সাকিবের নিরাপত্তা বিষয়ে যা বললেন ক্রীড়া উপদেষ্টা
সাকিব আল হাসান তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছেন। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ইতি টেনে দিয়েছেন। জানিয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটা মিরপুরে খেলতে চাওয়ার কথা। তবে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সেটা আর সম্ভব নয়।
প্রথমে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ, এরপর এবার ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াও জানিয়ে দিলেন, খেলোয়াড় সাকিবের নিরাপত্তা থাকলেও এর বাইরে জনরোষে পড়ার বিষয়ে নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয়।
তিনি আজ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘খেলোয়াড় সাকিবের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আছে। তবে, ফ্যাসিস্ট সরকারের সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানের বিপক্ষে জনমনে তৈরী হওয়া ক্রোধের বিপরীতে নিরাপত্তা দেওয়ার নিশ্চয়তা চাওয়া অবান্তর।’
তিনি আরও জানান, সাকিবকে তার রাজনৈতিক অবস্থানটা পরিষ্কার করতে হবে। ক্রীড়া উপদেষ্টার ভাষ্য, ’এখানে সাকিব আল হাসানের পরিচয় দুইটা। এটা আমাদের মনে রাখতে হবে। খেলোয়াড় হিসেবে একটা পরিচয়, আরেকটা হচ্ছে রাজনৈতিক পরিচয়। উনি আওয়ামী লীগের প্যানেল থেকে এমপি ইলেকশন করেছেন। মানুষের মধ্যে তো দুটো নিয়েই মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে।’
এ বিষয়ে মাশরাফি বিন মুর্তজার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় উনাকে (সাকিব আল হাসান) উনার জায়গাটা পরিষ্কার করা প্রয়োজন, রাজনৈতিক জায়গা থেকে। উনার যে রাজনৈতিক অবস্থান সেটা নিয়ে কথা বলা প্রয়োজন। অলরেডি মাশরাফি বিন মর্তুজা কথা বলেছেন।’
নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি খোলাসা করে জানান, খেলোয়াড় হিসেবে নিরাপত্তা তার থাকবেই। কিন্তু জনরোষের বিষয়টিও শেষে মনে করিয়ে দেন তিনি। তার কথা, ‘এখন খেলোয়াড় হিসেবে, একজন খেলোয়াড়কে যতটুকু নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সেটা অবশ্যই আমরা দেবো। দেশে এলে আমরা সেটা দেবো। তার নামে যে হত্যা মামলাটা হয়েছে, এটার বিষয়ে আমরা বলেছি, আইন মন্ত্রণালয়ও বলেছে, সংশ্লিষ্টতা না থাকলে প্রাথমিকভাবেই বাদ দেওয়া যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু উনার রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে জনগণের মধ্যে যদি ক্ষোভ থাকে, তাহলে…। মনে করেন আমার নিরাপত্তার জন্য পাঁচজন পুলিশ কনস্টেবল এবং একজন গানম্যান থাকে। আমার উপরে যদি দেশের ১৬ কোটি জনগণের, ১০ কোটি জনগণের যদি ক্ষোভ থাকে তাহলে এই ৫-৬ জন আমাকে কী নিরাপত্তা দেবে? সেক্ষেত্রে জনগণের যদি কোথাও ক্ষোভ থাকে তাহলে সেটাও আমাকে রিডিউস (কমাতে) করতে হবে আমার কথা দিয়ে।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিসিবি সভা শেষে সভাপতি ফারুক আহমেদ কথা বলেছিলেন বিষয়টিতে। তিনি বলটা ঠেলে দিয়েছিলেন সরকারের কোর্টে। তিনি এই বিষয়ে বলেছিলেন, ‘নিরাপত্তার বিষয়টি বিসিবির হাতে নেই। তাকেই (সাকিবকে) এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বোর্ড থেকে এ ব্যাপারে কিছু করতে পারব না। নির্দিষ্ট একজনকে ব্যক্তিগতভাবে নিরাপত্তা দেওয়ার সামর্থ্য বিসিবির নেই। সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে নিরাপত্তার বিষয়টি আসতে হবে। বিসিবি কোনো এজেন্সি না, পুলিশ না, র্যাবও না। সরকারের তরফ থেকে নিরাপত্তার ব্যাপারটি আসতে হবে।’