পার্থে জয়ের সুখস্মৃতি নিয়ে এবার ক্যানবেরায় পা রেখেছে ভারতীয় ক্রিকেট দল। শহরে এসে আজ বৃহস্পতিবার ভারতের ক্রিকেটাররা দেখা করলেন অস্ট্রেলিয়ান প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি অ্যালবানেজের সঙ্গে। এরপর পার্লামেন্ট হাউসে বিরাট কোহলির সঙ্গে খুনসুটিতেও মেতে উঠলেন অজি প্রধানমন্ত্রী।
আগামী শনিবার অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী একাদশের বিপক্ষে খেলতে নামবে ভারতীয় দল। এই ম্যাচের আগে দলটির খেলোয়াড়দের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলো অ্যালবানিজের।
পার্থে দারুণ এক সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন বিরাট কোহলি। ১৬ মাস পর দেখা পেলেন তিন অঙ্কের। টেস্ট ক্যারিয়ারে ৩০তম সেঞ্চুরির সঙ্গে টেস্ট ম্যাচটাও জিতেছে তার দল। ডাবল আনন্দ। কোহলির সঙ্গে দেখা হতেই অজি প্রধানমন্ত্রী হাসি মুখে বললেন, ‘পার্থে ভালো সেঞ্চুরি করেছ।’
অজি প্রধানমন্ত্রীর এমন কথার উত্তরে রসিকতার সুরে কোহলি বলেন, ‘একটু মশলা তো দিতেই হয়।’ কম যাননি অ্যালবানিজও। তিনি পাল্টা বলে উঠেন, ‘ভারত তো, মশলা হবেই।’ তাদের এমন আলাপচারিতা ভাইরাল নেট দুনিয়ায়!
ভারতীয় দলের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অ্যালবানিজ আরেকটু মজা করেন। শনিবারের ম্যাচ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও কথা হয়েছে তার। এই ম্যাচ নিয়ে অজি প্রধানমন্ত্রী বলছিলেন, ‘মানুকা ওভালে প্রধানমন্ত্রী একাদশ বেশ কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। তবে আমি প্রধানমন্ত্রী মোদিকে বলেছি, এই ম্যাচ জিততে অজিদের সমর্থন করব।’
এদিন পার্লামেন্টে বিশেষ বক্তৃতা দিলেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। তিনি বলেন, ‘ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার লম্বা ইতিহাস রয়েছে- খেলাধুলো হোক বা বাণিজ্য। আমরা পৃথিবীর এই অংশে সব সময় আসতে পছন্দ করি। ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি সংস্কৃতিও শেখার চেষ্টা করি। অবশ্যই অস্ট্রেলিয়া এসে খেলা অন্যতম কঠিন কাজ। এখানকার সমর্থকদের আবেগ এবং প্রতিযোগিতামূলক মানসিকতা আমাদের খুব ভাল লাগে। তাই এখানে এসে খেলা খুব কঠিন।’
কেলাটা কঠিন হলেও বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির প্রথম টেস্ট জিতে এগিয়ে গেছে ভারত। পরের টেস্ট অ্যাডিলেডে। আগামী ৬ ডিসেম্বর থেকে সেখানে শুরু হবে দিনরাতের গোলাপি বলের টেস্ট।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে হেসে-খেলে জিতেছে বাংলাদেশ। শনিবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জিতলেই সিরিজ টাইগ্রেসদের। নিগার সুলতানা জ্যোতিদের আত্মবিশ্বাস আকাশ ছোঁয়া। তবে এখনই সিরিজ জয়ের ভাবনায় পুরোপুরি বুঁদ হয়ে নেই নারী ক্রিকেটাররা।
প্রথম ম্যাচে রেকর্ড ১৫৪ রানের বড় ব্যবধানে জয়ের এবার চোখ দ্বিতীয় ম্যাচে। বাংলাদেশের সামনে সিরিজ জয়ের হাতছানি থাকলে দলের পেসার মারুফা আক্তার ম্যাচ বাই ম্যাচই ভাবছেন।
মারুফা বিসিবির ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘দেখুন, আমরা একটা ম্যাচ ধরে চিন্তা করছি। প্রথম ম্যাচ জিতেছি। এখন আমাদের দ্বিতীয় ম্যাচ লক্ষ্য। তা জিতলে তৃতীয় ম্যাচ নিয়ে চিন্তা করব। তারাও যেহেতু হেরেছে, তাই অনেক ভালোভাবে টার্গেট করবে আমাদের। আমাদের আরও বেশি চিন্তা করতে হবে তারা কোন কোন দিক থেকে দুর্বল, কোন দিক থেকে ভালো খেলছে। এদিকে একটু বেশি ফোকাস দিতে হবে।’
প্রথম ওয়ানডেতে আইরিশ মেয়েদের মাত্র ৯৮ রানে অলআউট করেছে বাংলাদেশ। একমাত্র পেসার হিসেবে খেলা মারুফা তুলে নিয়েছেন দুই উইকেট। সেই ম্যাচের সাফল্য নিয়ে মারুফা বলছিলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে স্পিন বলেন, পেস অ্যাটাক বলেন অনেক ভালো হচ্ছে। শুধু একটু ছোটখাটো ভুলের কারণে আমরা যেগুলো করি, সেখানে তারা রান বের করছে। ইনশাআল্লাহ পরের ম্যাচে ভালোভাবে কামব্যাক করবো।’
পেসার মারুফা আরও যোগ করলেন, ‘এটা আসলে তারা অবশ্যই কামব্যাক করতে চাইবে। আমাদের আরও বেশি ফোকাস দিতে হবে, ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিংয়ে। যেহেতু মিরপুর স্পিন উইকেট। এখন টিম যা ভালো বোঝে। আলহামদুলিল্লাহ ভালোই হচ্ছে।’
ওয়ানডে সিরিজ শেষে বাংলাদেশ দল আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজও খেলবে।
শিরোনাম দেখে নিশ্চয়ই চমকে গেলেন! চমকানোর মতো হলেও ঘটনা সত্য! ডারবান টেস্টের দ্বিতীয় দিনে এমনই বিপর্যয়ে পড়ল সফরকারী শ্রীলঙ্কা দল। তারা নিজেদের ১ম ইনিংসে অলআউট মাত্র ৪২ রানে।
আজ বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে মাত্র ১৪ ওভারেই শেষ শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংস। শ্রীলঙ্কার টেস্ট ইতিহাসে এটিই সর্বনিম্ন রান। আবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও এটি কোনো দলের সর্বনিম্ন সংগ্রহ।
এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৭১ রানে অলআউট হয়েছিল শ্রীলঙ্কা। ১৯৯৪ সালে ক্যান্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে এই লজ্জায় ডুবেছিল তারা। এবার তারচেয়েও বড় লজ্জার মুখে পড়লেন লঙ্কান ব্যাটাররা।
এবার বলের হিসাবেও টেস্ট ইতিহাসের দেড় শ বছরের ইতিহাস দ্বিতীয় সর্বনিম্ন (৮৩ বল) খেলল শ্রীলঙ্কা। বলের হিসাবে এটি টেস্টে ইতিহাসে দ্বিতীয় ক্ষণস্থায়ী ইনিংস। এই লজ্জার রেকর্ডটি দক্ষিণ আফ্রিকার। ১৯২৪ সালের জুনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১২.৩ ওভার ব্যাটিং মাত্র ৩০ রানে অলআউট হয়েছিল তারা।
প্রতিপক্ষের পেসার মার্কো জানসেনের বোলিং তোপেই আজ সর্বনাশ হয়েছে শ্রীলঙ্কার। দক্ষিণ আফ্রিকার এই বোলার ৬.৫ ওভার বল করে মাত্র ১৩ রান দিয়ে নিয়েছেন ৭ উইকেট। এটি এই শতাব্দিতে দক্ষিণ আফ্রিকান পেসারদের মধ্যে সেরা সাফল্য।
শ্রীলঙ্কার দুটি উইকেট নিয়েছেন জেরাল্ড কোয়েতজে। একটি উইকেট কাগিসো রাবাদার।
ডারবানের কিংসমিডে চলতি টেস্টে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংস শেষ হয় ১৯১ রানে। কিন্তু এরপর ব্যাট করতে নেমে দুঃস্বপ্ন দেখল লঙ্কান ব্যাটাররা। তৃতীয় ওভার থেকে শুরু উইকেট পতনের মিছিল। কাগিসো রাবাদার বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন দিমুথ করুনারত্নে। পরের আউট পাথুম নিশাঙ্কা। তারপর থেকে ছিল শুধুই আসা-যাওয়ার মিছিল!
শ্রীলঙ্কার ৯ ব্যাটার দেখা পাননি দুই অঙ্কের। দিনেশ চান্দিমাল, কুসাল মেন্ডিসসহ পাঁচ জন আউট শূন্য রানে। ১৩ রান তুলেন কামিন্দু মেন্ডিস। ১০ রানে অপরাজিত লাহিরু কুমারা।
ডারবানের কিংসমিড স্টেডিয়ামে এটিই যে কোন দলের টেস্টে সর্বনিম্ন দলীয় ইনিংস। আগের লজ্জার রেকর্ডটি ছিল বাংলাদেশের। ২০২২ সালে ৫৩ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ। এবার টাইগারদের পেছনে ফেলে দিল লঙ্কানরা!
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি কোথায় হচ্ছে সেই বিষয়ে চূড়ান্ত হবে আইসিসির শুক্রবারের সভায়। প্রয়োজন হলে এই সমস্যা সমাধানে ভোটাভুটি হবে। পাকিস্তানের মাটিতে খেলা তাই যথারীতি এখানেও একমাত্র সমস্যা কেবল ভারত। নিরাপত্তা ইস্যু তুলে ভারত জানিয়ে দিয়েছে তারা পাকিস্তানে ক্রিকেট খেলতে চায় না। অন্যদিকে পাকিস্তান জানিয়ে দিয়েছে, হাইব্রিড পদ্ধতিতে এই টুর্নামেন্ট আয়োজনে তারা সস্মত নয়। অর্থাৎ ভারতের ম্যাচগুলো দুবাই বা অন্যত্র এবং টুর্নামেন্টের বাকি ম্যাচ গুলো সব পাকিস্তানে হবে। এমন সমাধানে পাকিস্তান সম্মত নয়।
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান মহসিন নকভি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ভারত যদি না আসে তাহলে ভবিষ্যতে পাকিস্তানও ভারতের মাটিতে খেলার বিষয়ে নতুন চিন্তা করবে। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এটা তো হতে পারে না। পাকিস্তান গিয়ে ভারতের মাটিতে খেলতে পারে আর ভারত তাহলে কেন পাকিস্তানে খেলতে চায় না। যা কিছুই হবে সেটা যেন অবশ্যই সমতার ভিত্তিতেই হয়। আমরা এটা আইসিসির চেয়ারম্যান গ্রেগ বার্কলেকে জানিয়েও দিয়েছি।’
ভারতে আগামী বছররের নারীদের ওয়ানডে বিশ্বকাপের আসর বসবে। ২০২৬ সালের পুরুষদের টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপও ভারত ও শ্রীলঙ্কায় যৌথভাবে আয়োজিত হবে। ভারত যদি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলতে পাকিস্তানে না আসে তাহলে ভারতের মাটিতে ঐ দুটি টুর্নামেন্ট নিয়ে পাকিস্তানও নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেবে-এমন এটা প্রছন্ন হুমকি দিয়ে রেখেছেন পিসিবি চেয়ারম্যান।
ভারত নিরাপত্তার ইস্যুতে ২০০৮ সালের পর থেকে পাকিস্তানে ক্রিকেট খেলতে আর যায়নি। তবে এর মাঝে পাকিস্তান ঠিকই ভারতের মাটিতে ক্রিকেট খেলেছে। সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতেই পাকিস্তান ২০২৩ সালে ভারত সফরে যায়।