ভারতকে বাদ দিয়ে মুজিব বর্ষ পূর্ণতা পায় না
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রধান মিত্র দেশ ভারত। কাজেই ভারতকে বাদ দিয়ে মুজিব বর্ষ পূর্ণতা পায় না। নরেন্দ্র মোদিকে আমরা আমন্ত্রণ জানিয়েছি ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে। সে ভারত থেকে প্রতিনিধিত্ব করবে, ভারতকে বাদ দিয়ে মুজিব বর্ষ পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে না।
বুধবার (৪ মার্চ) ধানমন্ডি আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্র বই হস্তান্তর শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন।
নরেন্দ্র মোদির আগমনের বিরোধিতাকারীদের উদ্দেশ্যে কাদের বলেন, মুজিব বর্ষে ভারতের প্রতিনিধিত্ব থাকতেই হবে। আসলে যারা আজকে নরেন্দ্র মোদির আগমনের বিরোধিতা করছে প্রকারান্তরে তারা মুজিব বর্ষেরই বিরোধিতা করছেন। নরেন্দ্র মোদির বিরোধিতাকে করতে তাদের লজ্জা করে না?
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধু এখন দেশে-বিদেশ আপন মহিমায় উদ্ভাসিত বাংলাদেশের ঐতিহাসিক রাজনৈতিক অবিসংবাদিত নেতৃত্ব, সেটা পরিষ্কার। তারা এই মুজিব বর্ষকে সামনে রেখে নরেন্দ্র মোদির আগমনের বিরোধিতার নামে আজকে মুজিব বর্ষকে ঘিরে সারাদেশে, এমনকি সারাবিশ্বে যে জাগরণের ঢেউ আমরা লক্ষ্য করছি, দেশের ইতিহাস ঐতিহ্য আমাদের সংগ্রাম সাফল্য উন্নয়ন অর্জন সবকিছুকে ঘিরে নতুন আলোক সম্পাদিত হয়েছে, এটা অনেকের সহ্য হচ্ছে না। এটা অনেকের গাত্রদাহের কারণ।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, কারা এই বিরোধিতা করছে? এরা তারা যারা ভারতে গিয়ে পানির কথা বলতে ভুলে গিয়েছিল। ভারতে গিয়ে নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট গঙ্গা পানি চুক্তি নিয়ে যখন ঢাকায় প্রশ্ন করা হয়েছিল তখন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বলেছিলেন আমি তো একথা ভুলেই গেছি। আমরা আমাদের স্বার্থের কথা ভুলি না। ভারতের সাথে বন্ধুত্ব করতে গিয়ে আমরা আমাদের স্বার্থকে ভুলে যাইনি।
তিনি আরো বলেন, আমাদের ক্ষমতার উৎস দেশের জনগণ। ভারত আমাদের দু:সময়ের বন্ধু। ভারত আমাদের উন্নয়নের সহযোগী। ভারতের সঙ্গে এটাই হচ্ছে আমাদের বন্ধুত্ব। তারা (বিএনপি) ক্ষমতার জন্য দাসত্ব করতেও প্রস্তুত। এটার বড় প্রমাণ নরেন্দ্র মোদি যখন নির্বাচিত হলেন তখন ঢাকার ভারতীয় দূতাবাসের অফিস খোলার আগেই বিএনপির প্রতিনিধিরা ফুলের মালা আর মিষ্টি নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। এখন তাদের লজ্জা করেনা নরেন্দ্র মোদির বিরোধিতা করতে?
বিতর্কিতদের দলে না রাখা নিয়ে বলেন, 'আমরা সার্কুলারের মাধ্যমে নির্দেশনা পাঠিয়ে দিয়েছি। সার্কুলারে উল্লেখ করেছি আমাদের সদস্য সংগ্রহ বা রিনুয়াল সদস্য অর্থাৎ যারা পুরানো সদস্য তাদের নবায়ন এবং নতুন সদস্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিতর্কিত ব্যক্তিদের পরিহার করতে বলা হয়েছে স্ট্রিকলি।'
'আমরা বলে দিয়েছি সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ভূমি দখলকারী, মাদক ব্যবসায়ী, মাদকাসক্ত, স্বাধীনতা বিরোধী অশুভশক্তি এরা আওয়ামী লীগের সদস্য হতে পারবে না। সাম্প্রদায়িক অশুভশক্তি আওয়ামী লীগের সদস্য হতে পারবে না। এই মর্মে সার্কুলার পাঠিয়ে দিয়েছি প্রতিটি সাংগঠনিক জেলায়'।
স্বাধীনতা বিরোধী বা বিতর্কিতদের মধ্যে যারা দলে রয়েছেন তাদের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযানে পুরনো যেসব ব্যক্তিদের নিয়ে বিতর্ক আছে, তাদের বাদ দিয়েই অবিতর্কিতদের নিয়েই আমাদের নতুন সদস্য সংগ্রহ হবে, সদস্য নবায়ন হবে। কাজেই সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তি স্বাধীনতা বিরোধী সাম্প্রদায়িক জঙ্গি গোষ্ঠী এরা আওয়ামী লীগের সদস্য হতে পারবে না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দফতর সম্পাদক আবু সায়েম খান প্রমুখ।