ট্রানজিটের নামে ভারতকে করিডোর দেওয়া হয়েছে: এবি পার্টি

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

এবি পার্টির সাংবাদিক সম্মেলন/ ছবি: বার্তা২৪.কম

এবি পার্টির সাংবাদিক সম্মেলন/ ছবি: বার্তা২৪.কম

ট্রানজিটের নাম করে ভারতকে করিডোর দেওয়া হয়েছে। ভারত অবাধে যাতায়াত করতে পারবে, পৃথিবীর কোথাও এমন চুক্তির নজির নেই বলে দাবি করেছে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)।

সোমবার (২৪ জুন) রাজধানীর বিজয়নগরের নিজস্ব কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে এমন দাবি করা হয়।

বিজ্ঞাপন

বক্তারা বলেন, ভারতের আচরণ বন্ধুত্বপূর্ণ নয়, ক্রমাগত চেপে বসেছে। ট্রেনে যদি অস্ত্র পরিবহন হয়, তাতে যদি কোন সমস্যা হয়। তখন কি হবে কিছুই জানানো হচ্ছে না। এই না জানানোটাও বড় ধরনের অপরাধ। ৩টি চুক্তি নবায়ন করা হয়েছে, ৭টি চুক্তি অথবা এমওইউ। জাতিকে অবহিত করার দরকার ছিল, কিন্তু জাতিকে অন্ধকারে রাখা হয়েছে। সংবিধানের ১৪৫/ক-তে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক চুক্তি করা হলে সংসদকে অবহিত করতে হবে। কিন্তু পুতুল সংসদ সদস্যরা কোন প্রশ্ন করছেন না।

পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী বলেন, সরকার চিরকাল ক্ষমতায় থাকার ফন্দি ফিকির করে যাচ্ছে। একযোগে অবৈধ সরকারকে উৎখাত করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এবি তাজুল ইসলাম বলেন, দিল্লির কাছে এক ধরনের দাসখত দিয়ে আসা হয়েছে, বন্ধক দিয়ে আসা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব জনগণকে সচেতন করা। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভারত চিরদিন মনে রাখবে, আপনি কি দিয়ে এলেন! প্রত্যেকটা বিষয় পরিষ্কার করবেন, না হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

তিনি বলেন, ডিজিটাল পার্টনারশিপ নিয়ে কি ফরমেটে চুক্তি হয়েছে। কেনো গোপনীয়তা রক্ষা করা হচ্ছে। সে কারণেই সন্দেহ আরও বেড়ে যাচ্ছে। ভারতকে অবাধ একসেস দিচ্ছেন কিনা। ভারত বাংলাদেশকে করদরাজ্যে পরিণত করতে চায়। সিকিম, আসাম কিন্তু এক সময় ভারতের অংশ ছিল না। তার সুচ হয়ে ঢুলে ফাল হয়ে বের হয়েছে। সেভাবে বাংলাদেশের দিকে তাদের নজর পড়েছে।

ব্যারিস্টার শেখ আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দুই দিনের সফর প্রসঙ্গে জানবার চেষ্টা করেছি, দুঃখজনকভাবে বেশি কিছু জানা যায়নি। যতটুকু জেনেছি খুবই ভয়ঙ্কর কোনভাবে সহায়ক বলে মনে করছি না। ব্লু ইকোনমি, সাইবার সিকিউরিটি ও রেল লাইন খুবই স্পর্শকাতর বলে মনে হয়েছে। এতে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা করা হয়নি। ওয়ান ইলেভেনের গাদ্দার সরকার, ট্রান্স এশিয়ান কানেক্টিভিটি করতে চেয়েছিল। এখন হচ্ছে বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে। ৮৫০-১১০০ কিলোমিটার ট্রানজিটের নামে করিডোর দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, সর্বভৌমত্ব রক্ষা করা প্রত্যেক প্রজন্মের দায়িত্ব, বাংলাদেশ রাষ্ট্রে বসবাস করতে চান নাকি করদ রাজ্যে বসবাস করতে চান, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে।

ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার মানে বাংলাদেশ নয়। অনেক চুক্তি করতে পারবেন তবে জনগণকে বাদ দিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে পারবেন না। আমাদের দেশের রেলের লাইন উপড়ে ফেলা, বগিতে আগুন দেওয়ার অনেক নজির রয়েছে।

কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম বলেন, সংবিধান লঙ্ঘন করা হচ্ছে চুক্তি প্রকাশ না করে। তালপট্টি আমরা হারিয়েছি, ট্রানজিট দিয়েছে আমাদের কোন লাভ নেই, যদি অস্ত্র প্রবেশ করে তাহলে কি হবে। আমাদের চেক করার কোন সুযোগ নেই। ৫৪টি আন্তসীমানা নদী রয়েছে, প্রত্যেকটি নদীতে বাঁধ দিয়েছে, কোন আইন তারা মানছে না। সরকার কোন প্রতিবাদও করছে না।

মেজর (অব.) আব্দুল ওয়াহাব মিনার বলেন, ভারতের সঙ্গে যতগুলো চুক্তি হয়েছে ঐতিহাসিকভাবে কোনটাই বাংলাদেশের পক্ষে যায়নি। এবার বাংলাদেশের পক্ষে যাবে সে আশা করা বৃথা। এই সরকারের কাছে কিছু চেয়ে পাওয়া যাবে না। তাই লড়াই করে আদায় করে নিতে হবে।

বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা আকাম কুকাম রক্ষার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। টিআইবি বলেছে তারা এই বিবৃতি দিতে পারে না। এটা সাংবাদিকতার ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ।