈধ সরকার মরিয়া হয়ে রাষ্ট্রের সকল বাহিনীসহ দলীয় সন্ত্রাসীদেরকে সাধারণ মানুষ, বিএনপি নেতা-কর্মী ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়ে ব্লক রেড দিয়ে গ্রেফতার করছে। এখন পর্যন্ত তাদের হিসাবে প্রায় ৩ হাজার গ্রেফতার করছে। যা জাতির জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও লজ্জার।

তিনি বলেন, ছাত্র জনতার ন্যায় সংগত আন্দোলনকে দমন করার জন্য সেনা বাহিনীকে ব্যবহার কখনই গ্রহণযোগ্য নয়। অবিলম্বে সান্ধ্য আইন প্রত্যাহার এবং সেনা বাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। বরাবরই আওয়ামী লীগ লাশের উপর দিয়ে ক্ষমতায় গিয়েছে এবং ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য গত কয়ক দিন যে পরিমাণ নিরীহ ছাত্র-মানুষকে গুলি চালিয়ে পাখির মতো হত্যা করেছে, গণহত্যা চালিয়েছে তা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর কথাই মনে করিয়ে দেয়।

গত কয়েকদিনে কতজন নিরীহ মানুষকে হত্যা ও পঙ্গু করা হয়েছে জনগণ তার সঠিক পরিসংখ্যান জানতে চায়। এছাড়া জনগণের টাকায় কেনা কি পরিমান গোলাবারুদ, টিয়ার সেল, সাউন্ড গ্রেনেড শিক্ষার্থীদের ওপর ব্যবহার করা হয়েছে তার হিসাবও জনগণ জানতে চায়। রাষ্ট্রের টাকায় কেনা হেলিকপ্টার দিয়ে মানুষ হত্যার জবাব জনগণ একদিন কড়ায়-গন্ডায় আদায় করে নিবে।

সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ কারার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যে সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য নির্মমভাবে নিরীহ মানুষকে হত্যা করতে পারে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও স্থাপনার নিরাপত্তা দিতে পারে না সেই সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোন নৈতিক অধিকার নেই। তাই এই অবৈধ সরকারকে বলবো-অবিলম্বে পদত্যাগ করে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করার লক্ষ্যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা নিন।”

;

বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, বরগুনা
খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ

খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে অসহায় কর্মজীবী মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে বরগুনা জেলা পরিষদ ডাক বাংলো হলরুমে অসহায় কর্মজীবী মানুষের মাঝে এ খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি প্রত্যয় দেব প্রান্ত, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাদুমনি, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য সাইফুল ইসলাম সাগর। ১ নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমন রায়, মো. শাহরিয়ার শুভসহ জেলা ছাত্রলীগের অন্যান্য নেতাকর্মীরা।

খাদ্য সামগ্রী পেয়ে ফরহাদ জানান, দেশের বর্তমান অবস্থা তাতে রিকশা গাড়ি নিয়ে বের হতে পারি না। পরিবার নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় ছিলাম। ছাত্রলীগ আমাকে সরকারের তরফ থেকে যতটুকু দিয়েছে আমি অনেক খুশি, কয়েকদিন পরিবার নিয়ে ভালো চলবে।

হলিমা খাতুন বলেন, আমার ম্বামী অনেক আগেই মারা গেছে। দুই সন্তান, আমি ডেইলি মানুষে বাসায় কাজ করে সংসার চলাই। কয়েক দিন ধরে কাজে যেতে পারছি না। প্রধানমন্ত্রীর উপহারে কিছুদিন চলবে, দেশের পরিস্থিতি ভালো হলে আবার কাজে ফিরবো।

;