স্বাস্থ্য খাতের দুর্দশা সরকারের ধাপ্পাবাজিরই প্রমাণ: রিজভী
বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের বর্তমান দুর্দশায় প্রমাণিত হয়েছে যে এ সরকার জনগণের সঙ্গে বছরের পর বছর ধরে ধাপ্পাবাজি করেছে।
শুক্রবার (১৯ জুন) এক ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, করোনা আতঙ্কে কাটছে মানুষের দিন। মানুষ বিপর্যস্ত ও আতঙ্কিত। করোনা ভীতিতে আচ্ছন্ন দেশের জনগণ। মৃত্যুর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে প্রতিদিন। দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল অবস্থায় জনমনে আতঙ্ক ও উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা একেবারেই ভেঙে পড়েছে। হাসপাতালগুলোতে ভেন্টিলেটর, আইসিইউ ও করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা সারাবিশ্বের মধ্যে সর্বনিন্ম।
করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে ১৫ দিন পর্যন্ত সময় লাগছে। ল্যাবে নমুনার স্তুপ জমা হয়ে আছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের বর্তমান দুর্দশায় প্রমাণিত হয়েছে যে এ সরকার জনগণের সঙ্গে বছরের পর বছর ধরে ধাপ্পাবাজি করেছে। দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৪৭টি জেলাতেই নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) নেই। করোনাভাইরাসের এ মহামারির সময়ে মানুষের জীবনের বিনিময়ে স্বাস্থ্য খাতের বিপন্ন ও ভঙ্গুর ছবি প্রকাশ হয়ে পড়েছে, বলেন রিজভী।
সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ২০১৪ সালের ২৩ নভেম্বর তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম জাতীয় সংসদে বলেছিলেন, চলতি মাসেই অর্থাৎ ২০১৪ সালের নভেম্বর মাস থেকেই জেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালগুলোতে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র ও হৃদরোগীদের জন্য বিশেষ পরিচর্যা কেন্দ্রের (সিসিইউ) কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। সদ্য প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিমের প্রতিশ্রুতির ঠিক ছয় বছর পর ২০২০ সালে এসেও আওয়ামী সরকারের মুখে সেই একই কথা। একই প্রতিশ্রুতি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৮ এপ্রিল (শনিবার) জাতীয় সংসদে বলেছেন, প্রতিটি জেলা হাসপাতালে আইসিইউ স্থাপন করা হবে। আওয়ামী সরকারের বারবার একই রকম প্রতিশ্রুতি ‘কাজীর গরু কেতাবেই থাকছে, গোয়ালে নেই’-এর মতো।
আমরা যখনই আওয়ামী লীগের দুর্নীতি-দুরাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছি, আমাদের পেছনে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে র্যা ব-পুলিশ। উল্টো বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেই রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করা হচ্ছে নির্দয় নিষ্ঠুরভাবে, আর অপবাদ দেওয়ার জন্য গণমাধ্যমকে বাধ্য করা হচ্ছে রক্তচক্ষু প্রদর্শন করে। বিরোধী দল, স্বাধীন চিন্তা ও মতের মানুষদের হেনস্তা আর হয়রানির গতি এ করোনাকালে আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন জনগণের সামনে স্পষ্ট হয়ে গেছে, এ সরকারের হাতে মানুষের জানমাল নিরাপদ নয়, যোগ করেন তিনি।
বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, দেশের গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে গত এক দশক ধরে ক্ষমতাসীন সরকার জনগণকে কথিত উন্নয়নের গল্প শুনিয়েছে। অথচ নির্মম বাস্তবতা হলো উন্নয়নের স্লোগানের আড়ালে গত এক দশকে দেশে দুর্নীতির-অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করা ছাড়া আর কিছুই হয়নি। এ করোনার প্রকোপের মধ্যেও সরকার দুর্নীতির সংবাদ আড়াল করার জন্য প্রায় প্রতিদিনই গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের ডেকে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকেরা ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে ও হয়রারি করছে। বিরোধী দল ও গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের ওপর তাদের প্রণীত সব কালাকানুন নির্বিচারে প্রয়োগ করা হচ্ছে।