টি-টোয়েন্টিতে রশিদ খান পা রেখেছেন নতুন এক উচ্চতায়। সব মিলিয়ে তুললেন রেকর্ড ৬৩৩ উইকেট। আফগানিস্তানের স্পিনার রশিদ পেছনে ফেললেন টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশী উইকেট নেয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডোয়াইন ব্রাভোকে। ধারাবাহিক পারর্ফমেন্স দিয়ে মাঠ মাতানো রশিদের সামনে এখন উঁকি দিচ্ছে হাজার উইকেটের রেকর্ড।
ক্রিকেট ভিত্তিক ওয়েবসাইট ইএসপিএন-ক্রিকইনফোকে দেওয়া সাক্ষাতকারে এ বিষয়ে কথা বলেছেন বিশ্বের দ্বিতীয় সবোর্চ্চ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড গড়া আফগান এ পেসার।
প্রশ্ন: টি টোয়েন্টির মতো একটি ব্যাটার-বান্ধব ফরম্যাটে আপনি এই রেকর্ড তৈরি করতে পেরেছেন! এটি আপনাকে অবিশ্বাস্য তৃপ্তি দিয়েছে, তাই না?
রশিদ: অবশ্যই, আমি বেশ খুশি। বিশেষ করে যখন আমি আমার ক্যারিয়ারটা দেখি। এটি গড়তে পেরেছি মাত্র মাত্র নয় বছরে। যদিও এটি ব্রাভোর রেকর্ড গড়ার সময়ের চেয়ে বেশী। কিন্তু এটি আমার জন্য একটি বিশাল, বিশাল সাফল্য। কারণ ২০১৪-১৫ সালে আমি কখনও ভাবিনি যে আমি টি-টোয়েন্টিতে আন্তর্জাতিক এবং ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলব। আমি কখনও এটি মনে করিনি যে কোন রেকর্ড গড়ব।
প্রশ্ন: ডিজে (ব্রাভো) কি আপনাকে মেসেজ বা কল করেছেন?
রশিদ: হ্যাঁ, আমরা কথা বলেছি। তিনি আমাকে মেসেজও করেছেন। তিনি খুব খুশি ছিলেন এবং বলেছিলেন: (আমি জানি) তুমি সেই ব্যক্তি যারা এই রেকর্ডটি ভাঙবে। তুমি পুরোপুরি এটি পাওয়ার যোগ্য। তিনি সবসময় আমাকে সমর্থন করে এসেছেন এবং আমাদের অনেক ভাল সময় কেটেছে।
প্রশ্ন: আপনি বেশ অল্প সময়ের মধ্যে সাত’শ উইকেটের পা বাড়িয়েছেন এ ব্যপারে আপনার অভিমত কী?
রশিদ খান: কয়েক দিন আগে আমি একই কথা ভাবছিলাম। আমি শুধু আমার রেকর্ডগুলো চেক করছিলাম, ডিজে ব্রাভোর কত উইকেট ছিল যখন আমি অভিষেক করেছিলাম এবং এখন আমার কত আছে। আমি পড়েছিলাম যে, অভিষেকের পরে আমি ৬০০র অধিক উইকেট পেয়েছি। যেখানে আমার পেছণে থাকা বোলারের সঙ্গে আমার পার্থক্য ছিল প্রায় অর্ধেক । যেমনটা আমি বলেছি,এটা বিশ্বাস করা কঠিন। তবে যেটি আমার জন্য আরও বিশেষ পাওয়া তা হলো, এই রেকর্ড এখন আফগানিস্তানের একজনের নামে।
প্রশ্ন : আপনি টিম সাউদিকে টপকাতে মাত্র তিন উইকেট দূরে রয়েছেন এবং আর্ন্তজাতিক টি টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ উইকেট তোলার মালিক হতে যাচ্ছেন।
রশিদ : এটি আমি মনে রেখেছি। আমি সম্প্রতি জিম্বাবুয়ে সিরিজে এটি পার করার জন্য আমার সেরা চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু আমি মাত্র ৯টি উইকেট নিয়েছিলাম। তবে আশা করি এশিয়া কাপে (২০২৫ সালের শেষের দিকে হতে যাওয়া) আমি তা অর্জন করতে পারব।
প্রশ্ন : ব্যক্তিগতভাবে, আপনি কি আপনার টি টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের কয়েকটি সেরা স্পেল সম্পর্কে কথা বলতে পারেন?
রশিদ : আমি তিনটি নাম নেব। একটি ছিল গত টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ বিরুদ্ধে। যেখানে আমি চারটি উইকেট নিয়েছিলাম (৪ উইকেট ২৩ রানে), যখন আমরা ১১৫ রানের লক্ষ্য বাচাতে বোলিংয়ে নেমেছিলাম। এটি আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ স্পেল ছিল। আমি নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে (৪ উইকেট ১৭ রানে) ও চারটি উইকেট পেয়েছিলাম সেই একই বিশ্বকাপে, তবে সেটা আলাদা খেলা ছিল এবং এটি আলাদা খেলা। বাংলাদেশ বিরুদ্ধে, আমি মাত্র ১১৫ রানের লক্ষ্য রক্ষা করছিলাম, যা একটি কঠিন পরিস্থিতি ছিল, তাই আমি মনে করি এই স্পেলটি একটু বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আরেকটি ছিল ২০১৮ সালে আইপিএল-এর কোয়ালিফায়ার ২-এ কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর) বিরুদ্ধে (৩ উইকেট ১৯ রানে), যা পুরো খেলার দৃশ্য বদলে দিয়েছিল। আরেকটি ছিল অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্সের হয়ে বিগ ব্যাশিং লিগে ৬ উইকেট ১৭ রানে, কারণ অস্ট্রেলিয়াতে বোলিং করা একটু কঠিন।
প্রশ্ন : ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের সেমিফাইনালে পৌঁছানো - এটি কি আপনার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় মুহূর্ত ছিল?
রশিদ : এটি ১০০% আমার ক্যারিয়ারের, আমার জীবনের অন্যতম বড় মুহূর্ত ছিল। আমি এখনো সেই ম্যাচটি মনে করি এবং এখনও ভাবি। কিভাবে আমরা ফাইনালের এত কাছাকাছি ছিলাম, আমরা ফাইনাল খেলতে পারতাম। আমি এখনো খুব খারাপ অনুভব করি যখন আমি সেই দিনটি মনে করি, ভাবি যদি উইকেটটি আরও ভালো হত, তবে দুইটি দলই অনেক বেশি ভালো পারফর্ম করতে পারত এবং এটি আমাদের জন্য একটি অন্যতম সেরা ম্যাচ হতে পারত।