অতিসত্বর নির্বাচন হওয়া দরকার: আমির খসরু
জনগণের সংসদে সংস্কার কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য নির্বাচন অতিস্বত্তর হওয়া দরকার বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপির চেয়াপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বিএনপির লিয়াঁজো কমিটির বৈঠক শেষে তিনি একথা বলেন৷ এরপরে গণফোরাম, বাম গণতান্ত্রিক ঐক্য ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সঙ্গেও আলোচনা করে দলটি।
তিনি বলেন, নির্বাচন অতিস্বত্তর হওয়া দরকার। একটি নির্বাচিত সরকার যত তাড়াতাড়ি ক্ষমতায় আসবে বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, বৈদেশিক যে বিষয়গুলো সম্মুখীন হচ্ছি সেগুলো নির্বাচিত সরকারের পক্ষে দ্রুত সমাধান দেয়া সম্ভব। একটি সংসদ সরকারের মাধ্যমে আমাদের এই কাজগুলো করতে হবে।
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমাদের চলমান যে কাজগুলো বাকি আছে তার মধ্যে আছে ৩১ দফা সংস্কার বাস্তবায়ন। সে বিষয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি। প্রতিনিয়ত আমরা আমাদের সাথে যারা যুগপৎ আন্দোলনে ছিলো, ওনারাও এই কাজটা করছেন, আমরাও এই কাজটা করছি। ৩১ দফা সংস্কার বাস্তবায়ন করার জন্য যে বিষয়টা ছিলো সেটা আমরা আলোচনা করেছি। সেটার জন্য সবার যেটা প্রত্যাশা সেটা হচ্ছে, দ্রুত একটি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সংসদ, নির্বাচিত সরকার। যারা আগামী দিনে ৩১ দফা বাস্তবায়ন করবে। জনগণের কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যেই বিষয়ে সেটা আমরা বাস্তবায়ন করবো।
সংস্কারের বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, সংস্কার করতে হবে সংসদে। জনগণের নির্বাচিত সংসদ সেই সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন করবে। আমাদের ৩১ দফা আছে তার বাইরেও অন্যান্য দলের নির্বাচিত যে সমস্ত সংস্কার প্রস্তাব আসবে সেগুলো আমরা সংসদে পেশ করবো। সংসদে আলোচিত হবে এবং বর্তমানে যে সংস্কার কমিটিগুলো করা হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের মাধ্যমে তারা যদি কোন সংস্কার প্রস্তাব রাখতে চায়, করে যায় আগামী দিনের জন্য তাদের সংস্কার প্রস্তাবও আমরা সংসদে আলোচনা করবো। আমরা সংসদে সেটা আলোচনা করবো, পেশ করবো, জনগনের ম্যান্ডেটের মাধ্যমে সংসদ সে সিদ্ধান্ত নিবে আগামী দিনে।
গণ ফোরাম সভাপতি মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, আমরা প্রথম থেকেই যে একটা গণতান্ত্রিক আন্দোলন করে আসছি, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করা এবং যেখানে প্রত্যেকটা মানুষ তার গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারবে৷ যেটা গত ১৫ বছর আমরা করতে পারিনি৷ আজকে সে সুযোগটা আমাদের এসেছে। দেশের ছাত্র-যুবক-জনতা সমস্ত রাজনৈতিক সংগঠন সম্মিলিতভাবে আন্দোলন করে আজকে সেই অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, সরকারকে অবশ্যই একটি নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ করতে হবে। সেটি দ্রুত করলে রাজনৈতিক আস্থা, বিশ্বাস আরও বাড়বে। এই রাজনৈতিক দলগুলো কেউ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছে না। যারা রাজনীতি করে তারা স্বাভাবিকভাবেই নির্বাচনের কথা বলতেই পারে। নির্বাচনের কথা শুনলে সরকারের এক ধরণের অস্বস্তি মনোভাব আমরা দেখছি এটি কোনভাবেই কাম্য না৷
তিনি বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি সরকারের ভিতরেই ব্যাপকভাবে সমন্বয়ের ঘাটতি রয়েছে। আমরা সরকারকে বলতে চাই, আমরা অবশ্যই আপনাদের সহযোগিতা করবো কিন্তু ৪ মাস অতিবাহিত হয়েছে কিন্তু খুব একটা সফলতা এখনো লক্ষ্য করছি না। প্রত্যেকটা জায়গায় ব্যর্থ হয়েছেন, জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ন্ত্রণে আসে নাই। সরকারি বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগের যারা সুবিধাবাদী তারা আরও বেশি সুবিধা পাচ্ছে। ডিসি-এসপি থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন চলছে।