সমীর চন্দ ও উম্মে কুলসুম স্মৃতির সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
কৃষক লীগের নতুন সভাপতি সমির চন্দ এবং সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি। বুধবার (৬ নভেম্বর) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত সংগঠনের ১০ম জাতীয় কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশনে তারা নির্বাচিত হন।
সনাতন সমাজ কল্যাণ সংঘের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ এর আগে কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন ও বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদের কার্যনির্বাহী সদস্য।
কুমিল্লার সন্তান সমীর ১৯৮২-৮৩ সেশনে বাংলাদেশ কৃষি ইনস্টিটিউটে (বর্তমানে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়) কৃষি বিজ্ঞানে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীতে ভর্তি হয়ে ১৯৮৬ সালে (১৯৮৯ সালে অনুষ্ঠিত) বিএসসি এজি (সম্মান) ডিগ্রি অর্জন করেন। ছাত্র জীবনে তিনি ১৯৮৭-৮৯ মেয়াদে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বাংলাদেশ কৃষি ইনস্টিটিউট (বর্তমানে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়) শাখার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং সেই সময় ছাত্রদের ন্যায় সংগত অধিকার আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। ১৯৯৬-৯৮ মেয়াদে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ ঢাকা মেট্রোপলিটনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে কৃষিবিদদের চাকরির সংস্থানসহ পেশাগত উৎকর্ষ সাধনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন তিনি।
তিনি বাংলাদেশ কৃষক লীগের ১৯৯৮-২০০৭ মেয়াদে কৃষি উপকরণ সম্পাদক এবং ২০০৭-২০১২ মেয়াদে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি পেশাজীবী সংগঠন কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের ২০০৯-২০১২ মেয়াদে সাংগঠনিক সম্পাদক ও ২০১২-২০১৬ মেয়াদে যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৯০ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদের প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
সমীর ১৯৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, ১৯৯৬ এর ভোটের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে অংশ নেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ক্ষমতায় ছিলেন না, তখন তার ওপর জেল, অত্যাচার, নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন তিনি। শেখ হাসিনার মুক্তির দাবিতে বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদ, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ এবং কৃষক লীগের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে বিবৃতি, মানববন্ধনসহ জোর গণ-আন্দোলন গড়ে তোলায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। এছাড়া তিনি ০৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও এবং হরতালের দিনগুলোতে তেজগাঁওয়ের রাজপথে নেতাকর্মীদের সংগঠিত করে প্রতিবাদ মিছিলে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
অন্যদিকে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার সন্তান অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতিও কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। গাইবান্ধা-জয়পুরহাট সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আইনজীবী উম্মে কুলসুম স্মৃতি ১৯৬৩ সালের ১ জানুয়ারি পলাশবাড়ী সদরে জামালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মরহুম মোকসেদ আলী প্রধান মধু ও মা মরহুমা মাহমুদা বেগম প্রধান। তার স্বামী মো. মাহবুর রহমান একজন সফল ব্যবসায়ী।
ছাত্রজীবন থেকেই স্মৃতি ছাত্রলীগের রাজনীতে সক্রিয়। ছাত্রজীবন শেষে একজন আইনজীবী হিসেবে ১৯৯৩ সালে ঢাকা বারে যোগদান করেন এবং আওয়ামী রাজনীতি তথা আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত হন। বিগত ২০০০ সালে ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সর্বাধিক ভোটে কার্যকরী পরিষদের এক নম্বর সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৬-০৭ সালের ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কার্যকরী পরিষদের সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হন, ২০০৩ সালে বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে যোগদান করেন সাধারণ সদস্য হিসেবে। এরপর আইন বিষয়ক সম্পাদক ও পরে ২০১২ সালে কাউন্সিল অধিবেশনে কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বর্তমান সময়ে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গাইবান্ধা জেলা শাখার সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এছাড়াও জাতীয় সংসদের কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারিয়ান অ্যাসোসিয়েশন (সিপিএ) বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সদস্য।
২০০১ সালে জাতীয় নির্বাচনের পর বিএনপি-জামায়াত জোট বিরোধী প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে সংগঠনে, মিছিলে, রাজপথ অবরোধ কর্মসূচিতে তিনি অগ্রণী ভূমিকা রাখেন।
নিয়মিত আইনজীবী হিসেবে আইন পেশায় নিয়োজিত আছেন তিনি। ২০০১ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (সুপ্রিম কোর্ট বারের) সদস্য পদ লাভ করেন। আওয়ামী সরকারের বিভিন্ন সময়ে তিনি এপিপি, এডিশনাল পিপি ও পিপি (দুর্নীতি দমন কমিশন) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কলেজ জীবনে খেলাধুলায় বিশেষ করে কাবাডি খেলায় তিনি জেলার চ্যাম্পিয়ন ছিলেন।