বর্তমান সরকারের ভিন্ন কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডা নেই: মির্জা ফখরুল
বর্তমান সরকারের ভিন্ন কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডা নেই বলে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সরকারের যিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি সারাবিশ্বে সমাদৃত। তিনি নিজেই বলেছেন আমার কোনো রাজনৈতিক ইচ্ছা নেই। আপনারা যে দায়িত্ব দিয়েছেন সেই দায়িত্ব পালন করতে চাই।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এই কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বিশ্বাস করি এই সরকারের নিজস্ব কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডা নেই। আমরা এটাও বিশ্বাস করি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তার সময়টাকে সদ্বব্যবহার করে অতি দ্রুত যৌক্তিক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করবে। এটা আমাদের প্রত্যাশা ও জনগণ এটাই চাই।
তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার হাত থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য যারা নিহত হয়েছেন, গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। আমি শ্রদ্ধা জানাতে চাই সেইসব রাজনৈতিক দলগুলোকে যেদলগুলো দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামে শেখ হাসিনার পতনে ছিলো।
আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী দল উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করতে পেরে স্বস্তি প্রকাশ করছি। কারণ আগে সভা সমাবেশ করতে যে ভীতির মধ্য থাকা লাগতো এখন আর সেটা হয়না। আওয়ামী লীগ একটি সন্ত্রাসী দল। এই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে দেশের জনগণ বিজয় অর্জন করেছে।
আওয়ামী লীগ বার বার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে বলে মির্জা ফখরুল বলেন, এই মূহুর্তে আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। যে স্বপ্ন দেখেছিলাম ১৯৭১ সালে। কিন্তু তখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন করে নাই। সেই সময় তারা হত্যা লুন্ঠন দুর্নীতি করে দেশটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। সেইসময় বাকশালের পরিবর্তন হয়েছে রক্তাক্ত পরিবেশের মধ্য দিয়ে।
সার্চ কমিটি গঠন নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার নির্বাচন কমিশন গঠন করার জন্য একটি সার্চ কমিটি গঠন করেছেন। আমাদের আশা ছিলো সার্চ কমিটি গঠনের আগে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন কিন্ত তারা সেটা করেনি। এইজন্য আমরা এটাকে বড় ধরনের কোন সমস্যা মনে করিনা। আমরা চাই দ্রুত নির্বাচন কমিশন হোক, সেই সাথে দ্রুত নির্বাচন আয়োজন করুক। তিনমাসের মধ্য যদি আউয়ালরা ও হুদারা নির্বাচন আয়োজন করতে পারে তাহলে আপনারা কেন পারবেন না।
প্রধান উপদেষ্টার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা বলবো ড. ইউনূসকে বাংলাদেশের মানুষ আপনাকে ভালোবাসে, আপনাকে সম্মান দিচ্ছে এবং আগামীতেও দিবে। আপনার কাছে শুধু একটাই অনুরোধ আপনাকে ছাত্র-জনতা যে জায়গায় বসিয়েছে সেটা যেনো কোনোভাবেই নষ্ট না হয় সেদিকে সজাগ থাকবেন।
রাজনৈতিক যুদ্ধ কখনো শেষ হয় না জানিয়ে তিনি বলেন, যুদ্ধ কখনো শেষ হয় না, রাজনৈতিক সংগ্রাম কখনো শেষ হয় না। এই সংগ্রাম চলতে থাকে। সংস্কার কার্যক্রম তেমনি চলমান থাকে। আমরা প্রত্যাশা করবো সরকার দ্রুত সংস্কার কমিশন থেকে রিপোর্ট নিয়ে জনগণের সামনে তুলে ধরবেন এবং সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। সব সংস্কার কিন্তু জনগণের দ্বারা স্বীকৃত হতে হবে এবং জনগণের সেটা মেনে নিতে হবে। জনগণের মতামত ছাড়া কোন সংস্কার দীর্ঘায়িত হবে না। ওপর থেকে চাপিয়ে দিয়ে কোনো কিছুর সফলতা আসে না।
এনপিপির চেয়ারম্যান ড ফরিদুজ্জামান ফরহাদ এর সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পার্টি জাগপার চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমান প্রমুখ।