বন্যা পরিস্থিতিতে সরকারের নীরবতা মানুষকে আতঙ্কিত করেছে

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর/ছবি: বার্তা২৪.কম

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর/ছবি: বার্তা২৪.কম

করোনা মোকাবিলায় সরকার যেমন একবারেই ব্যর্থ, চরম উদাসীনতা, অবহেলা ও দুর্নীতির কারণে গোটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। ঠিক তেমনি বন্যার বিষয়েও সরকারের নীরবতা-নিষ্ক্রিয়তা মানুষকে আতঙ্কগ্রস্ত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (২৭ জুলাই) বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপি’র ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।

বিজ্ঞাপন

ফখরুল বলেন, একদিকে কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে অন্যদিকে বন্যা পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের মানুষ চরম দুর্ভোগে। একদিকে করোনা মোকাবিলায় সরকারের চরম ব্যর্থতা মানুষের জীবন ও জীবিকাকে বিপন্ন করে তুলেছে অন্যদিকে ভারতের উজান থেকে বন্যার পানি নেমে আসাতে মানুষের সম্পদ, বাড়ি-ঘর ভেঙে যাওয়া, গবাদিপশু মৃত্যু, ফসলহানি দেশের মানুষ সীমাহীন কষ্ট ও অর্থনৈতিক অসহায়ত্বের মধ্যে ফেলেছে।

তিনি বলেন, ভারত অভিন্ন নদীগুলোর সকল বাঁধ ব্যারেজের গেট খুলে দেওয়ায় উজান থেকে নেমে আসা বন্যার পানি, বাংলাদেশে ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, মেঘনা, মহানন্দ, পদ্মা, তিস্তা ও ধরলা নদীর অববাহিকায় ৩৪টি জেলা ইতিমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে। কয়েকটি জেলা ১ মাসের মধ্যে ২/৩ বার বন্যার পানি উজান থেকে এসে বাড়ি-ঘর, ফসলের খেত ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। ভারতের সঙ্গে যে অভিন্ন নদী প্রায় ১৫৪টি একমাত্র পদ্মার ফারাক্কা বাঁধ ব্যতীত কোনটারই কোনো পানি বণ্টন চুক্তি ভারতের অনীহার কারণে সম্পূর্ণ হয়নি। তিস্তার চুক্তির কথা ফলাও করে এই সরকার প্রচার করলেও গত এক দশকে কোনো চুক্তিই করতে সক্ষম হয়নি অথচ একের পর এক ট্রানজিট, বন্দর ব্যবহার, বিদ্যুৎ ক্রয়সহ অসংখ্য অসমচুক্তি স্বাক্ষর করেছে। অন্যদিকে সীমান্তে প্রায় প্রতিদিন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশিদের গুলি করে হত্যা করছে। সে ব্যাপারেও সরকার কোনো কার্যকরী প্রতিবাদ জানাতে সাহস পায়নি। এই সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে প্রায় প্রতি বছর বাংলাদেশের নদী অববাহিকায় বসবাসকারী মানুষেরা এই বন্যায় সর্বশান্ত হচ্ছে। ভারত বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশন প্রায় নিষ্ক্রিয় হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রতিদিন গণমাধ্যমে আসছে আমরা বন্যার্ত মানুষের আহাজারি, তার অসহায়ত্বের কথা, সহায় সম্বল হারিয়ে সড়কের অথবা বাঁধের ওপরে আশ্রয় নেওয়া, শিশু-সন্তান, বৃদ্ধ পিতা-মাতা নিয়ে খোলা আকাশের নিচে অভুক্ত থাকা এই বিষয়গুলো তাদের চিন্তিত করে না। তারা তো ধরা ছোঁয়ার বাইরে। জনগণের কাছে তাদের জবাবদিহিতা করতে হয় না। করোনা-বন্যা এই সব দুর্যোগ এলে তার খুশি হয়, দুর্নীতির নতুন সুযোগ সৃষ্টি হলো বলে।

তিনি বলেন, আমরা এই অনির্বাচিত সরকারের এই অবহেলা উদাসীনতার এবং নিষ্ক্রিয়তার নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে বন্যা প্রয়োজনীয় ত্রাণের যথাযথ ব্যবস্থার গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

বিএনপি সব সময়ই যে কোনো দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ায় উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, সর্বশেষ করোনা দুর্যোগে পাশে দাঁড়িয়েছে বিএনপি। বন্যা দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সম্মানিত সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে আহ্ববায়ক করে নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে একটি জাতীয় ত্রাণ কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা অবিলম্বে কাজ শুরু করবেন। দুর্গত এলাকায় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিএনপি, অঙ্গ-সংগঠনের সকল নেতা-কর্মী এবং দেশবাসীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।