সংসদীয় দলের নেতার প্রশ্নে জাপায় মতপার্থক্য



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সংসদীয় দলের নেতা ও রংপুর-৩ (সদর) আসনের উপ-নির্বাচনের প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে পারছে না জাতীয় পার্টি। রওশন এরশাদ চান, নিজেই সংসদীয় দলের নেতা হতে। আর জিএম কাদের-ই হোক দলটির সংসদীয় তথা বিরোধীদলীয় নেতা এমনটাই চাচ্ছেন তার অনুসারীরা।

কাদের অনুসারীরা এখানে পার্টির গঠনতন্ত্রকেও টেনে আনছেন ঢাল হিসেবে। পার্টির গঠনতন্ত্রে বলা আছে, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানই হবেন সংসদীয় দলের প্রধান। প্রয়াত এরশাদের একচ্ছত্র নির্দেশনায় চলা দলটির গঠনতন্ত্রে এই ধারা যুক্ত করা হয় দলের অষ্টম কাউন্সিলে (২০১৬ সাল)। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পরে বিরোধীদলীয় নেতার আসনে বসতে রাজি ছিলেন না প্রয়াত এরশাদ। সেই সুযোগে বিরোধীদলীয় নেতা হয়েছিলেন তখনকার দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ।

প্রথমে বিষয়টি সহজভাবে নিলেও পরে বিষয়টি এরশাদের জন্য নানা রকম বিড়ম্বনার সৃষ্টি করেছিল। বিশেষ করে বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানরা এলে প্রটোকল অনুযায়ী রওশনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন। আর উল্টো ঘটতো এরশাদের ক্ষেত্রে, সাক্ষাৎ চেয়ে উল্টো ধরনা দিতে হয়েছে দু-একটি ক্ষেত্রে।

নানা কারণে বছর খানেক পরে এরশাদ নিজেই বিরোধীদলীয় নেতা হতে চেয়েছিলেন। তখন বেঁকে বসেছিলেন রওশন এরশাদ। সে সময়ে দলের সংসদ সদস্যরাও রওশনের পেছনে একাট্টা ছিলেন। এরশাদ চাইলেও সরাতে পারেননি রওশনকে। দশম সংসদের শেষদিন পর্যন্ত বিরোধীদলীয় নেতার চেয়ারে ছিলেন রওশন।

সেই ক্ষোভ থেকেই ২০১৬ সালের কাউন্সিলে দলের গঠনতন্ত্রে সংশোধনী এনে পার্টির চেয়ারম্যানকে পদাধিকার বলে সংসদীয় দলের নেতা বানানো হয়। এখন সেই সংশোধনীকে সামনে আনা হচ্ছে সংসদীয় দলের নেতা প্রশ্নে।

কিন্তু রওশন এরশাদের কাছে গঠনতন্ত্র কি পাত্তা পাবে? তিনি ইতোমধ্যেই সংসদীয় দলের নেতা হতে চান বলে নিজের আগ্রহের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। এরশাদের মৃত্যুর পর জিএম কাদের তার বাসায় দেখা করতে গেলে খোদ রওশনই এই আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। বলেছেন, 'তুমি পার্টির চেয়ারম্যান হয়ে দলকে সংগঠিত কর। আমি আর কয়দিন বাঁচব। বিরোধীদলীয় নেতা হই। আমি মরে গেলেতো তুমিই সব দেখবে'।

জানা যায়, প্রথমদিকে জিএম কাদেরেরও নাকি এতে তেমন আপত্তি ছিল না। কিন্তু এই নিয়ে অদূর ভবিষ্যতে উভয় সংকট দেখতে পাচ্ছেন তার অনুসারীরা। রওশন যদি সংসদীয় দলের নেতা হন, তখন সংসদ সদস্যরা হবেন রওশনমুখী। এতে দলের মধ্যে নেতৃত্বের সংকট তৈরি হতে পারে। এমনিতেই অনেক সিনিয়র নেতা জিএম কাদেরের ডাকে সেভাবে সাড়া দিচ্ছেন না। আবার বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানরা বাংলাদেশ সফরে এলেও প্রটোকল পাবেন না জিএম কাদের।

এ কারণে বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন জিএম কাদেরের অনুসারীরা। কিন্তু ভাবলেই কি সব হয়ে যাবে? এমনটি ভাবতে পারছেন না অনেকে। রওশন বেঁকে বসলে অনেক কিছুই ঘটতে পারে। তাতে সলতে জোগান দেওয়ার জন্য অনেক সিনিয়র নেতাই গোঁফে তা দিচ্ছেন। অনেক সংসদ সদস্যও রয়েছেন এই দলে। আবার কেউ কেউ রওশনের সঙ্গে রয়েছেন ২০১৪ সালে সংসদ সদস্য করার কৃতজ্ঞতা থেকে।

জোর করে কিছু করতে গেলে হিতের বিপরীত ঘটতে পারে। বিশেষ করে গঠনতন্ত্রের দোহাই দিয়ে জিএম কাদের বিরোধীদলীয় নেতা হতে চাইলে। রওশনের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির নতুন কমিটি ঘোষণার ইঙ্গিত দিয়েছেন তার একাধিক অনুসারী। এ জন্য বিশেষ ব্যক্তিত্বের গ্রিন সিগন্যালের অপেক্ষায় রয়েছেন উভয় শিবির। এরই প্রেক্ষিতে যোগাযোগ রক্ষা করেও চলছেন বলে আভাস পাওয়া গেছে।

একই রকম সংকটময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে রংপুর-৩ (সদর) আসনের উপ-নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া নিয়ে। এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য হয়ে পড়া এই আসনে রওশন এরশাদ তার ছেলে সা'দ এরশাদকে (রাহগীর আল মাহি সাদ এরশাদ) প্রার্থী করতে চান।

অনেকদিন ধরেই ছেলে সা'দকে রাজনীতিতে আনার চেষ্টা করে যাচ্ছেন রওশন। বিগত সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম সদর আসন থেকে মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়ে দাবি তুলেছিলেন। রওশন এরশাদ চান, সা’দই হোক জাতীয় পার্টিতে এরশাদের উত্তরসূরি।

মালয়েশিয়া প্রবাসী সা’দ বিগত নির্বাচনের আগে থেকেই সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। এরশাদ যখন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে অন্তিম শয্যায়, সরব দেখা গেছে তাকে। মা রওশন এরশাদের সঙ্গে প্রায় হাসপাতালে যেতেন। ছবি তুলে তা মিডিয়ায় পাঠানো হতো। বাবা এরশাদের মরদেহের সঙ্গে রংপুর চলে যান। পরদিন সেখানে কবর জিয়ারত করেন। এবার ঈদের নামাজও পড়েছেন রংপুরে।

কিন্তু রওশন এরশাদের এই অভিপ্রায়ে ছাড় দিতে রাজি নন রংপুরের স্থানীয় নেতারা। কাদেরপন্থী বলে পরিচিত রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সেক্রেটারি এসএম ইয়াসির নিজেও প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন। এছাড়া আরও হাফ ডজন আগ্রহী প্রার্থী রয়েছেন জাপার দুর্গ খ্যাত এই আসনে।

অসুস্থ এরশাদ যখন কাদেরকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদ ও বিরোধীদলীয় উপনেতার পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন তখন প্রকাশ্য আন্দোলনে নেমেছিলেন ইয়াসিররা। আগে যে গ্রুপিং কিছুটা গোপন ছিল ওই আন্দোলনে তা প্রকাশ্য হয়ে পড়ে। রংপুরের নেতাদের কাঁধে সওয়ার হয়ে জাতীয় পার্টির মসনদে ফেরেন জিএম কাদের। তবে ভাবির মন যোগাতে গিয়ে জিএম কাদের কি পারবেন অন্যদের উপেক্ষা করতে?

রংপুর জাপার নেতারা মনে করেন, এটা করলেও আসনটি হারাতে হতে পারে। কারণ সা'দের বিষয়ে রংপুরের সাধারণ ভোটারদের মধ্যে তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। এমনকি রওশনের বিষয়েও অনেকের অ্যালার্জি রয়েছে। ২০০৮ সালের উপ-নির্বাচনে রংপুর থেকে নির্বাচিত হলেও রংপুরবাসী তাকে সেভাবে কাছে পায়নি।

শনিবার (১৭ আগস্ট) জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম ও সংসদ সদস্যের যৌথসভায় বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। বৈঠক শেষে পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, 'রংপুর উপ-নির্বাচনের প্রার্থী প্রশ্নে একটি কমিটি করে দেওয়া হবে। তারাই চূড়ান্ত করবেন প্রার্থী। এর আগে স্থানীয় নেতাদের কাছ থেকে চার জনের নাম প্রস্তাব চাওয়া হবে। সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচন প্রশ্নেও ওই কমিটি সিদ্ধান্ত দেবেন'।

তবে দলের মধ্যে কোনো বিভেদ নেই বলেও দাবি করেন জাপা মহাসচিব।

   

আরও ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করল বিএনপি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের আরও ৫৫ জন নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) চার জন ও বুধবার (১৫ মে) ৫১ জনকে বহিষ্কার করা হয়।

বৃহস্পতিবার দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

গত ৮ মে থেকে প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শুরু হয়। এই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিচ্ছে না। কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নেতাকর্মীরা। এ কারণে প্রথমে তাদের শোকজ এবং পরে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে বহিষ্কার করছে দলটি। তবে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নির্বাচন থেকে ফিরে আসায় কয়েকজনের বহিষ্কারাদেশ তুলেও নেওয়া হয়েছে।

প্রথম পর্বে ৮০ জনকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ মিলিয়ে অন্তত ১৪৯ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করে দলটি। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ২০৪ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

;

সর্বস্ব খুইয়ে স্বদেশে বঙ্গবন্ধুকন্যা ও একটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন



রুহুল আমিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
সর্বস্ব খুইয়ে স্বদেশে বঙ্গবন্ধুকন্যা ও একটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন

সর্বস্ব খুইয়ে স্বদেশে বঙ্গবন্ধুকন্যা ও একটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন

  • Font increase
  • Font Decrease

সেদিন ছিল কালবৈশাখীর তাণ্ডব। সকাল থেকেই প্রচণ্ড ঝড়বৃষ্টি, আছে সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা। তবে সব কিছু উপেক্ষা করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে বিকাল সাড়ে চারটায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে নিয়ে কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে অবতরণ করে ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের ৭০৭ বোয়িং বিমানটি।

মুষলধারার বৃষ্টি-বাদলা উপেক্ষা করে গণতন্ত্রকামী লাখ লাখ মানুষের মিছিল এসে থামে বিমানবন্দরের সামনে। মানুষের স্রোতে ভেঙে পড়ে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। রানওয়ের দুই পাশে লাখ লাখ মানুষ, তার মাঝে পদ্ম হয়ে নেমে আসলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

বঙ্গবন্ধুকন্যা যখন নেমে আসেন বিমান থেকে, তার চোখে পানি, সে পানি মুছে দিচ্ছে বৃষ্টি হয়ে নেমে আসা আকাশের কান্না। সেই সাথে 'জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু' স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে চারপাশ। কালো ডোরাকাটা তাঁতের মোটা শাড়ি পরা শেখ হাসিনা দীর্ঘ নির্বাসন জীবন কাটিয়ে আবারও পা রাখেন দেশের মাটিতে। নেমে এসে মিশে গেলেন মানুষের স্রোতে।

সর্বস্ব হারিয়ে মেয়ে পুতুলকে নিয়ে সেদিন দেশে ফিরেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। তবে বাবা-মা, ভাইদের হারালেও তিনি যে একা নন বরং পুরো দেশই তার পরিবার, সে কথা মনে করিয়ে দিতে ভুল করেনি উপস্থিত জনতা। সেদিনের সে জনতা ‘পিতৃহত্যার বদলা নিতে/লক্ষ ভাই বেঁচে আছে, শেখ হাসিনার ভয় নাই/রাজপথ ছাড়ি নাই' এমনই নানা স্লোগানে শেখ হাসিনাকে বরণ করে নেন একজন বোন হিসেবে, একজন পরিবারের পরম আপনজন হিসেবে।

একদিকে কালবৈশাখীর চোখরাঙানি অন্যদিকে লক্ষ জনতার একবার বঙ্গবন্ধুরকন্যাকে দেখার তৃষ্ণা। এর মধ্য দিয়ে সেদিনের ঢাকা শহর হয়ে উঠে এক স্তব্ধ নগরী। যে কারণে বিমানবন্দর থেকে বনানী হয়ে শেরে বাংলা নগরে আসতে সময় লেগে যায় সাড়ে তিন ঘণ্টারও বেশি। কিছু দুষ্কৃতিকারীর হাতে পরিবারের সবাইকে হারালেও প্রতিশোধের আগুনে জ্বলে ওঠেননি তিনি। বরং হাঁটলেন পিতার দেখানো পথে। তাই তো সংবর্ধনা মঞ্চে দাঁড়িয়ে জনতার উদ্দেশ্যে কন্যা তার বাপের মত করেই বললেন, 'পিতা-মাতা, ভাই রাসেল সবাইকে হারিয়ে আমি আপনাদের কাছে এসেছি। আমি আপনাদের মাঝেই তাদের ফিরে পেতে চাই।’

আপ্লুত শেখ হাসিনা সেদিন আরও বলেছিলেন, ‘সব হারিয়ে আমি আপনাদের মাঝে এসেছি, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তার আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতা হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই। আমার আর হারাবার কিছু নেই।’

তিনি বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের নেত্রী হওয়ার জন্য আসিনি। আপনাদের বোন হিসেবে, মেয়ে হিসেবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী কর্মী হিসেবে আপনাদের পাশে থাকতে চাই। জীবনের ঝুঁকি নিতেই হয়, মৃত্যুকে ভয় করলে জীবন মহত্ব থেকে বঞ্চিত হয়।’

সেই যে প্রতিজ্ঞা, পিতার দেখানো স্বপ্ন পূরণের প্রতিজ্ঞা, সে প্রতিজ্ঞা পূরণে দেশে ফিরেই হাল ধরেন আওয়ামী লীগের। নানা লড়াই, সংগ্রাম ও প্রতিবন্ধকতা ডিঙিয়ে শক্তিশালী করেন দলকে। শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে আস্থা ফিরিয়ে আনেন নেতাকর্মীদের মাঝে। সে আস্থার সুফল পান ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। বিজয়ী হয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।

ক্ষমতায় এসেই মনোযোগী হন দেশ গঠনে, বাবার স্বপ্ন পূরণে। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত মাত্র পাঁচ বছরে খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত করেন। করেন গঙ্গা চুক্তি। কোন তৃতীয় পক্ষ ছাড়ায় অশান্ত পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি ফিরিয়ে আনতে করেন শান্তি চুক্তি। এছাড়াও বিদ্যুৎ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সব জায়গায়, জনগণের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নে গ্রহণ করেন নানা কার্যক্রম।

তবে ২০০১ সালের নির্বাচনে আবারও ক্ষমতায় আসে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার। এরপর আবারও ঘটে ১৯৭৫ সালের মত আরেকটি নিকৃষ্ট ঘটনা। তখনকার বিরোধীদলীয় নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে হয় গ্রেনেড হামলা। তবে তার সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়ান নেতাকর্মীরা। প্রাণে বেঁচে যান তিনি। তবে নিহত হন দলটির ২৪ জন নেতাকর্মী।

তবে এসব কিছুতেও দমে যাননি জাতির পিতার কন্যা। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় পিছপা হননি এক পাও। তাই তো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে 'মাইনাস-টু ফর্মুলা'ও টলাতে পারেনি তাকে। সব ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করে দিয়ে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আবারও বিপুল ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়ে দ্বিতীয় বারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। তারপর থেকে টানা ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে জাতির পিতার কন্যার নেতৃত্বে দেশ চালানোর দায়িত্বে আছে আওয়ামী লীগ।

এই সময়ের মধ্যে তার নেতৃত্বের কারণেই স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গঠন করে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের। বাংলাদেশ শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং চিকিৎসাসেবা, তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি, অবকাঠামো, কৃষিসহ সব ক্ষেত্রেই উন্নতি লাভ করেছে। হয়েছে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ।

বঙ্গবন্ধুকন্যার হাত ধরে সব বাধা অতিক্রম করে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার যথার্থ বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলছেন তিনি। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, স্বপ্নের পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলের মতো মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন। মহাকাশে উড়িয়েছেন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট- যা ছিল এক সময় কল্পনারও অতীত। স্বপ্ন দেখাচ্ছেন ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ গড়ার।

;

আওয়ামী লীগ কারও দয়ায় ক্ষমতায় আসেনি: নানক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪. কম, ঢাকা
আওয়ামী লীগ কারো দয়ায় ক্ষমতায় আসেনি: নানক

আওয়ামী লীগ কারো দয়ায় ক্ষমতায় আসেনি: নানক

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কোনোদিন কারও দয়ায় ক্ষমতায় আসেনি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

সেমিনারের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম। 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কোনোদিনও কারো দয়ায় ক্ষমতায় আসেনি। আওয়ামী লীগ ৭০ এর নির্বাচনে পাকিস্তানি শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, জেনারেল আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে লড়াই করে জনতার জয়ের মধ্য দিয়ে ৭০’র নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জেনারেল জিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে নিরবিচ্ছিন্ন লড়াই করেছে।

তিনি আরও বলেন, হাজার হাজার সামরিক অফিসারকে আপনাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান হত্যা করেছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আপনারা ক্ষমতায় থাকাকালীন গঙ্গা পানির চুক্তি সমাধান করেননি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৪৪ হাজার কিউসেক পানি অর্জন করেছে। বঙ্গবন্ধুর রক্ত যার ধমনীতে আছে, সেই রক্তের উত্তরাধিকার শেখ হাসিনা স্বার্থরক্ষার ক্ষেত্রে কারো সঙ্গে কোনো আতাত করে না।

বিএনপির লজ্জা নেই এমন মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, ওরা বেহায়া, ওদের লজ্জা নেই। মির্জা ফখরুল আপনারা যা বলবেন বুঝে শুনে বলবেন। ইট মারলে পাটকেল খাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকবেন।

বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সভাপতি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া, দৈনিক বাংলা ও নিউজবাংলা২৪ এর নির্বাহী পরিচালক এবং বঙ্গবন্ধু গবেষক মো. আফিজুর রহমান, বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী প্রমুখ।

;

শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের খাবার বিতরণ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এতিমখানায় খাবার বিতরণ করেছে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপ-কমিটি।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) তেজগাঁওয়ের রহমতে আলম ইসলাম মিশন এতিমখানায় সুবিধাবঞ্চিতদের মাঝে এসব খাবার বিতরণ করে দলটি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

এসময় অতিথিরা বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছিলো দুষ্কৃতকারীরা। তবে সে সময় জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসেছিলেন। তিনি ফিরে এসেছিলেন বলেই আজকে দেশের এতো উন্নয়ন। শৃঙ্খল মুক্ত গণতন্ত্র। স্বাধীন নির্বাচন কমিশন। তিনি ফিরে এসেছেন বলেই আজকে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর হবার স্বপ্ন দেখছি।

আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম প্রমুখ।

;