আগস্ট শোক নয়, সুখের মাস: নুরুল হক
আগস্ট শোক নয়, সুখের মাস বলে মন্তব্য করে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক বলেছেন, আগস্ট মাস বিপ্লবের মাস।
সোমবার (১২ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি একথা বলেন।
বিগত সরকারের নেওয়া বেশিরভাগ সিদ্ধান্ত গণবিরোধী বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট শোক দিবসসহ যে সব সিদ্ধান্ত রয়েছে আমরা সেগুলো রিভিউ করতে বলেছি উপদেষ্টাদের। গণঅধিকারসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো বলেছে আগস্ট জাতীয় বিপ্লবের মাস। আমরা আগস্ট বিপ্লব হিসেবে এই মাস উদযাপন করতে চাই। আগস্ট শোকের নয়, সুখের মাস কাজেই ১৫ আগস্ট শোক দিবস ও সরকারি ছুটি বাতিল করে স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শক্তি ১৫ আগস্ট থেকে ২১ আগস্ট ঢাকায় তাণ্ডব চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। সেই পরিকল্পনা সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে মোকাবিলা করবে।
গণহত্যায় জড়িত শেখ হাসিনাকে দেশে এনে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে গণ অধিকার পরিষদ।
নুরুল হক বলেন, ড ইউনূস ক্ষমতালোভী না, তার প্রতি আমাদের পূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থা আছে। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রদানের কথা বলেছি।। এই মুহূর্তে চ্যালেঞ্জ স্থিতিশীলতা বজায় রাখা।
এসময় বিচার বিভাগসহ প্রশাসনকে ঢেলে সাজানোর কথা বলেন তিনি। গণঅধিকার পরিষদের পক্ষে প্রধান উপদেষ্টার কাছে ১৪টি দাবি উত্থাপিত করার কথা বলেন তিনি।
দাবিগুলো হলো-
>> বীর শহিদদের সঠিক তালিকা করে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও ক্ষতিপূরণ দেওয়া। প্রতিটা পরিবার থেকে একজনকে চাকরি প্রদান। আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা।
>> দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দলবাজ অফিসারদের চাকরিচ্যুত করে প্রতিটি থানা/উপজেলায় সৎ-সাহসী, দক্ষ ও পেশাদার নতুন ওসি,ইউএনও এবং জেলায় এসপি, ডিসি নিয়োগ।
>> গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপদানে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের সংস্কার ও নতুন সংবিধান রচনা করা।
>> বিচারবিভাগ, প্রশাসনসহ সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসমূহে রাজনীতিকরণ ও দুর্বৃত্তায়নে জড়িতদের চাকরিচ্যুত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে শাস্তি নিশ্চিত করা।
>> বিগত ১৫ বছরে ভিন্নমত নির্মুল গুম, খুন, পিলখানা হত্যা, শাপলা চত্ত্বরের গণহত্যাসহ সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে গণহত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার করে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচার কার্যক্রম শেষ করা।
>> গণহত্যায় জড়িত থাকা ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও তার দোসরদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা।
>> চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ ,ব্যাংক-শেয়ারবাজার লুট, অর্থ পাচার ও বাজার সিন্ডিকেটে জড়িতদের গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করা।
>> দ্রব্যমূল্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে বাজার তদারকিতে প্রশাসন ও ছাত্র-নাগরিকদের সমন্বয়ে বিশেষ টাস্কফোর্স করে নজরদারি।
>> ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের মামলাসহ গত ১৫ বছরে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য দায়েরকৃত সকল মামলা প্রত্যাহার ও বন্দীদের মুক্তি।
>> ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের নেতা ও ফ্যাসিস্টের সহযোগী সাবেক এমপি, মন্ত্রী, আমলাসহ সকল সহযোগীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা।
>> দল নিবন্ধন আইন অনুযায়ী বর্তমানে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের শর্ত যাচাইসহ ইসিতে আবেদনকারী দলসমূহের মধ্যে শর্ত পূরণকারী নতুন দলসমূহকে নিবন্ধন প্রদান।
>> সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বায়ত্তশাসন প্রদান ও অনতিবিলম্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে সুস্থ ধারার ছাত্র রাজনীতির বিকাশে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত ছাত্র সংসদ চালু করা।
>> বিশেষ ক্ষমতা আইন, ডিজিট্যাল নিরাপত্তা আইনসহ সকল নিপীড়নমূলক আইন বিলুপ্ত করা।
>> দ্রুত সময়ের মধ্যে রাষ্ট্র সংস্কার ও জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রদান।