জনগণের কাছে সরকারের জবাবদিহিতা নেই: মির্জা ফখরুল
জনগণের কাছে বর্তমান সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, তাদের মধ্যে এক প্রকার দাম্ভিকতা সৃষ্টি হয়েছে। জনগণের তাদের কোন প্রয়োজন নাই। সেখানে দেশের অর্থনীতি, জনগণের স্বাস্থ্য, মানুষ মারা যাচ্ছে কিনা এগুলো নিয়ে তাদের মাথা ব্যথা নেই। আমরা তো বরাবর বলে আসছি আওয়ামী লীগ ব্যর্থ রাষ্ট্র করে ফেলেছে।
রোববার (১২ মে) দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ঋণ খেলাপি ও অসাধু ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষার জন্যই বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যেহেতু এই সরকারের কোনও স্তরেই কোনও জবাবদিহিতা নেই সেহেতু লাগামহীনভাবে ব্যাংক লুট, অর্থপাচার, জনগণের অর্থ লোপাটের মাধ্যমে একটি বিশেষ গোত্র তৈরি করা হচ্ছে। যারা এই অবৈধ সরকারের অবৈধ কর্মকাণ্ডকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করছে।
তিনি বলেন, দেশের বিপর্যয়কর পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। দেশের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক অর্থনৈতিক অবস্থা ব্যবস্থার সঙ্গে জনগণের জীবনমান উন্নয়নের বিষয়টিও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সড়ক ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণ তথা অবকাঠামোগত উন্নয়ন এগুলো কোনো একটি দেশের যে কোনো গণতান্ত্রিক সরকারের একটি রুটিন ওয়ার্ক। তবে অগণতান্ত্রিক সরকার এসব তথাকথিত উন্নয়ন হিসেবে প্রচার করে জনগণের অন্য সকল অধিকারকে অবজ্ঞা করে চলছে। কেবলমাত্র আর্থিক কিংবা অবকাঠামোগত ফাঁপা উন্নয়ন রাষ্ট্র বা সমাজের উন্নয়নের মাপকাঠি হতে পারে না। জীবনমান তথা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, সামাজিক এবং নৈতিকতার মূল্যবোধের উন্নয়ন ছাড়া কোনো উন্নয়নই টেকসই নয়।
তিনি আরও বলেন, তথাকথিত উন্নয়নের দোহাই দিয়ে যে রাষ্ট্র ব্যবস্থায় নৈতিকতা এবং মূল্যবোধকে বিসর্জন দেওয়া হয়, জনগণের কাছে সেটি উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচিত হয় না। মনে রাখা প্রয়োজন, জীবন এবং জীবিকার দ্বন্দ্বে জীবিকার কাছে যেন জীবন হেরে না যায়। তেমন একটি বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এবং সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যেই চলমান আন্দোলন এবং জনগণের এই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি'র আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
বিএনপি'র স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় আলোচিত বিষয় উপস্থাপন করে মির্জা ফখরুল বলেন, নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনরত বিরোধী নেতা-কর্মীদের পূর্বে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলায় একতরফা শুনানি করে অফিযুক্ত নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করার প্রক্রিয়াকে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। সভা মনে করে অবৈধ সরকারের সাজানো নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ করার লক্ষ্যে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের সাজা দিয়ে কারান্তরীণ করে বিরাজনীতি করণের প্রক্রিয়াকে বাস্তবায়িত করার জন্য বিচার প্রক্রিয়াকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। সম্পূর্ণ বানোয়াট মিথ্যা গায়েবি মামলায় প্রায় ২ হাজার নেতা-কর্মীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে সাজা প্রদান করা হচ্ছে।
অবিলম্বে এ প্রক্রিয়া বন্ধ করে সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং বিচার প্রক্রিয়াকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয় সভায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি মনে করে জনগণই সকল শক্তি। বাংলাদেশের মানুষেই আমাদের আস্থা। আর সেই আস্থার ওপর ভর করেই আমরা রাজনীতি করি।