বিসিবির বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে নামবেন কোচ হাথুরু
চাকরি হারিয়ে হাল ছাড়ছেন না চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। অনেকটা বিতর্কিত ছড়িয়ে দ্বিতীয় অধ্যায় শেষ হওয়াটা মেনে নিতে পারছেন না বাংলাদেশের সদ্য সাবেক কোচ। কারণ যে অভিযোগ তুলে বরখাস্ত করা হয়েছে সেটি নাকি মিথ্যে। জাতীয় দলের এক ক্রিকেটারের সঙ্গে অসদাচরণ ও আচরণবিধি ভাঙার দায়ে এবং অনুমতিহীন অতিরিক্ত ছুটি কাটানোর জন্য ছাটাই করা হয়েছে তাকে
কিন্তু বিসিবির এসব অভিযোগ পূর্বপরিকল্পিত বলে দাবি করলেন হাথুরুসিংহে। জানালেন আইনি লড়াইয়ে নামবেন তিনি।
আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠিয়েছেন হাথুরুসিংহে। যেখানে তিনি লিখেছেন, ‘দেখুন, এসব অভিযোগ পূর্বপরিকল্পিত বলে মনে হচ্ছে। নতুন সভাপতির মেয়াদের প্রথম দিনই প্রধান কোচ অপসারণের ইচ্ছার কথা জানিয়ে বক্তব্য দিয়েছিলেন। তারপর আরেকজন প্রধান কোচ নিয়োগের মাত্র চার ঘণ্টা আগে শোকজ নোটিশ পেয়ে হতভম্ব আমি। সেখানে বলা হয় নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য হাতে আছে মাত্র ৪৮ ঘণ্টা। এমন ঘটনার ক্রমধারা এই কর্মকাণ্ডের পেছনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে গুরুতর প্রশ্ন তোলে।’
একইসঙ্গে জাতীয় দলের স্পিনার নাসুম আহমেদকে চড় মারার যে অভিযোগ তা উড়িয়ে দেন হাথুরু। বাংলাদেশের সদ্য সাবেক কোচ বলেন, ‘অভিযুক্ত ঘটনাটি খেলোয়াড়দের ডাগআউট বা ড্রেসিংরুমে ঘটেছিল। যেখানে বিশ্বকাপের ম্যাচ চলাকালে সার্বক্ষণিক নজরদারি থাকে। খেলার প্রতি মুহূর্ত সঙ্গে সঙ্গে ধারণ করে ৪০ থেকে ৫০টিরও বেশি ক্যামেরা। অভিযোগকারীকে যাচাই করার সুযোগ পাইনি বা কোনও সাক্ষীও পাইনি, আদৌ যদি থেকে থাকে। আশ্চর্যের ব্যাপার সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড় ওই ইভেন্টের (ওয়ানডে বিশ্বকাপ) পর দ্রুততম সময়ে টিম ম্যানেজার বা কোনো কর্তৃপক্ষকে ঘটনাটি জানায়নি। আমি বিস্মিত কেন আমাকে প্রশ্ন করা হয়নি কিংবা আমার কাছ থেকে কিছু জানতে চায়নি। এটি কেন কয়েক মাস পরে ইউটিউবে একজন ব্যক্তির মাধ্যমে প্রকাশিত হলো?’
এ কারণেই বিসিবির বিরুদ্ধে লড়াইয়েরও ঘোষণা দিলেন কোচ হাথুরু। তিনি বলেন, ‘আমি আমার সম্মান রক্ষা করতে সংকল্পবদ্ধ আর এই বিষয়ে যেকোনো তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করব। শেষ পর্যন্ত সত্যের জয় হবে। আমি আমার ভালোবাসার খেলাতে ইতিবাচকভাবে অবদান রাখতে পারব।’
এখানেই শেষ নয়, হাথুরু জানান তাতে দ্রুত বাংলাদেশ ছাড়তেও চাপ দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এমন পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে আমার নিরাপত্তা শঙ্কায় বাংলাদেশ ছাড়তে বলা হয়েছে আমাকে। এসব অভিযোগ দ্রুত নতুন প্রধান কোচের নিয়োগ ও যথাযথ প্রক্রিয়ার অভাব নতুন ম্যানেজমেন্টের উদ্দেশ্য এবং বিসিবির ভেতরের কর্মীদের আচরণের ব্যাপারে গুরুতর উদ্বেগ তৈরি করছে।’
গেল বছর ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয় দফায় বাংলাদেশ দলের কোচ হিসেবে ফিরে আসেন হাথুরুসিংহে। বিসিবির নতুন সভাপতি ফারুক আহমেদের নিয়োগের পরপরই তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কার এই কোচকে আর বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ হিসেবে রাখা উচিত নয়। তার দায়িত্ব নেওয়ার প্রায় দুই মাস পর এই বক্তব্যেরই প্রতিফলন দেখা গেল গত মঙ্গলবার। বাংলাদেশের নতুন হেড কোচ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফিল সিমন্স।