ধীরগতির সেঞ্চুরি, কোহলিকে পাকিস্তান ক্রিকেটারের খোঁচা
খেলা
ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ছন্দে রয়েছেন বিরাট কোহলি। পাঁচ ম্যাচেই তার রান ৩১৬। যা টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ। সবশেষ ম্যাচেও রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে ৭২ বলে অপরাজিত ১১৩ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। যদিও শেষ পর্যন্ত সেটিকেই বলা হচ্ছে তাল দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর হারের কারণ হিসেবে। যা নিয়েই এবার কোহলিকে খোঁচা দিয়েছেন পাকিস্তানের পেসার জুনায়েদ খান।
এদিন কোহলি সেঞ্চুরি পেলেও হেরে গেছে তার দল। এমনিতেও খুব একটা ভালো অবস্থানে নেই আরসিবি। পাঁচ ম্যাচ শেষে জয় মাত্র ১টিতে। তাই রান পেলেও বিরাট কোহলির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।
বিজ্ঞাপন
এদিন সেঞ্চুরি হাঁকাতে ৬৭ বল খেলতে হয়েছে কোহলিকে। যা আইপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে ধীরগতির। এর আগে ২০০৯ সালে মানীষ পাণ্ডেও ৬৭ বলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলে। এতদিন সেটিই ছিল ধীরগতির। লম্বা সময় পর সেই রেকর্ড এখন কোহলিও।
যা নিয়েই তাকে খোঁচা দিয়েছে পাকিস্তানের পেসার জুনায়েদ খান। এক্সে তিনি লিখেছেন, ‘বিরাট কোহলিকে স্বাগতম, আইপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে ধীরগতির সেঞ্চুরি করায়।’
বিজ্ঞাপন
ম্যাচে কোহলির স্ট্রাইক রেট নিয়ে কথা বলেছেন ভারতের সাবেক ওপেনার বীরেন্দ্রর শেবাগও। তিনি বলেন, ‘বিরাট স্ট্রাইক রেট আরও বাড়তে পারত। যখন ৩৯ বলে ফিফটি করেন, এরপর আপনার স্ট্রাইক রেট দুই শর কাছাকাছিও যেতে পারে। তবে অন্য ব্যাটসম্যানরা কিছু করতে পারেনি। সব চাপ ছিল কোহলির ওপর।’
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) চলতি মৌসুমে পাঞ্জাব কিংসের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন গত মৌসুমে কলকাতার নেতৃত্বে থাকা শ্রেয়াস আইয়ার। কলকাতা নাইট রাইডার্সকে নেতৃত্ব দেওয়া শ্রেয়াস গত মৌসুমের পরই ফ্র্যাঞ্চাইজি থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পাঞ্জাব কিংস তাকে ২৬.৭৫ কোটি রুপিতে দলে নিয়েছে, যা নিলামে দ্বিতীয় সবোর্চ্চ দাম।
৩০ বছর বয়সী শ্রেয়াস ভারতীয় ঘরোয়া ক্রিকেট এবং আইপিএলসহ সব ফরম্যাট মিলিয়ে চারটি শিরোপা জিতেছেন। গত বছর সৈয়দ মুস্তাক আলী ট্রফিতে তার নেতৃত্বেই ট্রফি জিতেছে মুম্বাই দল। রঞ্জি ট্রফি এবং ইরানি ট্রফি জয়ী মুম্বাই দলের হয়ে মাঠে ছিলো আইয়ার।
আইপিএলে নতুন দলের দায়িত্ব পেয়ে তার উচ্ছসিত আইয়ার এমন একটি ফ্র্যাঞ্চাইজির ভাগ্য পরিবর্তন করতে চাইবেন, যাদের কপালে এখনও শিরোপা জুটেনি। সর্বশেষ ২০১৪ সালে ফাইনালে পৌঁছেছিল পাঞ্জাব কিংস, তবে কলকাতা নাইট রাইডার্সের কাছে হেরে যাওয়ায় অধরা রয়ে যায় শিরোপা।
অধিনায়কত্ব পেয়ে আইয়ার বলেন, ‘আমি সম্মানিত যে দলটি আমার উপর আস্থা রেখেছে। আমি কোচ পন্টিংয়ের সঙ্গে আবার কাজ করতে মুখিয়ে আছি। দলটি শক্তিশালী, যেখানে সম্ভাব্য এবং প্রমাণিত পারফরমারদের একটি চমৎকার মিশ্রণ রয়েছে।’
২০২০ সালে আইয়ার আরি পন্টিং এক সঙ্গে দিল্লী ক্যাপিট্যালসকে প্রথমবারের মতো ফাইনাল অব্দি নিয়ে যান। এবারেও এমন কিছু আশা করেন পাঞ্জাব কিংসের সিইও সতীশ মেনন। তিনি বলেন,‘আইয়ারকে পেয়ে আমরা খুব খুশি। তিনি এবং পন্টিং আবার একসাথে কাজ করায় আমরা আত্মবিশ্বাসী যে আমাদের দল একটি শক্তিশালী নেতৃত্ব পেয়েছে, যা আমাদের প্রথম শিরোপা জেতার দিকে পরিচালিত করবে।’
ক্রিকেটের প্রতি মানুষের অনুরাগ আর উচ্ছ্বাস সর্বজনবিদিত। তবে এই বছরের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) বরিশালবাসীর উন্মাদনা ছাপিয়ে যাচ্ছে নতুন মাত্রায়। ফরচুন বরিশাল অসাধারণ পারফরম্যান্স করে র্যাংকিংয়ের দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করলেও হতাশার ছায়া রয়ে গেছে। সেটি হলো বরিশালের ঘরের মাঠে খেলা আয়োজন না হওয়া।
আন্তর্জাতিক মানের বরিশাল স্টেডিয়াম দীর্ঘদিন ধরে অচল। শহরের ক্রীড়া প্রেমীরা দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিপিএলের মতো আসরে নিজেদের মাঠে খেলা দেখার সুযোগ না পাওয়ায়।
বরিশালের ক্রীড়াপ্রেমী আশিকুজ্জামান বলেন, যদি আমাদের মাঠে ফরচুন বরিশালের ম্যাচ আয়োজন করা যেত, তাহলে স্থানীয় তরুণ খেলোয়াড়রা অনুপ্রাণিত হতো। আর মাঠে খেলা দেখার আনন্দই আলাদা।
বরিশালের প্রশিক্ষণরত নতুন ক্রিকেটার ফরহান আহমেদ জানান, বরিশালের সমর্থন আমাদের শক্তি। তাদের ভালোবাসা আমাদের আরও বেশি প্রেরণা দেয়। মাঠে খেলার সুযোগ না পেলেও, আমরা সবাই একসঙ্গে জিততে চাই।
আরেকজন ক্রিকেটার আরিফ হোসেন জানান, ফরচুন বরিশালের হয়ে খেলা মানে এক স্বপ্ন। বরিশালবাসীর ভালোবাসায় অটুট বিশ্বাস রেখে আমরা শুধু জয়ের লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছি।
ফরচুন বরিশালের মালিক মিজানুর রহমান বলেন, বরিশালের স্টেডিয়ামটি দ্রুত সংস্কার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানকার সংস্কৃতি এবং নতুন প্রতিভার বিকাশের জন্য খেলা আয়োজনের কোনো বিকল্প নেই।
খেলা মাঠে দেখতে না পারলেও বরিশালবাসী প্রিয় দলের জয় উদযাপনে কমতি রাখছে না। প্রথম ম্যাচে ফরচুন বরিশালের রাজশাহীর বিপক্ষে জয়ের পর থেকেই পুরো শহর ক্রিকেট উম্মাদনায় ভাসছে। ৬ ও ৭ জানুয়ারির টানা দুই ম্যাচে জয় পাওয়ার পর এই উদ্দীপনা বেড়েছে আরও বহুগুণ।
নগরীর বিভিন্ন স্থানে প্রজেক্টরে খেলা দেখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোথাও খিচুরি পার্টি, কোথাও বারবিকিউ আয়োজন করে সমর্থকেরা উদযাপন করেছেন খেলার আনন্দ। বিএম কলেজের শিক্ষার্থী ফয়সাল বারী বলেন, বরিশালে ক্রিকেট মানেই অন্যরকম এক আবেগ। ফরচুন বরিশালের খেলা হলে গোটা শহর জেগে ওঠে। এবারের দলটিও বেশ শক্তিশালী।
নিউটন নামের এক ব্যবসায়ী জানান, তার প্রজেক্টর ভাড়া নিয়ে নগরীতে কাড়াকাড়ি পড়েছে। বিপিএলের দিনগুলোতে সাউন্ড সিস্টেম ও প্রজেক্টরের ভাড়া নিয়ে দারুণ ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে তাকে।
বরিশাল জেলা ক্রীড়া অফিসার সাইদুল ইসলাম জানান, স্টেডিয়ামের সংস্কারকাজ দ্রুতই শেষ করার চেষ্টা চলছে। এটি শেষ হলে আমরা বিপিএলসহ আন্তর্জাতিক মানের খেলাগুলো আয়োজন করতে পারব। বরিশালের মানুষ এই কাজ দ্রুত শেষ হওয়ার প্রত্যাশা করছে।
বরিশালবাসীর আশা, স্টেডিয়ামের সংস্কার শেষ করে ঘরের মাঠে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খেলাগুলোর আয়োজন হবে। ক্রীড়াঙ্গনে বরিশালের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সরকারের সঠিক পদক্ষেপ ও দ্রুত উদ্যোগের অপেক্ষায় ক্রীড়ামোদীরা।
ফরচুন বরিশালের উজ্জ্বল পারফরম্যান্স, সমর্থকদের ভালোবাসা আর স্টেডিয়াম উন্নয়নের স্বপ্ন মিলে বরিশালে একটি নতুন ক্রীড়াযুগের সূচনা হবে এটাই বরিশালের প্রত্যাশা।
গত বছর জুলাইয়ে নারী এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টিতে আম্পায়ারিং করেছেন সাথিরা জাকির জেসি। এবার তার সামনে নতুন মিশন। মালয়েশিয়াতে হওয়া অনূর্ধ্ব-১৯ নারী এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টিতেও তাঁকে আম্পায়ারের ভূমিকায় দেখা গেছে। তবে স্বপ্ন দেখতেন বিশ্বকাপের ম্যাচ পরিচালনা করার। এবার সে স্বপ্ন ধরা দিল ৩৪ বছর বয়সী জেসি হাতে।
আগামী শনিবার থেকে মালয়েশিয়ায় শুরু হতে যাওয়া অনূর্ধ্ব-১৯ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ম্যাচ পরিচালনা করবেন তিনি। টুর্নামেন্টে খেলা পরিচালনার জন্য আজ ২০ সদস্যের ম্যাচ অফিসিয়ালের নাম ঘোষণা করেছে আইসিসি । সেই তালিকায় আছেন বাংলাদেশি আম্পায়ার সাথিরা জাকির জেসি।
তবে সাথিরার স্বপ্ন পূরণের সুযোগ এর আগেও এসেছিল। গত অক্টোবরে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সাথিরার আম্পায়ারিং করার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিশ্বকাপ বাংলাদেশ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় সংযুক্ত আরব আমিরাতে। আর তাতেই স্বপ্ন ভঙ্গ হয় সাথিরার। তবে এবার বয়সভিত্তিক বিশ্বকাপ দিয়ে স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে তার।
অনূর্ধ্ব-১৯ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ২০ জন ম্যাচ অফিশিয়ালের ১৬ জন আম্পায়ার। সেখানে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে থাকছেন সাথিরা। ম্যাচ অফিশিয়ালের দায়িত্বে থাকছেন আরও ১৩ দেশের ১৯ জন।
গত বছরের মার্চে আইসিসির ডেভেলপমেন্ট প্যানেলে যুক্ত হন সাথিরা। আম্পায়ার হিসেবে বাংলাদেশে ছেলেদের ঘরোয়া ক্রিকেটেও ম্যাচ পরিচালনা করার অভিজ্ঞতা আছে তার।
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বাংলাদেশ দলে জায়গা না হলেও এবার পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) দল পেয়েছেন লিটন দাস ও অলরাউন্ডার রিশাদ হোসেন। পিএসএলের চলতি আসরে করাচি কিংসের হয়ে খেলবেন দেশের উইকেটকিপার ব্যাটার লিটন। লাহোর কালান্দার্স জার্সি গায়ে মাতাবেন রিশাদ।
এবারের পিএসএলের প্লেয়ার ড্রাফট অনুষ্ঠিত হয়েছে ঐতিহ্যবাহী লাহোর ফোর্টে। সেখানে পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের পাশাপাশি নাম দিয়েছেন ৫১০ জন বিদেশি ক্রিকেটার।
বাংলাদেশের আছেন ৩৯ ক্রিকেটার । দেশের টাইগার পেসার নাহিদ রানাকে ৫০ হাজার ডলারে নিজেদের শিবিরে ভিড়িয়েছে পেশোয়ার জালমি। তারপরই সুখবর পেলেন লিটন-রিশাদ।
গোল্ডেন ক্যাটাগরি থেকে দল পাওয়া লিটন দাসের পারিশ্রমিকের পরিমাণ ৫০ হাজার ডলার। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে জায়গা না পেলেও বিপিএলে গত দুই ম্যাচে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন তিনি। যা পিএসএলে তাকে দল পেতে সাহায্য করেছে।
এদিকে ডায়মন্ড ক্যাটাগরিতে থাকা রিশাদ হোসেনকে ৮৫ হাজার ডলারে দলে নিয়েছে লাহোর ক্যালান্দার্স। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভালো পারফর্ম করে সবার নজর কাড়েন রিশাদ। এরপর থেকে সাদা পোশাকে বাংলাদেশ দলে নিয়মিত তিনি। অসাধারণ লেগ স্পিনের সঙ্গে ব্যাট হাতে ঝড় তুলতে দক্ষ হওয়ায় দল পেলেন।
অন্যদিকে প্ল্যাটিনাম ক্যাটাগরিতে আছেন বাংলাদেশের দুই ক্রিকেটার মুস্তাফিজুর রহমান ও সাকিব আল হাসান। এই দুজনই প্রথম ডাকে অবিক্রিত থেকেছেন। তাদের প্রতি আগ্রহ দেখায়নি কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি। যদিও প্রথম ডাকে দল না পাওয়া ক্রিকেটারদের এখনই সুযোগ শেষ হয়নি। ড্রাফটের শেষের দিকে সাপ্লিমেন্টারি ক্যাটাগরি থেকে তাদের দলে নেয়ার সুযোগ থাকবে পিএসএল ফ্র্যাঞ্চাইজিদের।
এবারের পিএসএল শুরু হবে আগামী ৮ এপ্রিল। ফাইনাল ১৯ মে।