পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে কৌশলী আওয়ামী লীগ!



রুহুল আমিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দলীয় প্রতীক

ছবি: সংগৃহীত, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দলীয় প্রতীক

  • Font increase
  • Font Decrease

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রায় ৬ মাস পর আবারও রাজপথ দখলে মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি।

বিএনপি তার চেয়ারপারসনের মুক্তি ও সরকারের দুর্নীতিকে সামনে রেখে সমাবেশের ডাক দিচ্ছে। বিপরীতে আওয়ামী লীগ বলছে, ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বছরব্যাপী অনুষ্ঠান করবে তারাও।

দুই প্রধান বিরোধীদলের কর্মসূচির উদ্দেশ্য ভিন্ন হলেও মিলে যাচ্ছে দিন, তারিখ ও সময়। তবে এনিয়ে কৌশলী আওয়ামী লীগ। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির অপবাদ ঘোচাতে তাই বছরব্যাপী প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের ঘোষণা আগেই দিয়ে রেখেছে দলটি।

দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিএনপিকে শূন্য রাজপথ ছেড়ে দিতে নারাজ হাইকমান্ড। সে কারণে বিএনপির সরকারবিরোধী কর্মসূচিকে চ্যালেঞ্জ করে রাজপথে থাকবে আওয়ামী লীগও। তবে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির ‘তকমা’ যেন না লাগে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকবে এবার।

পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির বিষয়টি মানতে নারাজ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মসূচিকে অনেক ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় পাল্টাপাল্টি উল্লেখ করায় এর কড়া সমালোচনাও করেন তিনি।

২৯ জুন (শনিবার) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় সাংবাদিকদের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম বছরব্যাপী উদযাপন করবো। সেখানে খবর হয়, আমরা নাকি পাল্টাপাল্টি করছি! গতকাল আমরা সাইকেল র‌্যালি করেছি; বিএনপির কি কিছু ছিল! তাহলে কেন এই অপবাদ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দিচ্ছেন'!

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, ছবি- সংগৃহীত


এসময় তিনি অগ্রিম সমাবেশেরও ঘোষণা দিয়ে রাখেন। ওবায়দুল কাদের বলেন বলেন, ‘আমরা সারাবছর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করবো। আমাদের কেন্দ্র থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত এই কর্মসূচি উদযাপন করা হবে। আগস্ট মাসের পরে জেলা পর্যায়ে সমাবেশ হবে। সে সমাবেশে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখবেন’।

এর আগে, সর্বশেষ চলতি বছরের মহান মে দিবসে রাজধানীতে পাল্টাপাল্টি সমাবেশ করে দুই দল। ওইদিন বিএনপি তার সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের ব্যানারে সমাবেশ করে। অপরদিকে, আওয়ামী লীগও তার সহযোগী সংগঠন জাতীয় শ্রমিক লীগের ব্যানারে সমাবেশ করে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ২৭ জানুয়ারি বিএনপির কালো পতাকা মিছিল করে। এরপর এটাই ছিল দলটির বড় কোনো কর্মসূচি।

এরও আগে ২০২২ সালের জুলাই মাস থেকে বিএনপি তার মিত্রদের সঙ্গে যুগপৎভাবে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু করে। তখন থেকে সরকারি দল আওয়ামী লীগও রাজপথ দখলে রাখার ঘোষণা দিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে আসছিল। সে সময় বিএনপি ও তার মিত্রদের সরকার পতনের ‘এক দফা’ আন্দোলনের বিপরীতে আওয়ামী লীগ ‘শান্তি ও উন্নয়ন’ সমাবেশ করে।

বিএনপির বিপরীতে দেওয়া আওয়ামী লীগের কর্মসূচি নিয়ে তখন ব্যাপক সমালোচনা হয়। বিএনপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দিয়ে আওয়ামী লীগ সহিংসতাকে উস্কে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন কেউ কেউ। এত সমালোচনার পরেও রাজপথ ছাড়েনি আওয়ামী লীগ। বরং বিএনপির প্রতিটি কর্মসূচির বিপরীতে আওয়ামী লীগও তার কর্মসূচি অব্যাহত রাখে।

২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশের ডাক দিলে আওয়ামী লীগও বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে ‘শান্তি ও উন্নয়ন’ সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়। সেদিন বিএনপির মহাসমাবেশকে ঘিরে ব্যাপক নাশকতা-সন্ত্রাস, জ্বালাও-পোড়াও হয়। সহিংসতায় মারা যান একজন পুলিশ কনস্টেবলও। এমন চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে পণ্ড হয়ে যায় বিএনপির মহাসমাবেশ।

এরপর থেকে নির্বাচন পর্যন্ত কয়েক দফা হরতাল-অবরোধের ডাক দিলেও মাঠে নামতে পারেনি বিএনপি। ব্যাপক ধরপাকড়, মামলা ও নেতাকর্মী গ্রেফতারের কারণে বিপর্যস্ত ছিল দলটি। ফলে, কোনো বাধা ছাড়াই হয়ে যায় নির্বাচন। টানা চতুর্থ বারের মতো সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।

তবে সে অবস্থা থেকে আবারও রাজপথে আন্দোলন জোরালো করতে চায় বিএনপি। বিপরীতে শূন্য রাজপথ ছেড়ে না দিয়ে মাঠে থাকতে চায় আওয়ামী লীগও। তবে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির তকমা ঘোচাতে এবার কৌশলী আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, নির্বাচন ও আন্দোলনে ব্যর্থ বিএনপি ও তার মিত্ররা। এখন নির্বাচিত সরকার ও দেশকে অস্থিতিশীল করতে নতুন করে মাঠে নামতে চায় দলটি। সে কারণে বিএনপির সহিংসতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করতে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি দলের নেতাকর্মীরাও মাঠে থাকবেন।

আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড থেকে এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগসহ সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের দেওয়া হয়েছে কড়া নির্দেশনা। দলের যে কোনো কর্মসূচিতে ব্যাপক জনসমাগম নিশ্চিত করতে সবাইকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।

এছাড়াও দলের ঢাকা মহানগরীর এমপি ও অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদেরও দলের কর্মসূচিতে সর্বাত্মক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পাল্টাপাল্টি সমাবেশ নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগ থেকে আমরা আগেই বছরব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। ঐতিহ্যবাহী সাফল্য ও গৌরব গাথার দল আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সর্ববৃহৎ এই দলটি তার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বছরব্যাপী উৎসব উদযাপন করছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ছবি- সংগৃহীত


নাছিম বলেন, এখন আকস্মিকভাবে বিএনপির সঙ্গে যদি কোনো কর্মসূচি একই দিনে হয়ে যায়, তাহলে কি শুধু পাল্টাপাল্টি হবে! এটা তো এমন কোনো সমাবেশ ডাকা হয়নি যে, বিএনপি ডেকেছে বলে আমরা ডেকেছি।

বিএনপি-জামাতের কোনো সেমিনার হল বা আলোচনার অডিটরিয়ামে গিয়ে কোনো সভা ডেকেছি, এমন তো না। এরকম ঢাকা শহরে একাধিক দলের একাধিক সভা অতীতেও হয়েছে। তাতে কোনো সংঘাত বা উচ্ছৃঙ্খলা, মারামারি-খুনোখুনি এমন কিছু হয়নি।

বিএনপির সভা থেকে আওয়ামী লীগের সভা অনেক দূরে উল্লেখ করে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, এটা নিয়ে অহেতুক দ্বন্দ্ব বা সংঘাত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। একটি নির্বাচন হয়েছে, নির্বাচিত সরকার দেশ পরিচালনা করছে, ছয় মাসও হয়নি। এখন এই সরকারকে উৎখাতের কথা যারা বলে, তারা ব্যর্থ! সে ব্যর্থতার দায় অন্যভাবে আওয়ামী লীগকে দেওয়ার জন্য বিএনপি কৌশল নিচ্ছে। এই কৌশলকে আমরা পাত্তা দেই না।

‘ক্ষমতার মোহে আ. লীগ জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা ধ্বংস করেছে’



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও শ্রমিক দলের প্রধান সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও শ্রমিক দলের প্রধান সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও শ্রমিক দলের প্রধান সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ক্ষমতার মোহে আওয়ামী লীগ জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা ধ্বংস করে দিয়েছে।

শনিবার (৬ জুলাই) নগরের টাউনহলের তারেক স্মৃতি অডিটরিয়ামে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের ময়মনসিংহ বিভাগীয় বনিয়াদি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে শ্রমিক দলের ময়মনসিংহ বিভাগীয় সভাপতি মোহাম্মদ আবু সাঈদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, বাংলাদেশে সর্বকালের শ্রেষ্ঠতম বাংলাদেশি শ্রমিক ছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তিনি নিজেকে শ্রমিক হিসেবে গর্ববোধ করতেন। শ্রমিকরা সেই শ্রেণির মানুষ যারা হালাল উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করে। শ্রমিকরা সেই মানুষ যারা সৃষ্টি করে জন্ম দেয় সবকিছু। এদেশে খাদ্য উৎপাদন করে শ্রমিকরা। কাপড় উৎপাদন করে বস্ত্রকলের শ্রমিকরা।

তিনি বলেন, তারেক রহমানকে মিথ্যা দণ্ড দিয়ে দেশের বাইরে থাকতে বাধ্য করা হলো। তাকে ফিরিয়ে আনতে হবে। এত দূর থেকে বসে তিনি ক্রমাগত দিনরাত কাজ করছেন। ইতিহাসে প্রথম এবারই তিনি তার নেতৃত্বে ডানপন্থী বামপন্থী, কমিউনিস্ট পার্টি, ইসলামিক দল সব একত্রে হয়ে এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে। জনগণকে আহ্বান জানানো হয়েছে নির্বাচনে না যাওয়ার জনগণ নির্বাচনে যায় নাই। সেই নেতাকে আমাদের ফিরিয়ে আনতে হবে। জাতীয় সংসদে একজন মাত্র শ্রমিক নেতা এমপি আর সংসদে সদ্যদের সত্তর ভাগ হয় শিল্পপতি না হয় ব্যবসায়ী। শতকরা আশি ভাগ কোটিপতি। এই অবস্থা চলতে থাকলে এই সংসদ সরকারের কাছ থেকে কোন সুবিধা পাওয়ার আশা নাই। কেন এই রকম হচ্ছে? কারণ এই সরকারের ভোটের দরকার হয় না। যদি আমাদের ভোটের দরকার হতো, আমরা এমন লোককে ভোট দিতাম যে আমার পক্ষে কথা বলবে, যে আমার পক্ষে কাজ করবে।

আমরা খুব আশা নিয়ে যুদ্ধে গিয়েছিলাম, দেশে গণতন্ত্র থাকবে, এদেশে সুশাসন থাকবে, বৈষম্যের অবসান হবে, মানবিক মর্যাদা থাকবে, যেটা পাকিস্তানে ছিল না। আমরা সম্মানিত নাগরিক হিসেবে জীবনযাপন করবো, যেটা পাকিস্তানে পারি নাই। কিন্তু দুর্ভাগ্য, ক্ষমতার মোহে আজকে যারা ক্ষমতাসীন তারা আমাদের সব আকাঙ্খাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আজকে দেশে গণতন্ত্র নাই। এদেশে ভোট হয় না। আজকে দেশে বৈষম্য বেড়েছে। ইন্টারন্যাশনাল রিপোর্টে বলে জনসংখ্যার হারে বিবেচনা করলে বাংলাদেশে প্রতিবছর যত কোটিপতি তৈরি হয় বিশ্বের আর কোন দেশে এত কোটিপতি হয় না, বলেন তিনি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর যে পরিমাণ মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে চলে যাচ্ছে। একদিকে হাতেগোনা কিছু মানুষ অনেক অনেক সম্পত্তির মালিক হয়ে যাচ্ছে, আরেকদিকে কোটি কোটি মানুষ আরও দরিদ্র হয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। এরকম বৈষম্য বাড়ানোর জন্য তো আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করি নাই। আজকে আমরা যারা হালাল রোজগার করি আমাদের সংসার চলে না। সাত কোটিরও বেশি আমরা শ্রমিক-কর্মচারী। কিন্তু আমাদের গুরুত্ব নাই।

তিনি শ্রমিকদলের কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা কিভাবে বিএনপিকে সহযোগিতা করতে পারি এবং তার মধ্যে কোন বাঁধা থাকলে কিভাবে দূর করতে পারি। শ্রমিকদলের শক্তি কিভাবে আরও বৃদ্ধি করা সম্ভব এই কর্মশালায় আমাদের আলোচনা করতে হবে।

আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী ও শ্রমিক দলের প্রধান সমন্বয়ক শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ, দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোকেন বাবলু, শ্রমিক দলের ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুস সোবহা।

;

শিক্ষার্থীদের কোটা বাতিলের আন্দোলন সঠিক পথেই চলছে: মির্জা আব্বাস



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মানিকগঞ্জ
বিএনপি'র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ছবি: বার্তা২৪.কম

বিএনপি'র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপি'র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ছাত্র ছিলাম। লেখাপড়া করেছি। আমার বন্ধুরা যথারীতি চাকরি করছে। কোটার কথা কখনো শুনি নাই। কার জন্য কোটা এবং কিসের জন্য কোটা। যে লেখাপড়া ভালো করবে, সে এগিয়ে যাবে এবং চাকরি পাবে। কাজেই শিক্ষার্থীদের কোটা বাতিলের আন্দোলন সঠিক পথেই চলছে।

শনিবার (৬ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে মানিকগঞ্জ ল' কলেজ মাঠে জেলা বিএনপি আয়োজিত বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা আব্বাস।

মির্জা আব্বাস বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের কোটা ভিত্তিতে চাকরির বিষয়ে কোনো আপত্তি নেই। তবে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের চাকরি দেওয়া যাবে না। কোটা পদ্ধতি বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে চাকরি হতে হবে। না হলে এই দেশ মেধাশূন্য হয়ে যাবে। দেশের অফিসগুলোতে মেধাশূন্য মাথাবাহী অফিসার হবে। এই দেশ ভালোভাবে চলতে পারবে না। সুতরাং ছাত্রদের আন্দোলন ভুল পথে নয়, সঠিক পথেই চলছে।

খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়ে মির্জা আব্বাস আরও বলেন, চোর, ডাকাত, ছিনতাইকারী, লুটেরা, বাটপার অনায়াসে মুক্তি পেয়ে যায়। হাজী সেলিমের মতো লোক মুক্তি পেয়ে যায়। বেনজিরের মতো লোক দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কোনো অপরাধ নাই, তিনি নিরপরাধ। তাই কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে মুক্ত করে আনতে হবে।

মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতার সভাপতিত্ব এবং সাধারণ সম্পাদক এসএ জিন্নাহ কবিরের সঞ্চালনায় এসময় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটি ঢাকা বিভাগীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সায়েদুল আলম বাবুল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটো এবং সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদসহ অনেকেই।

;

এবারের ধাক্কা সামলাতে পারবেন না: আমীর খসরু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচনের আগের আন্দোলনে জনগণ ও নেতাকর্মীরা যত না শক্তিশালী ছিল, আজকে আমরা তার চেয়ে বেশি শক্তিশালী। এবারের ধাক্কা সামলাতে পারবেন না।

আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কথায় আছে না, ‘চোরের ১০ দিন গৃহস্থের একদিন’ সেই দিন চলে এসেছে। আজকে যে দুর্দিন সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে, হাতে হাত মিলিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শেখ হাসিনার রেজিমকে পরাজিত করতে হবে।

শনিবার (৬ জুলাই) বিকাল ৩টায় চট্রগ্রাম নগরের কাজীর দেউরী নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে নুর আহম্মেদ সড়কে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে করা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আমীর খসরু বলেন, যারা এ সরকারের পক্ষে কাজ করছে। তাদের কিছু সংবাদপত্র আছে, বুদ্ধিজীবী আছে। তারা বলছে কি জানেন! ওই ২৮ ডিসেম্বর ঢাকাতে আমাদের বিশাল জনসভা। সে জনসভায় গুলি মেরে, গ্রেনেড মেরে, টিয়ারগ্যাস মেরে ২০ থেকে ৩০ লাখ মানুষের জনসভা তারা সেদিন বন্ধ করে দিয়েছে। এজন্য অনেকে বলে, আন্দোলন কি আবার তাহলে নতুন করে শুরু হবে। না, আন্দোলন চলমান আছে। ওই গুলি করে, গ্রেনেড মেরে জনসভা বন্ধ করলে আন্দোলন বন্ধ করা হয় না। আর ভোট চুরি করে ডামি নির্বাচন করে কেউ যদি মনে করে, আন্দোলন শেষ হয়ে গেছে অথবা বিএনপিকে নতুন করে শুরু করতে হবে। আমি পরিষ্কারভাবে বলছি, নতুন করে শুরু করার কিছু নাই। আন্দোলন চলমান আছে। ভয়ে প্রধানমন্ত্রী সকাল বিকাল কি ধরনের মন্তব্য করে বুঝতে পারছেন না। কারণ ওরা জানে বাংলাদেশের ৯৫ শতাংশ মানুষ তাদের নির্বাচন বয়কট করেছে। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাচনও বয়কট করেছে। তারা জানে ওই নির্বাচন করে কোন লাভ হয়নি।

তিনি আরও বলেন, আমি একটা কথা বলতে চাই, অন্যায় যখন আইনে পরিণত হয়, প্রতিরোধ তখন অপরিহার্য। বাংলাদেশে কোন বিচার আছে? নাই। যেখানে কোন বিচার নাই এখানে প্রতিবাদ করে কোন লাভ আছে। তাহলে প্রতিরোধ করতে হবে। আমরা সবাই প্রস্তুত, নেতাকর্মীরা কেউ হাল ছাড়ে নাই। ঘরবাড়ি ভেঙেছে, ব্যবসা হারিয়েছে, চাকরি গেছে, জীবন দিয়েছে মামলার পর মামলা করে যাচ্ছে। পুলিশের হেফাজতে মৃত্যুবরণ করেছে, জেলে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেছে। কেউ হাল ছাড়ে নাই, আরও বেশি শক্তিশালী হয়েছে।

আমীর খসরু বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আমরা রাস্তায় নেমেছি। যতদিন বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাবে না ততদিন গণতন্ত্র, ভোটের অধিকার, মানুষের জীবনের নিরাপত্তা থাকবে না, লুটপাট অব্যাহত থাকবে। বেগম জিয়ার মুক্তির সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের মুক্তি অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। অনেক হয়েছে অনেক শুনেছি অনেক দেখেছি। আর সইবো না। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে।

তিনি বলেন, যারা বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে বন্দি করে ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার জন্য। বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা সাজিয়েছে এবং সেই মামলার মাধ্যমে জেলে পাঠানো থেকে শুরু করে যারা জড়িত। সবাইকে তাদের অপরাধের শাস্তি ভোগ করতে হবে। ওরা অপরাধী অপরাধ করেছে। বেগম খালেদা জিয়া কোন দুর্নীতি করে নাই। যে ট্রাস্টের কথা বলা হয়েছে, সেই ট্রাস্ট থেকে একটি পয়সা বেগম জিয়া অথবা তার পরিবারের কোন সদস্য নেয় নাই। সব টাকা ব্যাংকে জমা আছে, সুদে আসলে চারগুণ হয়েছে এখন। বাংলাদেশের কোন আইনে বেগম খালেদা জিয়ার শাস্তি হয় না। বাংলাদেশের সংবিধানে যে কথাগুলো বলা আছে সে অনুযায়ী বেগম খালেদা জিয়ার শাস্তি হয় না। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ডিক্লারেশন অব হিউম্যান রাইটসে পরিষ্কারভাবে বলা আছে এই অপরাধ কোন দণ্ডনীয় অপরাধ নয়।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, দেশ আজকে যেখানে এসে দাঁড়িয়েছে। গণতন্ত্র ফিরানোর জন্য, মানবাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার জন্য, বাকস্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার জন্য যে নেত্রী স্বৈরাচার এরশাদের বিরুদ্ধে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এককভাবে আন্দোলন করেছেন। বেগম জিয়া কোন আপোষ করেন নাই। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিজের জীবনের বিনিময়ে এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল। এরপর স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছে। এই নেত্রী গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।

‌‌‘১/১১ পরে সামরিক শাসন চালিত যে একটি সরকার ছিল। তারা নির্বাচন করেছে। তারা বেগম খালেদা জিয়াকে অনুরোধ করেছিল, তাদের অন্যায় এবং রাষ্ট্র দখলের বিষয়টা মেনে নেওয়ার জন্য। যেটি শেখ হাসিনা মেনে নিয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া মানে নাই। জেল খেটেছে এখনো চার দেয়ালে বন্দী। এখন কি জন্য জেল খাটতেছেন? আরেক স্বৈরাচারীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়েই। বিশ্বের ইতিহাসে গণতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান নিয়ে যে সব নেতা সংগ্রাম করেছে, জেল জুলুমের শিকার হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আগামী দিনের গণতন্ত্রের ইতিহাসের তার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। যারা ভোট কেড়ে নিয়ে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, তারা ইতিহাসের আস্থা থেকে চলে যাবে।’

রফতানির ১৪ বিলিয়ন ডলার হাওয়া হয়ে গেছে উল্লেখ করে খসরু বলেন, দেশ কোথায় দাঁড়িয়ে আছে। গতকালের পত্রিকায় দেখলাম, রফতানির ১৪ বিলিয়ন ডলার হাওয়া হয়ে গেছে। যা বাংলাদেশের টাকায় ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। সেটা যদি হয় বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধিটা হাওয়া হয়ে যাওয়ার কথা। যে উন্নয়নের রাজনীতির কথা বলতে সেটা কি আর আছে। প্রবৃদ্ধি ৫ থেকে ৪ এর নিচে চলে আসবে। খরচ আর জমার মধ্যে যে ঘাটতি সেটা আরও বেড়ে যাবে।

;

দুর্নীতি দেশের বিষফোঁড়া: কমরেড হারুন



উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)।
ছবি: বার্তা২৪, ময়মনসিংহের গৌরীপুরে দুর্নীতিবিরোধী সমাবেশ ও মিছিল করে সিপিবি

ছবি: বার্তা২৪, ময়মনসিংহের গৌরীপুরে দুর্নীতিবিরোধী সমাবেশ ও মিছিল করে সিপিবি

  • Font increase
  • Font Decrease

দুর্নীতি দেশের ‘বিষফোঁড়া’ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) গৌরীপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক কমরেড হারুন আল বারী।

শনিবার (৬ জুলাই) বিকেলে সিপিবি গৌরীপুর শাখার উদ্যোগে পৌর শহরে কালীখলা এলাকায় দুর্নীতিবিরোধী এক সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এই মন্তব্য করেন কমরেড হারুন আল বারী।

কমরেড হারুন আল বারী বলেন, দুর্নীতির কারণে কৃষক তার ফসলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। দুর্নীতির কারণে বেকারদের কর্মসংস্থান হচ্ছে না। দুর্নীতির কারণে শ্রমিক আজকে দিশেহারা!

হারুন আল বারী আরো বলেন, যারা দেশ পরিচালনা করছেন বা যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে চাচ্ছেন, তাদের দিয়ে দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব নয়। দুর্নীতি বন্ধ করতে হলে দুর্নীতিমুক্ত রাজনীতি চাই, দুর্নীতিমুক্ত দেশ পরিচালনার পদ্ধতি চাই।

সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন সিপিবি ময়মনসিংহ জেলা শাখার সদস্য সুশান্ত দেবনাথ খোকন, সিপিবি গৌরীপুর শাখার সহসাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ, সদস্য মজিবুর রহমান ফকির, সিপিবি গৌরীপুর পৌর শাখার সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর রহমান ও উপজেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি আলী হোসেন প্রমুখ।

সমাবেশের আগে সিপিবি গৌরীপুর শাখার উদ্যোগে পৌর শহরে দুর্নীতিবিরোধী একটি মিছিল বের হয়।

;