'ফটিকছড়িতে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হতে দেবে না জামায়াত'
ফটিকছড়ি থানা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি ইউসুফ বিন সিরাজ বলেছেন, ফটিকছড়িতে অন্তত রাজনৈতিক প্রতিহিংসা আমরা জামায়াতে ইসলামী হতে দেব না। আমাদের সাথে কারও দ্বিমত নেই, সবাই যার যার দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে। বিএনপি কাজ করেছে। আর আওয়ামী লীগ যদি জাতির ক্ষতি না করে তাহলে তারাও আসুক। আমরা কাউকে শত্রু মনে করি না। আমরা আধিপত্য বিস্তাররের রাজনীতি করি না।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলা সদরে একটি রেস্টুরেন্টে এ সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
দীর্ঘ ১৬ বছর পর ফটিকছড়িতে প্রথম প্রকাশ্যে সাংবাদিকদের নিয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ফটিকছড়ি পৌরসভা শাখা।
পৌর জামায়াতের সভাপতি মো. শোয়াইব বলেন, স্বৈরাচারী হাসিনার ফ্যাসিজমের হামলা-মামলা, খুন রাহাজানি ছিনতাই-চাঁদাবাজি ও ছাত্রলীগের কিশোর গ্যাংয়ের ইভটিজিং এর শিকার হয়েছেন মা বোনেরা। ৫ আগস্টের পর ফ্যাসিজমের দোসরদের প্রতি মনের ক্ষোভ প্রকাশ করা স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু আমরা জামায়াত ও ছাত্রশিবির জনগণকে আইন হাতে তুলে নেওয়া থেকে বিরত রেখেছি। আওয়ামী লীগের যেসকল নেতাকর্মী ফৌজদারি অপরাধে জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তির জন্য আমরা প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে বদ্ধ পরিকর।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে থানা জামায়াতে সেক্রেটারি ইউসুফ বিন সিরাজ বলেন, জামায়াত ইসলাম নির্বাচনে বিশ্বাসী। দেশে নির্বাচনে পরিবেশ সৃষ্টি হলে জামায়াত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে ইনশাল্লাহ।
তরিকত ফেডারেশননের চেয়ারম্যান সাবেক এমপি নজিবুর বশর মাইজভান্ডারির বিরুদ্ধে কেন মামলা দেওয়ার হচ্ছে না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। প্রশাসন দ্রুত উনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলে আমরা আশা করছি। আমাদের ফটিকছড়ি থেকে তার বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনো মামলা করা হয়নি। উনিও ফটিকছড়ি থানায় মামলা করেনি। চাঁদপুরে উনার এক লোক দিয়ে আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাইদীর নামে মামলা দিয়েছিলেন। সেজন্য আমরা এখানে কোনো মামলা করিনি। যেহেতু ঢাকা চট্টগ্রামে মামলা হয়েছে, আমরা চাই তাকে গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা হোক।
জামায়াতের কেউ চাঁদাবাজি করলেত দলীয় ব্যবস্থার কখা উল্লেখ করে ইউসুফ বিন সিরাজ বলেন, আমি স্পষ্ট করে বলে দিচ্ছি, যদি জামায়াতে বা ছাত্রশিবিরের নাম দিয়ে কোনো অপর্কম বা চাঁদাবাজির অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেন। তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত হবে এবং তাকে আমরা আইনের হাতে তুলে দেব।
সভায় জামায়াত নেতারা বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের সাধারণ মানুষ বৈষম্যহীন এক নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে। আগামীতে জামায়াতে ইসলামী এই বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থার জন্য কাজ করে যাবে। বিগত সময়ে সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেনি। তারাও আমাদের মত নির্যাতিত হয়েছে। আমরা সব সময় সাংবাদিকদের পাশে থাকতে চাই। আমরা প্রত্যাশা করি আমাদের ইতিবাচক কর্মকাণ্ড লেখনির মাধ্যমে জাতির কাছে তুলে ধরবে।
ফটিকছড়ি পৌরসভা জামায়াতের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আখতারুজ্জামান নুরের সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি জিয়াউল হক রুবেল, সহ-সভাপতি মাস্টার মো. আইয়ুব ও পেশাজীবী নেতা এইচ এম নিজাম উদ্দিন প্রমুখ।