এখন ক্রিকেটে মেতে উঠার পালা। আজ বুধবার শুরু বিশ্বের শীর্ষ আট দেশের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই! যে লড়াইয়ে আছে লাল-সবুজের পতাকাও। বাংলাদেশ দল মাঠে নামবে একদিন পরই। তার আগে আজ করাচিতে জমেক ব্যাট-বলের ৫০ ওভারের ক্রিকেট যুদ্ধ! চলবে টানা বিশ দিন!
শেষবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজিত হয়েছিল ২০১৭ সালে। সেবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তুলেছিল পাকিস্তান। এবার সেই পাকিস্তানেই আয়োজিত হচ্ছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির নবম আসর। ক্রিকেট উৎসব তাই ছড়িয়ে গেছে গোটা পাকিস্তান জুড়ে।
পাকিস্তানে আইসিসির কোনো টুর্নামেন্ট শেষবার আয়োজিত হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দিয়ে প্রায় তিন দশকের অপেক্ষা ঘুচতে যাচ্ছে পাকিস্তানের। তবে পাকিস্তান এককভাবে আয়োজন করতে পারছেনা এবারের আসর।
এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হবে হাইব্রিড মডেলে। মূল আয়োজক পাকিস্তান হলেও কিছু ম্যাচ আয়োজিত হবে দুবাইয়ে। এমন হওয়ার কারণ অবশ্য ভারত। ভারতের পাকিস্তানে যেতে অসম্মতির কারণে আইসিসিকে এবারের আসর আয়োজন করতে হচ্ছে হাইব্রিড মডেলে। যেখানে ভারতের ম্যাচগুলো আয়োজিত হবে দুবাইয়ে।
ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক বৈরীতা ক্রিকেট মাঠেও ছড়িয়ে যায়। যার কারণে এবারের আসর জুড়ে নাটকীয়তা কম হয়নি। পাকিস্তানের নাম লেখা জার্সি পরে খেলতে আপত্তি ছিল ভারতের। যদিও সেটা সম্ভর হয়নি। ভারতকে খেলতে হবে জার্সিতে আয়োজক পাকিস্তানের নাম লিখেই।
দুই দেশের এমন দ্বন্দ্বের কারণে এখনও অনিশ্চিত ফাইনাল খেলার ভেন্যু। কারণ ভারত ফাইনালে উঠলে ফাইনাল ম্যাচটি আয়োজিত হবে দুবাইয়ে। আর রোহিত শর্মার দল ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হলে পাকিস্তানের লাহোরেই হবে ফাইনাল।
এবারের আসরে বাংলাদেশকে নিয়ে ক্রিকেট ভক্ত সমর্থকদের প্রত্যাশা একটু বেশি। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে খেলেছিল টাইগাররা। সেবার টুর্নামেন্টের অন্যতম শক্তিশালী দল নিউজিল্যান্ডকে বিদায় করে শেষ চারে উঠেছিল মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। তাই এবারের আসরে নাজমুল হোসের শান্তর দলের উপর প্রত্যাশার চাপ স্বাভাবিকভাবেই বেশি থাকবে।
তবে বাস্তবতা ও সাম্প্রতিক পরিসংখ্যার কথা বলছে বাংলাদেশের বিপক্ষে। বাংলাদেশ নিজেদের শেষ ওয়ানডে খেলেছিল ডিসেম্বরে। সে সিরিজে ওয়ানডেতে হোয়াইওয়াস হয়েছিল টাইগাররা। শেষ ৬ আন্তর্জাতিক ম্যাচে বাংলাদেশ ৫ টা তেই হেরেছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচেও পাকিস্তান শাহিনসের বিপক্ষে বরণ করতে হয়েছে শোচনীয় পরাজয়।
এমন পরাজয় ভুলেই মূল আসরে খেলতে নামতে চাইবে টাইগাররা। ২০ ফেব্রুয়ারি ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে বাংলাদেশ দলের এবারের আসরের মিশন। গ্রুপের বাকি দুই সদস্য স্বাগতিক পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড। এ দুই দলের খেলা দিয়ে আজ ১৯ ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু হবে মিনি-বিশ্বকাপখ্যাত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সূচি-
১৯ ফেব্র্রুয়ারি: পাকিস্তান বনাম নিউজিল্যান্ড, করাচি, পাকিস্তান
২০ ফেব্রুয়ারি: বাংলাদেশ বনাম ভারত, দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত
২১ ফেব্রুয়ারি: আফগানিস্তান বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা, করাচি, পাকিস্তান
২২ ফেব্রুয়ারি: অস্ট্রেলিয়া বনাম ইংল্যান্ড, লাহোর, পাকিস্তান
২৩ ফেব্র্রুয়ারি: পাকিস্তান বনাম ভারত, দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত
২৪ ফেব্রুয়ারি: বাংলাদেশ বনাম নিউজিল্যান্ড, রাওয়ালপিন্ডি, পাকিস্তান
২৫ ফেব্রুয়ারি: অস্ট্রেলিয়া বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা, রাওয়ালপিন্ডি, পাকিস্তান
২৬ ফেব্রুয়ারি: আফগানিস্তান বনাম ইংল্যান্ড, লাহোর, পাকিস্তান
২৭ ফেব্রুয়ারি: পাকিস্তান বনাম বাংলাদেশ, রাওয়ালপিন্ডি, পাকিস্তান
২৮ ফেব্রুয়ারি: আফগানিস্তান বনাম অস্ট্রেলিয়া, লাহোর, পাকিস্তান
১ মার্চ: দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম ইংল্যান্ড, করাচি, পাকিস্তান
২ মার্চ: নিউজিল্যান্ড বনাম ভারত, দুবাই
সেমিফাইনাল
৪ মার্চ: প্রথম সেমিফাইনাল, দুবাই
৫ মার্চ: দ্বিতীয় সেমিফাইনাল, লাহোর, পাকিস্তান
ফাইনাল
৯ মার্চ: ফাইনাল, লাহোর (ভারত উঠলে ফাইনাল দুবাইয়ে)