তিস্তা চুক্তি সমাধানের মূল প্রতিবন্ধকতা মমতা: কাদের
তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি সমাধানের মূল প্রতিবন্ধকতা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন. রাজ্য সরকার না চাইলে কেন্দ্রীয় সরকার অনেক কিছুই করতে পারে না।
সোমবার (১ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের অফিসের সামনে দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ।
তিনি বলেন, তিস্তার পানি নিয়ে সবাই বলে চুক্তি কেন হলো না? আমি আপনাদের জানাতে চাই, ভারত একটি ফেডারেল দেশ। সেখানে কেন্দ্রীয় সরকার ইচ্ছা করলে রাজ্য সরকারের অধিনে পানি অন্য দেশকে দিতে পারে না। এটা ভারতের সংবিধানে লেখা আছে। এর আগে গঙ্গার পানি দিতেও পশ্চিমবঙ্গের জ্যোতি বসু সরকারের সম্মতি ছিলো বলেই আমরা বুঝে পেয়েছি।
তিস্তা পানির মূল সমস্যা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, যখন শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছিলো তখনই গর্জে উঠেছেন মমতা। কলকাতা থেকে বলেছেন, কোনদিনও বাংলাদেশকে এই পানি দিবো না। এই হিস্যা আমরা দিতে পারি না।
তিনি বলেন, এখন যদি মমতা না বলে তাহলে কেন্দ্রীয় সরকারকে রাজি করাতে হবে। তাকে হা করাতে হবে। তা না হলে ভারতের সংবিধান এলাউ (অনুমোদন) করে না বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত সরকার তাদের রাজ্যকে বাদ দিয়ে চুক্তি করবে। এই সুযোগ নেই।
সমঝোতা স্মারক আর চুক্তি এক কথা নয় বলে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, এইবার কিন্তু কোন চুক্তি হয় নাই। মির্জা ফখরুল (বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) সমঝোতা স্মারক আর চুক্তি, এই দুইটা কি এক? পড়াশোনা করেন না? ডিপ্লোম্যাসি ভাষা জানেন না? জেনে নেন, সমঝোতা স্মারক আর চুক্তি এক কথা নয়।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা পদ্মা সেতুর জন্য মালয়েশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা স্মারক করেছিলাম, পরবর্তীতে নিজের টাকায় করেছি। যদি চুক্তি করতাম তাহলে আমরা বাধ্য হতাম তাদের সঙ্গে করতে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা নিজস্ব ধারে এই পদ্মা সেতু করেছেন।
বিএনপি মহাসচিবকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবেন না। ৭৫ এর পর সাড়ে তিন হাজার পিস শাড়ি নিয়ে নতুন দিল্লিতে কারা গিয়েছিলো লাল গালিচা সংবর্ধনা নিয়ে? ওই যে ফিরে এলেন ঢাকা বিমানবন্দরে, সাংবাদিকেরা জিজ্ঞেস করলো গঙ্গা চুক্তির কি হলো? খালেদা জিয়া কি বললো? আরে আমি তো গঙ্গা চুক্তির কথা বলতে ভুলেই গেছি। আপনারা সব কিছুই ভুলে যান।
গঙ্গা চুক্তি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা করেছেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বন্ধুত্ব থাকলে অবিশ্বাস থাকে না, সন্দেহ থাকে না। বন্ধুত্ব আছে বলেই তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর বাণী নিয়ে আলোচনা অনেক দূর অগ্রগতি সাধন করেছি। বন্ধুত্ব আছে বলেই সমুদ্রসীমায় আরেকটা বাংলাদেশ পেয়েছি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ভারতের নতুন সরকার আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেছেন, সে সব সমস্যা বাস্তবায়ন হয়নি সেগুলোর ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে এবং সমাধানের জন্য ইতিবাচক চেষ্টা আছে।