সাকিব ঢাকায় আসছেন বৃহস্পতিবার

  • স্পোর্টস রিপোর্টার, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

সাকিব আল হাসান সদ্যসমাপ্ত ভারত সিরিজের মাঝামাঝিতে নিজের অবসরের ঘোষণা দেন। জানান দেশের মাটিতে খেলতে চান নিজের সবশেষ টেস্টটা। তবে তার রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে তা পড়ে গিয়েছিল শঙ্কায়। অবশেষে সব শঙ্কা উড়িয়ে সাকিব কাল আসছেন ঢাকায়, মিরপুরের মাটিতেই খেলবেন তার বিদায়ী টেস্টটা। 

মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সে টেস্টটা শুরু হবে আগামী ২১ অক্টোবর। এই সিরিজ খেলতে ঢাকায় আজ পা রেখেছে দক্ষিণ আফ্রিকা দল। তবে সাকিব আসবেন তার পরদিন, মানে বৃহস্পতিবার। বিষয়টি স্পোর্টসবাংলাকে নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের টিম অপারেশন্সের একটি সূত্র।

বিজ্ঞাপন

গেল জানুয়ারিতে সাকিব আল হাসান আওয়ামী লীগের প্রার্থী বনে মাগুরা ১ আসন থেকে সংসদ সদস্য হন। এরপর গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে তিনিও পড়ে গেছেন রোষানলে। গত ২৪ আগস্ট শেখ হাসিনার সঙ্গে একটি হত্যা মামলায় তাকেও আসামী করা হয়। 

সাকিব এর আগে জুলাই মাসের শুরু থেকেই ছিলেন দেশের বাইরে। সরকার পতনের পর থেকে তিনি আর ঢাকায় পা রাখেননি। এরই মধ্যে তিনি ঘোষণা দেন ঢাকায় শেষ টেস্টটা খেলার। তবে পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি সাকিবের এই চাওয়ার পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।

বিজ্ঞাপন

অবসরের ঘোষণার আগেও সাকিবের দেশে আসা নিয়ে কথা বলেছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদস্যরা। ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ‘আশাবাদ ব্যক্ত করেন’ যে সাকিবকে গ্রেফতার করা হবে না, ‘সাকিবের বিরুদ্ধে স্রেফ একটা মামলা করা হয়েছে। মামলা হওয়া বা এফআরআই হওয়া মানে গ্রেপ্তার না। আমি আশা করি তাকে গ্রেফতার করা হবে না।’

এরপর তার অবসর ঘোষণায় সাকিব ফাঁক রেখে দেন এই বলে যে, ‘যদি সিলেক্টেড হই’ তাহলে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজেই হবে শেষ টেস্ট। বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদ জানান বিষয়টা সরকারের হাতে।

যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এই বিষয়ে জানান, ‘খেলোয়াড় সাকিবের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আছে। তবে, ফ্যাসিস্ট সরকারের সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানের বিপক্ষে জনমনে তৈরী হওয়া ক্রোধের বিপরীতে নিরাপত্তা দেওয়ার নিশ্চয়তা চাওয়া অবান্তর।’ সেদিন ক্রীড়া উপদেষ্টা সাকিবকে তার রাজনৈতিক অবস্থান পরিষ্কার করার বিষয়ে আহ্বান জানান। এরপর সাকিব সে আহ্বানে সাড়া দিয়ে একটা ফেসবুক পোস্টও করেন, যেখানে জানান ‘তার মাগুরার উন্নয়নের’ জন্য সংসদ সদস্য হতে চেয়েছিলেন তিনি। 

এরপর তার বিষয়ে খানিকটা নমনীয় সুর শোনা যায় ক্রীড়া উপদেষ্টার কণ্ঠে, ‘তিনি (সাকিব) এমন একজন খেলোয়াড়, যার দেশের জন্য অনেক অবদান রয়েছে। তিনি যেহেতু বাংলাদেশে নিজের শেষ টেস্ট খেলতে চান, আমি ব্যক্তিগতভাবে চাই সেই ‍সুযোগ তিনি পান।’

গত ১৩ অক্টোবর মিরপুরের হোম অফ ক্রিকেট পরিদর্শনকালে সাকিবের বিষয়ে আবারও প্রশ্নের মুখে পড়েন ক্রীড়া উপদেষ্টা। তখন তিনি তার জবাবে বলেন, ‘সাকিব বাংলাদেশের নাগরিক ও একজন ক্রিকেটার। তার আসা ও যাওয়ার (দেশে) ক্ষেত্রে তো আমি কোনো বাধা দেখি না। তবে দেয়াল লিখন বা সোশ্যাল মিডিয়াতে যেমনটা আমরা দেখেছি, এটা আসলে ইমোশনের ব্যাপার। আর যারা এটা করছে তাদেরও ওই রাইটসটা আছে গণতান্ত্রিক দেশে, যে কোনো আন্দোলন বা যে কোনো কিছু করার। তবে এক্ষেত্রে আমার কথা থাকবে, কারো নিরাপত্তা যেন আমরা হুমকির মুখে না ফেলি। যদি আইনগত কোনো বিষয় থাকে, তাহলে সেটা আইন দেখবে, আমি এই আইনগত বিষয়ে কোনো কমেন্ট করতে পারব না। তবে নিরাপত্তার বিষয়ে সর্বোচ্চ শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত।’

এরপরই দেশে ফেরার প্রক্রিয়া শুরু করেন সাবেক বাংলাদেশ অধিনায়ক। আগামীকাল সে প্রক্রিয়া শেষে ঢাকায় পা রাখবেন তিনি। আগামী শুক্রবার থেকে সাকিব যোগ দেবেন দলের সঙ্গে। ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের প্রথম টেস্ট শেষেই সাকিব সাদা পোশাককে বিদায় বলবেন।